সাংসদ দিদারুল আলম ঘর উপহার দিলেন সীতাকুণ্ডের হতদরিদ্র চার পরিবারকে
এমকে মনির সীতাকুণ্ড ।।
স্ত্রী, বৃদ্ধ মা, ছেলে-মেয়ে ও ভাতিজা-ভাতিজিদের নিয়ে দুই ভাই মিজানুল হক ও মো. বাবুল হকের ১৩ সদস্যের যৌথ পরিবার। ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনার খরচ, মায়ের চিকিৎসা খরচ ও পরিবারের দৈনন্দিন ব্যয় নির্বাহ মেটাতে সংসারে নুন আনতে পানতা ফুরিয়ে যায় দুই ভাইয়ের। তার উপর মাথা গোঁজানোর শেষ সম্বল এক ছালার ঘরটি নুইয়ে পড়েছে। বর্ষাকালের বৃষ্টির পানিতে ভরে যায় ঝুপড়ি ঘরটি। থাকার অনুপযোগী হয়ে ওঠে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয় তাদের।
মিজানুল হক ও মো. বাবুল হক- দুই ভাই। পেশায় শিপ ইয়ার্ডের শ্রমিক। দৈনিক ৫০০ টাকা মজুরিতে ঘাম ঝরানো পরিশ্রম করে দিন পার করতে হয় তাদের। বড় ভাই খোরশেদ আলম ও বাবা নুরুল আমিন মারা গেছেন বহু আগে। সেই থেকে বড় ভাইয়ের ৩ ছেলে-মেয়েকে দেখাশোনার দায়িত্বও দুই ভাইয়ের কাঁধে।
সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের দক্ষিণ ঘোড়ামরা গ্রামের আম্বিয়ার বাড়ির বাসিন্দা এ পরিবারের ১৩ সদস্যের সবাইকে দুটি কক্ষেই জড়ো হয়ে দিন কাটাতে হতো মাটিতে। তাদের ঘরে ছিলো না কোন খাট কিংবা ভালো বিছানা। জরাজীর্ণ ঘর নিয়ে দীর্ঘ ১০ বছর ধরে তাদের কষ্টের বেঁচে থাকা। অবশেষে সীতাকুণ্ডের সংসদ সদস্য দিদারুল আলম নিজস্ব অর্থায়নে তাদের ৩ ভাইয়ের পারিবারের সদস্যদের থাকার জন্য নতুন ঘর উপহার দিয়েছেন। আর এতেই আনন্দের অশ্রুজল দেখা গেছে ওই পরিবারগুলোর সদস্যদের চোখে-মুখে।
আজ রোববার দুপুরে ঘর তিনটির শুভ উদ্বোধন করে ৩ পরিবারের হাতে চাবি তুলে দেন সাংসদ দিদারুল আলম। এসময় তিনি মিজানুল হক ও মো. বাবুল হকের বৃদ্ধ মায়ের শারীরিক অবস্থার খোঁজ-খবর নেন এবং ওষুধের খরচ মেটাতে কিছু টাকা হাতে দেন।
সংসদ সদস্য দিদারুল আলম বলেন, ‘আমি শুধু মানুষের দোয়া চাই। মানুষের দোয়া ছাড়া আমার আর কোন চাওয়া-পাওয়া নেই। মানুষের জন্য কাজ করতে পারলেই আমি খুশি। আমার সুখ তখনই যখন অসহায় মানুষের মুখে হাসি ফুটে। মানুষের জন্যই আমার রাজনীতি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে নৌকা দিয়েছেন জনগণের সেবা করার জন্য।’
এ বিষয়ে একই এলাকার বাসিন্দা উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম রিয়াদ জিলানী বলেন, ‘আমি প্রথমে এ পরিবারটির দুঃখ-কষ্ট খেয়াল করি। এরপরই মাননীয় সংসদ সদস্যকে অবহিত করলে তিনি তাদেরকে নতুন ঘর নির্মাণ করে দেয়ার কথা জানান। যেমন কথা তেমন কাজ। এমপি মহোদয় ১০ দিনের মধ্যে অত্যন্ত ভালো মানের তিনটি ঘর তিন ভাইয়ের পরিবারকে উপহার দিয়েছেন। এজন্য এলাকাবাসী ও ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে এমপি মহোদয়ের এ মহানুভবতার জন্য কৃতজ্ঞতা জানাই।’
এ মিজানুল হক বলেন, ‘আমাদের ঘর ছিল না। দীর্ঘ ১০ বছর ধরে পরিবার নিয়ে অনেক কষ্ট করেছি। বর্ষাকালে ঘরে থাকা যেত না। দৈনিক যে আয় করি তা দিয়ে বাজার খরচ মেটানো দায় হয়ে যেত। তাই ঘর মেরামত ছিল আমাদের জন্য দুঃসাধ্য। এমপি মহোদয় আমাদের ঘর বানিয়ে দিয়েছেন। আল্লাহ যেন এ মানুষটির ভালো করেন।’ একই কথা বললেন ঘর উপহার পাওয়া মো. বাবুল হকও।
এদিকে একই দিনে সীতাকুণ্ডের সৈয়দপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ বগাচতর এলাকার রেহানা আক্তার নামে এক গৃহিণীকে নতুন ঘর উপহার দিয়ে সেটিরও উদ্বোধন করেছেন সাংসদ দিদারুল আলম। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শাহাদাত হোসেন ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ।
খালেদ/ পোস্টকার্ড ;