এইডস নির্মূল জনগণের অংশগ্রহণ ছাড়া সম্ভব নয় : স্বাস্থ্য পরিচালক

এইডস নির্মূল জনগণের অংশগ্রহণ ছাড়া সম্ভব নয় : স্বাস্থ্য পরিচালক

পোস্টকার্ড (স্বাস্থ্য ) ডেস্ক ।। 

এইচআইভি একটি ভাইরাস যা শুধু মানুষের শরীরে সংক্রমিত হয়। এইডস ও এইচআইভি সৃষ্ট কতগুলো রোগের লক্ষণ এবং এটা মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমিত হয়। এ রোগে আক্রান্ত হয়ে সারাদেশে অনেক লোক মারা যাচ্ছে। এইডস দিবসের সভায় চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর রবিবার সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত বিশ্ব এইডস দিবস-২০১৯ এর আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন , হেপাটাইটিস বি যেভাবে ছড়ায়, এইডস ও সেভাবে ছড়ায়। ইনজেকশনের মাধ্যমে শরীরে ড্রাগ নিলে বা যৌনকর্মীদের পেছনে ছুটলে এ রোগ মারাত্মকভাবে ছড়ায়। কারো শরীরে এইচআইভি ভাইরাস আছে কিনা তা একমাত্র রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমেই জানা সম্ভব। জনগণের অংশগ্রহণ ছাড়া এইডস নির্মূল করা সম্ভব নয়। এটি প্রতিরোধে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলোকে আরো আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) এর দপ্তর, সিভিল সার্জনের কার্যালয় ও সহযোগী উন্নয়ন সংস্থাসমূহ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে-‘এইডস নির্মূলে প্রয়োজন, জনগণের অংশগ্রহণ। চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. শেখ ফজলে রাব্বির সভাপতিত্বে ও জেলা স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক সুজন বড়–য়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় উদ্বোধক ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ কামাল হোসেন।

বিশেষ অতিথি ছিলেন আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. অসীম কুমার নাথ, বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের উপ-পরিচালক ডা. আবদুস সালাম, সহকারী পরিচালক ডা. মো. শফিকুল ইসলাম, ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. জি.এম তৈয়ব আলী ও মমতা’র সিনিয়র পরিচালক স্বপ্না তালুকদার। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. মো. ওয়াজেদ চৌধুরী অভি। মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে বিশ্ব এইডস দিবসের সার-সংক্ষেপ তুলে ধরেন মেডিকেল অফিসার (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ডা. মো. নুরুল হায়দার।

এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাসাস’র চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিটির সদস্য সচিব রনজিত কুমার শীল, বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের জুনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ হোসেন, এনজিও প্রতিনিধি তুষার মিনহাজ, বেলাল হোসেন, হিরা হিজরা প্রমুখ। সভায় বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) এর দপ্তর ও সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সহযোগী উন্নয়ন সংস্থা সমূহের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। সভার পূর্বে সকাল সাড়ে ৯টায় আন্দরকিল্লা সিটি কর্পোরেশন চত্বরে বেলুন উড়িয়ে বিশ্ব এইডস দিবসের উদ্বোধন করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ কামাল হোসেন। এরপর র‌্যালি বের করা হয়।

এদিকে, পিএমটিসিটি সেবা জোরদারকরণ প্রকল্প চমেকহার সহযোগিতায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতাল একযোগে বিশ্ব এইডস দিবস পালন করে। দিবস উপলক্ষে চমেক ও হাসপাতালে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহসেন উদ্দিন আহমেদ, এমএইচআই, এমপিএইচ, এবং চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর (ডা.) মো. শামীম হাসান।

চমেকে গত এক বছরে নতুন এইচআইভি শনাক্ত হয় মোট ৭১ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ৪৪ জন, মহিলা ১৮ জন এবং শিশু ৯ জন। ২০১৯ সালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় ১০ জন (পুরুষ ৫ জন, মহিলা ৪ জন এবং শিশু ১ জন)। প্রিভেনশন অব মাদার টু চাইল্ড ট্রান্সমিশন (পিএমটিসিটি) কার্যক্রমের আওতায় চমেকে এ পর্যন্ত ১৯ জন এইচআইভি আক্রান্ত মায়ের সফল ডেলিভারি সম্পন্ন হয়েছে। পিএমটিসিটি ইন্টারভেনশনের ফলে ১৯টি ডেলিভারির মধ্যে ১৯টি বাচ্চাই এইচআইভি মুক্ত থাকায় চমেক উক্ত কার্যক্রমকে অনেক বড় সাফল্য হিসেবে মনে করছে।