নিষেধাজ্ঞায় বন্ধ বিএম ডিপোর সব কার্যক্রম, পণ্যবাহী ৬শ অক্ষত কনটেইনার অনিশ্চয়তায় ! 

নিষেধাজ্ঞায় বন্ধ বিএম ডিপোর সব কার্যক্রম, পণ্যবাহী ৬শ অক্ষত কনটেইনার অনিশ্চয়তায় ! 
নিষেধাজ্ঞায় বন্ধ বিএম ডিপোর সব কার্যক্রম, পণ্যবাহী ৬শ অক্ষত কনটেইনার অনিশ্চয়তায় ! 

পোস্টকার্ড ডেস্ক ।।

বিস্ফোরণের পর থেকে চলছে তদন্তের কাজ। বিভিন্ন সংস্থা প্রায় প্রতিদিনই তদন্তে আসছে। এদিকে ৫ জুন কাস্টমসের এক নিষেধাজ্ঞায় বন্ধ করে দেয়া হয় ডিপোর সব ধরণের কার্যক্রম। আর সেই নিষেধাজ্ঞায় আটকে আছে প্রায় ৬শ’ একক পণ্যবাহী অক্ষত কনটেইনার। 

ভয়াবহ এ বিস্ফোরণে এ পর্যন্ত ৪৯ জনের প্রাণহানী ও দুর্ঘটনার ভয়াবহতা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর পোশাক শিল্পের বিদেশি ক্রেতা এইচএন্ডএমসহ আরো কয়েক ক্রেতারা ক্ষতিগ্রস্ত কনটেইনারের ক্ষতিপুরণ দেওয়ার ঘোষণা দেন। কিন্তু যেসব দেশি কারখানাগুলোর আমদানি পণ্য ওই ডিপোতে ছিল তারা এখন উদ্বেগের মধ্যে রয়েছে। কারণ কারখানার কাঁচামাল না পেলে তারা উৎপাদনে যেতে পরবেন না। ফলে রপ্তানিতে গিয়ে প্রভাব পড়বে। কারণ সেখানে কম করে হলেও সাড়ে ৩শ’ পণ্যবাহী আমদানি কনটেইনার রয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএম কনটেইনার ডিপোর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন মাইনুল আহসান খান বলেন, আমাদের ডিপোতে কি পরিমাণ পণ্য ছিল, কনটেইনার ছিল তা এ মুহূর্তে বলাটা কঠিন। কারণ অধিকাংশ নথিপত্র পুড়ে গেছে। এছাড়া তদন্তের জন্য কম্পিউটারগুলোর হার্ডডিস্ক নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে আমাদের আনুমানিক হিসাবে বলা যায় সেথানে অন্তত ৪ হাজার কনটেইনার ছিল। যার মধ্যে ৩ থেকে সাড়ে ৩শ রপ্তানি কনটেইনার ও ৪ থেকে ৫শ আমদানি পণ্যবাহী কনটেইনার থাকার কথা। তবে আগুনে অনেক পণ্য পুড়ে গেলেও এখনো অনেক অক্ষত পণ্যবাহী কনটেইনার আছে। যেগুলো জাহাজীকরণ কিংবা কারখানাগুলোতে পাঠানো দরকার। এগুলো আটকে থাকলে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে তথা দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই আমরা চট্টগ্রাম কস্টমস কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছি, আমরা পণ্য হ্যান্ডেলিয়ে প্রস্তুত। ডিপো কার্যক্রম বন্ধ রাখলে দেশের আমদানি রপ্তানি বাণিজ্যে প্রভাব পড়বে। পাশপাশি এই ডিপোর সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত অন্তত ১ হাজার কর্মীর কর্ম অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। অর্থাৎ এর সথে ১ হাজার পরিবারেরও ভবিষ্যত জড়িত।

এদিকে বন্দরের হিসেব মতে, দুর্ঘটনার দিন বিএম ডিপোতে ৪ হাজার ৩১৮ একক কনটেইনার ছিল। এরমধ্যে রপ্তানি কনটেইনার ছিল ৮৬৭ একক এবং আমদানি কনটেইনার ছিল ৫৫৭ একক। অর্থাৎ আমদানি রপ্তানি মিলিয়ে পণ্যবাহী কনটেইনার ছিল ১ হাজার ৪২৪ একক।

এরমধ্যে ফায়ার সার্ভিসসহ উদ্ধার কাজে জড়িত সংস্থাগুলোর হিসেব অনুযায়ী দুর্ঘটনা ক্ষতি হওয়ার কনটেইনারের পরিমাণ যদি সাড়ে ৪শ এককও হয় তাহলেও সেখানে অন্তত ১ হাজার পণ্যবাহী কনটেইনার থাকার কথা।

জানা যায়, ওই ডিপোর মাঝামাঝি জায়গায় অবস্থিত শেডের পশ্চিম দিকের কনটেইনারে আগুন থেকে বিস্ফোরণ হয়। এই শেডে থাকা কার্টনগুলো কনটেইনারে বোঝাই করা হয়। দুর্ঘটনা পরবর্তী ওই জায়গার অবস্থা অনুযায়ী দেখা যায়, বিস্ফোরণে পশ্চিম দিকে কয়েক স্তরে থাকা কনটেইনার পণ্য ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। তবে শেডের পূর্ব ও দক্ষিণ পাশের কনটেইনারগুলো অক্ষত দেখা গেছে। এসব কনটেইনারে আমদানি-রপ্তানি পণ্য রয়েছে।

অক্ষত কনটেইনার প্রসঙ্গে ডিপো মালিকদের সংগঠন বিকডা মহাসচিব রুহুল আমিন সিকদার বলেন, দুর্ঘটনায় যেসব রপ্তানি পণ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেসব পণ্যের হয়তো কিছু অংশ বিমা প্রতিষ্ঠান থেকে পাওয়া যাবে। কিন্তু যেসব পণ্যবাহী কনটেইনার এখনো অক্ষত আছে সেগুলো যতদিন ওই স্থানে পড়ে থাকবে ততদিন দৈনিক হিসেবে ক্ষতিপুরণ গুনতে হবে। এখনি বিশেষ ব্যবস্থায় অক্ষত কনটেইনার পরিবহনের ব্যবস্থা করা উচিত। নয়তো ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশীয় কারখানাগুল্যতো । তাছাড়া রপ্তানিতেও প্রভাব পড়বে ।

খালেদ / পোস্টকার্ড;