সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিতে ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে পুরোদমে চালু হচ্ছে সব ট্রেন

সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিতে ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে পুরোদমে চালু হচ্ছে সব ট্রেন

নিজস্ব প্রতিবেদক ।।

পুরোদমে চালু হচ্ছে রেলের যাত্রীসেবা। আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে পূর্বনির্ধারিত সময়ে যাত্রীদের সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিতে ধারণক্ষমতার ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে আন্তঃনগর, লোকাল ও কমিউটার (ডেমু) ট্রেন স্টেশন ছাড়বে। ১২ সেপ্টেম্বর থেকে এসব ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রি শুরু হবে। যার ২৫ শতাংশ অনলাইনে ও বাকি ২৫ শতাংশ টিকিট মিলবে কাউন্টারে। সব ধরনের ট্রেন চলাচল শুরু হলেই দীর্ঘ পাঁচ মাস পর স্টেশনগুলোতে মানুষের আনোগোনা বাড়বে।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান বানিজ্যিক কর্মকর্তা (সিসিএম) মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে পুরোদমে চালু হচ্ছে সকল ট্রেন। এতে মার্চের আগের অবস্থায় ফিরে যাচ্ছে ট্রেনের যাত্রীসেবা। তবে যাত্রীদের সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব বিবেচনায় নিতে প্রতিটি কোচে ধারণক্ষমতার ৫০ শতাংশ যাত্রী পরিবহন করা হবে। যার টিকিট ২৫ শতাংশ অনলাইনে এবং ২৫ শতাংশ কাউন্টারে মিলবে। ১২ সেপ্টেম্বর থেকে অনলাইন ও কাউন্টারে এসব ট্রেনের টিকিট বিক্রি শুরু হবে। পূর্বের নির্ধারিত সময়েই চলবে এসব ট্রেন।

এর আগে ১৫ আগস্টের পর পর্যায়ক্রমে সব আন্তঃনগর ট্রেন চালু করার সিদ্ধান্ত নেয় রেলওয়ে। যে কারণে গত ১৬ আগস্ট ১৩ জোড়া এবং ২৭ আগস্ট থেকে আরো ১৯ জোড়া ট্রেন চালু হয়। এছাড়াও গত ৫ সেপ্টেম্বর রেলপথ মন্ত্রণালয় কোভিড-১৯ সংক্রান্ত বিধি-নিষেধের কিছু বিষয় শিথিল করার সিদ্ধান্ত নিলে আরো ১৯ জোড়া ট্রেন চালু হয়। এতদিন ধরে আন্তঃনগর সকল ট্রেন চালু হলেও এবার লোকাল ও কমিউটার ট্রেনও নির্ধারিত সময়ে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে।

জানা যায়, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে গত ১০ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হওয়ায় ৫২ নম্বর ওয়ার্কিং টাইম টেবিল অনুযায়ী পূর্বাঞ্চলের চট্টগ্রাম এবং ঢাকা বিভাগে আন্তঃনগর, মেইল ও এক্সপ্রেস, ডেমু, লোকাল ও মিক্সড ট্রেন ব্যবহার হয় ৭৫টি। এর মধ্যে আন্তঃনগর ট্রেন ঢাকা বিভাগে ১৯টি, চট্টগ্রাম বিভাগে ৫টি সহ ২৪টি, মেইল ও এক্সপ্রেস ট্রেন ঢাকা বিভাগে ১৬টি, চট্টগ্রাম বিভাগে ১১টিসহ মোট ২৭টি, ডেমু ট্রেন ঢাকা বিভাগে ২টি, চট্টগ্রাম বিভাগে ৪টিসহ ৬টি, লোকাল ও মিক্সড ট্রেন ঢাকা বিভাগে ৮টি, চট্টগ্রাম বিভাগে ১০টিসহ ১৮টি ব্যবহার হয়। এসব ট্রেনে লোকোমেটিভ (ইঞ্জিন) ব্যবহার হয় ৭২টি। তার মধ্যে ঢাকা বিভাগে ২৩টি এবং চট্টগ্রাম বিভাগে ৪৯টি। যাত্রীবাহী বগি ব্যবহার হয় ৮৯৭টি। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগে ৫৫৪টি ও চট্টগ্রাম বিভাগে ৩৪৩টি বগি।

রেলওয়ের বানিজ্যিক বিভাগ সূত্র জানা যায়, করোনার কারণে এতদিন রেলসেবা বন্ধ থাকায় রাজস্ব আদায় কমে যায় রেলে। যে কারণে পণ্য পরিবহন ও কনটেইনার পরিবহনেই জোর দেয়া হয়। লোকসান কমাতে নানামুখী উদ্যোগ নিয়েই যাত্রী পরিবহন থেকে বিরত থাকে রেল কর্তৃপক্ষ। এবার পুরোদমে রেলের যাত্রী সেবা চালু হওয়ায় সিদ্ধান্তে আবারো রেলে চাঞ্চল্য ফিরেছে। বিশেষ করে রেলওয়ে স্টেশনগুলোতে টিকিট বিক্রি শুরু হলে পূর্বের চাঞ্চল্য ফিরবে রেল স্টেশনে।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের অতিরিক্ত বানিজ্যিক কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, রেলের রাজস্ব বাড়াতে খাদ্য, তেল ও সার পরিবহনে আরো বেশি জোর দেয়া হচ্ছে। করোনাকালীন সময়ে পরিবহন করেই রাজস্ব আদায়ের চেষ্টা করা হয়েছিল। এতে কিছু হলেও রেলের আয় হয়েছে। এবার সকল ট্রেন চালু হলে করোনায় পিছিয়ে পড়া যাত্রীসেবা আবারো শুরু হবে।