চীনের হাসপাতালেরই ৪০জন স্বাস্থ্যকর্মী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত

চীনের হাসপাতালেরই ৪০জন স্বাস্থ্যকর্মী  করোনাভাইরাসে আক্রান্ত
চীনের হাসপাতালেরই ৪০জন স্বাস্থ্যকর্মী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক ।।

করোনা ভাইরাসে চীনে মৃতের সংখ্যা বেড়ে শনিবার ৭২২-এ পৌঁছেছে। এ সংখ্যা হংকং-এর মূল ভূখন্ডে দুই দশক আগে সার্স ভাইরাস আক্রান্তে মৃতের সংখ্যাকে ছাড়িয়ে গেছে। এদিকে এক গবেষণা বলছে  জানুয়ারি মাসে উহানের একটি হাসপাতালেরই ৪০জন স্বাস্থ্যকর্মী  করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে।

জার্নাল অব আমেরিকান মেডিকেল এসোসিয়েশন-এ শুক্রবার প্রকাশিত ঝোংগান হসপিটাল অব উহান ইউনিভাসিটি’র চিকিৎসকদের লিখিত এক গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্যানুসারে, অস্ত্রপচার বিভাগে ভর্তি হওয়া এক রোগীর মাধ্যমে ১০স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। খবর এএফপি’র।

ওই হাসপাতালে অন্যান্য কারণে ভর্তি হওয়া ১৭ জন রোগী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। জানুয়ারির ১ থেকে ২৮ তারিখ পর্যন্ত হাসপাতালে আক্রান্ত ১৩৮ জন রোগীর শতকরা ৪১ ভাগ হাসপাতাল-সংক্রান্ত সংক্রমণের শিকার হয়েছে।

এই ভাইরাস সম্পর্কে প্রথম সতর্ককারি চিকিৎসক, যিনি সতর্ক করার কারণে শাস্তি পেয়েছিলেন, তার এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর পর শোকের ছায়া নেমে আসে। ৬৩০ জনের বেশি লোকের মৃত্যুতে সংকট প্রকট আকার ধারন করায় জনমনে ক্ষোভ সঞ্চার হলে এ গবেষণা করা হয়।


৩৪ বছর বয়সী লী গত ৩০ ডিসেম্বর উহানে তার সহকর্মীদের এক বার্তার মাধ্যমে সতর্ক করেন। এই কারণে লীসহ এক দল লোককে পুলিশ ‘গুজব ছড়ানোর’ অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদ করে। পরে এক রোগীকে চিকিৎসা দিতে গিয়ে তিনিও এই ভাইরাসে আক্রান্তর হন।

জার্নাল অব আমেরিকান মেডিকেল এসোসিয়েশন-এর ৪০ জন আক্রান্ত স্বাস্থ্য কর্মীর ৩১ জন জেনারেল ওয়ার্ডের, সাত জন জরুরি বিভাগে ও দুই জন আইসিইউ-এ দায়িত্বপ্রাপ্ত।

সম্প্রতি অনুমান করা হচ্ছে যে, করোনা আক্রান্ত একজনের মাধ্যমে ২ দশমিক ২-জন আক্রান্ত হতে পারে, তবে এক রোগীর মাধ্যমে ১০ স্বাস্থ্যকর্মীর আক্রান্ত হওয়ার এ ঘটনা উদাহরণ সৃষ্টি করেছে।

ইউনিভার্সিটি অব সাউদামটন-এর এক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ মাইকেল হেড যুক্তরাষ্ট্রের সাউথ মিডিয়া সেন্টারকে বলেন, ‘বিষয়টি যদি সত্যি হয়, তবে নিশ্চিত যে কোনো কোনো রোগীর সংক্রমণের মাত্রা অন্য রোগীদের চেয়ে বেশি, এবং এ ধরনের রোগী পরিচালনায় নতুন জটিলতা সৃষ্টি করবে।’

হুবেই প্রদেশের ডেপুটি গভর্ণর স্বীকার করেছেন যে,স্বাথ্যকর্মীদের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হয়েছে এবং তাদের প্রতিরোধ সরঞ্জামও অপ্রতুল।

গত ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে করোনাভাইরাসের আবির্ভাব ঘটে। প্রতিনিয়ত এই ভাইরাসে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। এছাড়া বিশ্বের প্রায় ২৫ টি দেশে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৭০০ ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে চীন সরকার। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের শরীরে প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে শ্বাসকষ্ট, জ্বর, সর্দি, কাশির মত সমস্যা দেখা দেয়।