ঈমান হচ্ছে একজন মুমিনের প্রধান সম্পদ , ঈমানদারের জন্য সুসংবাদ

ঈমান হচ্ছে একজন মুমিনের প্রধান সম্পদ  , ঈমানদারের জন্য সুসংবাদ

মাহদী হাসান ।।

ঈমান হচ্ছে একজন মুমিনের প্রধান সম্পদ । যার ভেতর পরিপূর্ণ ঈমান ও বিশ্বাস থাকবে সে দুনিয়া ও আখেরাতের জীবনে একজন সফল ব্যক্তি। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে ঈমানদার ব্যক্তির অনেক ফজিলতের কথা বর্ণিত হয়েছে। সংক্ষেপে কিছু আলোচনা তুলে ধরা হলো আল্লাহ মুমিনদের ওলি ও অভিভাবক : যারা পরিপূর্ণ ঈমানদার হবে আল্লাহ তাদের অভিভাবক ও পৃষ্ঠপোষক হয়ে যান। এটা স্বয়ং আল্লাহ তায়ালার ঘোষণা। পবিত্র কোরআনে এসেছে ‘যারা ঈমান এনেছে, আল্লাহ তাদের অভিভাবক। তাদেরকে তিনি বের করে আনেন অন্ধকার থেকে আলোর দিকে।’ (সুরা বাকারা : ২৫৭)
আল্লাহর সুসংবাদ : যারা ঈমানের ওপর অটল ও অবিচল থাকে আল্লাহ তাদের জন্য সুসংবাদ ঘোষণা করেছেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘যারা বলেÑ আমাদের প্রতিপালক তো আল্লাহ, অতঃপর এই কথার ওপর অবিচল থাকে, তাদের কোনো ভয় নেই এবং তারা দুঃখিত হবে না। তারাই জান্নাতের অধিবাসী, সেখানে তারা স্থায়ী হবে, তারা যা করত তার পুরস্কারস্বরূপ।’ (সুরা আহকাফ : ১৩-১৪)
ওয়াদা ও প্রতিশ্রুতি : ঈমানের সঙ্গে আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি রয়েছে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা ‘ওয়াদা’ শব্দ ব্যবহার করেছেন। অর্থাৎ যারা পরিপূর্ণ ঈমানের গুণ অর্জন করবে তাদের জন্য এসব ওয়াদা রয়েছে ‘তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান আনে ও সৎকাজ করে আল্লাহ তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন যে, তিনি অবশ্যই তাদেরকে
পৃথিবীতে প্রতিনিধিত্ব দান করবেন, যেমন তিনি প্রতিনিধিত্ব দান করেছিলেন তাদের পূর্ববর্তীগণকে এবং তিনি অবশ্যই তাদের জন্য প্রতিষ্ঠিত করবেন তাদের দ্বীনকে যা তিনি তাদের জন্য পছন্দ করেছেন এবং তাদের ভয়-ভীতির পরিবর্তে তাদেরকে অবশ্য নিরাপত্তা দান করবেন।
তারা আমার ইবাদত করবে, আমার কোনো শরিক করবে না, অতঃপর যারা অকৃতজ্ঞ হবে তারা তো সত্যত্যাগী। তোমরা নামাজ কায়েম কর, জাকাত দাও এবং রাসুলের আনুগত্য কর, যাতে তোমরা অনুগ্রহপ্রাপ্ত হতে পার।’ (সুরা নূর : ৫৫-৫৬)
সর্বোত্তম আমল ঈমান : হাদিসে ঈমানকে স্বতন্ত্র আমল হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, ঈমানকে সর্বশ্রেষ্ঠ আমল বলা হয়েছে। হজরত আবু হুরায়রাহ (রা.) হতে বর্ণিত, ‘আল্লাহর রাসুলকে (সা.) জিজ্ঞেস করা হলো, ‘কোন আমলটি সর্বোত্তম? তিনি বললেন, আল্লাহ ও তার রাসুলের ওপর ঈমান আনা। জিজ্ঞেস করা হলো, অতঃপর কোনটি? তিনি বললেন, আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা। প্রশ্ন করা হলো, অতঃপর কোনটি? তিনি বললেন, মাকবুল হজ সম্পাদন করা।’ (বুখারি : ২৬; মুসলিম : ৮৩)
মুমিন বান্দা জান্নাতে যাবে : যার অন্তরে সামান্য পরিমাণ ঈমান থাকবে সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে। সে যদি পাপ কাজ করে তাহলে শাস্তি ভোগ করে তারপর জান্নাতে যাবে ইনশাল্লাহ। আল্লাহর রাসুল (সা.) এ কথা খুব জোর দিয়েই বলেছেন। হাদিসে এসেছে, হজরত আবু জর গিফারি (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘একজন আগন্তুক (জিবরাইল) আমার প্রতিপালকের নিকট হতে এসে আমাকে সুসংবাদ দিলেন যে, আমার উম্মাতের মধ্যে যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক না করা অবস্থায় মারা যাবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আমি বললাম, যদিও সে জিনা-ব্যভিচার করে এবং চুরি করে থাকে? তিনি বললেন, যদিও সে জিনা-ব্যভিচার করে এবং চুরি করে থাকে।’ (মুসলিম : ১৪০)।
তাই বলে পাপ কাজের দিকে ধাবিত হওয়া যাবে। কারণ, ইচ্ছা করে পাপে জড়ালে ঈমান অবস্থায় মৃত্যু না হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। এতে চিরকালের জন্য ধ্বংস ও জাহান্নাম তার কপালে জুটবে।