৫১ ভাগ নির্মাণকাজ শেষ কর্ণফুলী টানেলের : কাদের

৫১ ভাগ নির্মাণকাজ শেষ কর্ণফুলী টানেলের : কাদের
৫১ ভাগ নির্মাণকাজ শেষ কর্ণফুলী টানেলের : কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণের কাজ দীর্ঘায়িত হবে না। ইতোমধ্যে টানেলের ৫১ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। রোববার চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণকাজ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ তথ্য জানান।

মন্ত্রী বলেন, দেশে প্রথম চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেলের নির্মাণ প্রকল্পের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। ১০ হাজার ৫শ’ সেগমেন্টের মধ্যে প্রায় অর্ধেক সেগমেন্ট টানেলে স্থাপন করা হয়েছে। তিনি জানান, নদীর দুই পাড়ে প্রকল্পের কাজ দৃশ্যমান হয়েছে। ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে এই টানেল নির্মাণে সরকার ৪ হাজার ৪৬১ কোটি টাকা জোগান দিচ্ছে। বাকি ৫ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা চীন সরকার এই প্রকল্পে ব্যয় করছে।

এ সময় তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, দফতর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, সংসদ সদস্য মোসলেম উদ্দিন আহমেদ এবং জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এমএ সালাম উপস্থিত ছিলেন।
সেতুমন্ত্রী বলেন, ২০১৯ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী কর্ণফুলী টানেলের বোরিং কাজের শুভ উদ্বোধন করেন। ইতোমধ্যে ২ হাজার ৪শ’ মিটারের মধ্যে টানেল টিউব ১২২৮ মিটার বোরিংয়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এখন নদীর মাঝামাঝি অংশ পর্যন্ত চলে গেছে টানেল নির্মাণকাজ। বর্তমানে ৫১ শতাংশ নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা আশা করছি ২০২২ সালের মধ্যে এই টানেল পুরোপুরিভাবে আলোর মুখ দেখবে। সরকারের মেগা প্রজেক্টের মধ্যে অন্যতম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্ণফুলী টানেলের নির্মাণকাজ শেষ হবে এবং চট্টগ্রামের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে এই টানেল সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলবে।

তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে কর্ণফুলী টানেলে কর্মরত চীনা নাগরিকরা এখনও কোন ক্ষয়ক্ষতি কিংবা সময়ক্ষেপণের কারণ সৃষ্টি করেনি। কাজ যথারীতি এগিয়ে চলছে। হয়তো করোনাভাইরাসের ব্যাপারটি দীর্ঘায়িত হলে তখন ব্যাপারটা অন্যদিকে কিছুটা মোড় নিতে পারে। তবে যতটা পদ্মা সেতুতে হতে পারে কর্ণফুলী টানেলে ততটা নাও হতে পারে। কারণ এখানে কর্মরত চীনা নাগরিকদের সংখ্যা খুব বেশি নয়।

ওবায়দুল কাদের বলেন, মোট ২৯৩ জন চীনা নাগরিক কর্ণফুলী টানেল প্রকল্পে কর্মরত। এর মধ্যে ৭২ জন নববর্ষের ছুটিতে গিয়েছিল। তার মধ্যে ২৫ জন ফিরে এসেছে। ২৮ জন ১৪ দিনের ছুটি শেষ করে কাজে যোগদান করেছে। বাকি ১৭ জন এখনও কোয়ারেন্টাইনে রয়েছে। এর জন্য কাজের বিঘ্ন ঘটার কোনো কারণ নেই।

উপস্থিত তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদকে ইঙ্গিত করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমি বারবার যত টানেলের কথাই বলি না কেন চট্টগ্রামের সন্তান তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ কানে কানে বলছেন শুধু মেট্রোরেলের কথা। এ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, চট্টগ্রামে মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ শুরু হবে। মন্ত্রণালয় থেকে ফিজিবিলিটি স্টাডির জন্য কাজ চলছে। মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজেরও অগ্রগতি আছে। মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এখন ফিজিবিলিটি স্টাডির কাজ শুরু হচ্ছে।

আগামী ২৯ মার্চ চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থীদের নিয়ে দলীয়ভাবে কী ভাবছেন, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, ঢাকায়ও বিদ্রোহী প্রার্থী ছিল। প্রথমে যতটা ছিল শেষ পর্যন্ত ততটা বিদ্রোহী প্রার্থী ছিল না। ১৭২ জনের মধ্যে কমতে কমতে মাত্র ১৫ জন ছিল, যারা জয়লাভ করেছে। চট্টগ্রামেও আমি উদ্বেগের কোনো কারণ দেখি না। যেটুকু সমস্যা আছে আশা করি সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

তিনি বলেন, আমরা কেন্দ্রীয়ভাবে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন সাহেবের নেতৃত্বে একটা নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করে দিয়েছি। চট্টগ্রামের সমস্যা চট্টগ্রামেই যারা দায়িত্বরত তারাই সমাধান করবে। কেন্দ্র থেকে কোনো পরামর্শ প্রয়োজন হলে দেব।