সীতাকুণ্ড শিপইয়ার্ডে জাহাজ নেই, চলছে শ্রমিকদের দুর্দিন

সীতাকুণ্ড শিপইয়ার্ডে জাহাজ নেই, চলছে শ্রমিকদের দুর্দিন
সীতাকুণ্ড শিপইয়ার্ডে জাহাজ নেই, চলছে শ্রমিকদের দুর্দিন

পোস্টকার্ড ডেস্ক ।।

সীতাকুণ্ডর অনেক শিপইয়ার্ড ডলার সংকট ও এলসি জটিলতায় বেশ কয়েক মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স অ্যান্ড অ্যাসােসিয়েশনের তথ্য মতে, ২০২১ সালে প্রথম আট মাসে ২০০টি স্ক্র্যাপ জাহাজ আমদানি হয়েছে। যার ওজন উনিশ লক্ষ সাইত্রিশ হাজার পাঁচ শততের টন। ২০২২ সালে প্রধম আট মাসে অর্ধেকে নেমে ১০৩টি জাহাজ আমদানি হয়েছে। যার ওজন আট লক্ষ চৌত্রিশ হাজার চারশত ছাপ্পান্ন টন। গড়ে বছরে ২০০টি স্ক্র্যাপ জাহাজ ভাঙা হয়। এই সীতাকুণ্ড শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডে। বর্তমানে জাহাজ আমদানি নেমে এসেছে শূন্যের কোটায় । বছরে এই শিল্প থেকে লেনদেন হয় ১৫ হাজার কোটি টাকা। তবে এখনকার দৃশ্যপট ভিন্ন । সুনসান নীরবতা এই শিপব্রেকিং ইয়ার্ডে। দেশে লােহা জাতীয় শিল্প কাঁচামাল ৫০ শতাংশ যােগান দাতা এই শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড।

উদ্যোক্তারা জানান, উলার সংকটে ও এলসি জটিলতার কারণে গত কয়েক মাস ধরে স্ক্র্যাপ জাহাজ আমদানি বন্ধ।

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলাধীন সমুদ্র উপকূলে প্রায় ১৭ কিমি এলাকায় গড়ে উঠা শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডে বর্তমানে ভাটিয়ারী, মাদাম বিবির হাট, সােনাইছড়ি, জোড়ামতল ও কুমিরা পর্যন্ত প্রায় ১৬০টি শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড আছে । শিপব্রেকিং ইয়ার্ডে আনা প্রতিটি জাহাজ ৬০০ থেকে ৮০০ শ্রমিক কাজ করে। পরােক্ষভাবে এই শিল্পের সাথে জড়িত আছে প্রায় আড়াই থেকে ৩ লক্ষ শ্রমিক। গত কয়েক মাসে শিপ ইয়ার্ড বন্ধ হয়ে যাওয়া বিপাকে পড়েছে হাজার হাজার শ্রমিক। বর্তমানে ইস্পাত শিল্পের ৩৫০টি কারখানা সরাসরি ও পরােক্ষভাবে জড়িত। এই ইস্পাত কারখানা গুলাে শিপ ব্রেকিং লােহজাত কাচামালের ওপর নির্ভরশীল । এমন পরিস্থিতিতে সম্ভাবনাময় ইস্পাত খাত পড়েছে সংকটে। এই স্ক্র্যাপ জাহাজ থেকে পাওয়া হাজার ধরনের পণ্য ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দশ কিলাে মিটার জুড়ে গড়ে উঠেছে কয়েক শত দোকান। এখানে ফার্নিচার, ইলেক্ট্রিক কিচেন রুমের মালামালসহ হাজারও জিনিস ক্রয় বিক্রয় হয়। সম্প্রতি জাহাজ আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বেকায়দায় পড়েছে এই দোকান মালিকরা। একদিকে দোকানের ভাড়া অন্য দিকে কর্মচারীর বেতন। বিদেশ থেকে আমদানি করা স্ক্র্যাপ জাহাজের মালামালগুলাে বিদেশেও রপ্তানি করেন অনেক ব্যবসায়ী।

জাহাজ ভাঙা শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন ফোরামের যুগ্ম আহ্বায়ক এ এম নাজিম উদ্দিন বলেন, ডলার সংকটে ও এলসি জটিলতার কারণে গত কয়েক মাস ধরে বন্ধ শিপব্রেকিং ইয়ার্ড। ইয়ার্ড মালিকেরা জাহাজে যা আনছে এইটাই ভাঙছে, নতুন কোনাে আমদানির জন্য এরা ঝুঁকি নিচ্ছেনা ।

এই বিষয়ে বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স অ্যান্ড রিসাইকেলস অ্যাসােসিয়েশনের সভাপতি এম এ তাহের বলেন, ব্যাংক এলসি দিতে পারছে না। ব্যাংকে ডলার নেই। শিপ ইয়ার্ড এখন অনেক কমে গেছে। অনেক ইয়ার্ড খালি হয়ে গেছে। আমরা টিকে থাকতে পারব কিনা জানি না।

খালেদ / পোস্টকার্ড ;