সীতাকুণ্ডে ১০ একর খাস জায়গা উদ্ধার, দখলদারদের হামলায় ইউএনও ওসিসহ আহত ১০

সীতাকুণ্ডে ১০ একর খাস জায়গা উদ্ধার, দখলদারদের হামলায় ইউএনও ওসিসহ আহত ১০
সীতাকুণ্ডে ১০ একর খাস জায়গা উদ্ধার, দখলদারদের হামলায় ইউএনও ওসিসহ আহত ১০

সীতাকুণ্ড  প্রতিনিধি।। 

সীতাকুণ্ডের জঙ্গল সলিমপুরে অভিযান চালিয়ে শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে হার্ট ফাউন্ডেশনের জন্য বরাদ্দ করা জায়গাটি উদ্ধার করেছে জেলা প্রশাসন।

বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টা থেকে পরিচালিত এই অভিযানে উপজেলার জঙ্গল সলিমপুর মৌজার বিএস ১ নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত বিএস ৩৬০ ও ৩৬১ দাগের এসব জমি উদ্ধার করা হয়।

অভিযানে নেতৃত্ব দেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নু-এম মারমা, মো. রাজীব হোসেন, এসএমএন জামিউল হিকমা, রাকিবুল ইসলাম, সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কেএম রফিকুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আলাউদ্দিন ও সীতাকুণ্ড থানার ওসি তোফায়েল আহমেদ। এছাড়া জেলা পুলিশের ২ শতাধিক ফোর্স অভিযানে অংশ নেয়।

সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কেএম রফিকুল ইসলাম জানান, সীতাকুণ্ডের জঙ্গল সলিমপুর এলাকার ছিন্নমূল বড়ইতলা ২ নম্বর সমাজ এলাকায় সলিমপুর মৌজার বিএস ১ নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত জায়গাটি দীর্ঘদিন অবৈধ দখল করে রেখে সেখানে শতাধিক বসতি স্থাপন করে দখলদাররা। আমরা সেসব দখলদারকে নিয়ম অনুযায়ী সরে যাবার জন্য বারবার নোটিশ দিয়েছি। কিন্তু তারা সরেনি। পরে বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এসব দখল উচ্ছেদের নির্দেশ দেওয়ায় আমরা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেছি। দখল করা স্থাপনা গুড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি জায়গাটি কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ঘিরে দিচ্ছি। যাতে তারা আর দখল করতে না পারে।

তিনি বলেন, এখানে যারা অবৈধ দখলে ছিলো তারা যদি ভূমি পাওয়ার জন্য যথাযথ নিয়মে জেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন করে সেক্ষেত্রে কোন সুযোগ থাকলে হয়ত কর্তৃপক্ষ বিবেচনা করবে বলে জানান তিনি।

অন্যদিকে জঙ্গল সলিমপুরে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ অভিযানের শেষ পর্যায়ে প্রশাসনের উপর হামলা চালিয়েছে অবৈধ দখলদাররা। এতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। আটক করা হয়েছে তিন হামলাকারীকে।

উপজেলা প্রশাসন ও থানা সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে গত বছর দখলদারদের উচ্ছেদ করে সীতাকুণ্ডের জঙ্গল সলিমপুরে সরকারি খাস দশ একর জমি উদ্ধার করে হাসপাতালের জন্য নির্ধারণ করা হয়। সে সময় প্রশাসন কর্তৃক সাইনবোর্ড ও লাল পতাকা টানিয়ে সীমানা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। কিন্তু তার কিছুদিন পর থেকে দখলদাররা পুনরায় উদ্ধারকৃত জমি দখল করে নেয়। পূর্বে উদ্ধারকৃত জমি আজ পুনরুদ্ধার করতে প্রশাসন আবারও অভিযান চালায়। সকাল ৯টা থেকে চলমান অভিযানে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন, সীতাকুণ্ড উপজেলা প্রশাসন, র‌্যাব, এপিবিএন, পুলিশ ও আনসারের ২৫০ সদস্য অংশ নেয়। অভিযানের শেষ পর্যায়ে বিকেলে চারটার দিকে হঠাৎ কয়েকশত নারী পুরুষ পাহাড়ের চূড়ায় উঠে প্রশাসনের উপর অতর্কিতভাবে বৃষ্টির মত পাথর ছুঁড়তে থাকে। এতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ অন্তত ১০ জন আহত হন। 

সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোফায়েল আহমেদ বলেন, অভিযান শেষ করে ফেরার পথে হঠাৎ কয়েকশো নারী পুরুষ পাহাড়ের চূড়ায় উঠে অতর্কিতভাবে পাথর নিক্ষেপ করতে থাকে। এতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও আমি সহ বেশ কয়েকজন আহত হই। অতর্কিত ছোড়া পাথর আমাদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে এসে পড়ে। আহতরা ভাটিয়ারীর বিএসবিএ হাসপাতাল ও সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চিকিৎসা নিচ্ছে। এই ঘটনায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে।

একই কথা বলেন সীতাকুণ্ড উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি মো. আলাউদ্দিন। তিনি বলেন অভিযান শেষ করে ফেরার পথে অতর্কিতভাবে পাহাড়ের আড়াল থেকে কয়েকজন নারী পুরুষ পাথর ছুঁড়তে থাকে। এতে ইউএনও স্যার সহ কয়েকজন আহত হন বলে জানান তিনি।

খালেদ / পোস্টকার্ড ;