সরকার পতনের বীজ বপন হয়েছে আবরারের রক্তে - খন্দকার মোশররফ হোসেন

পোস্টকার্ড প্রতিবেদক ।।

সরকার পতনের বীজ বপন হয়েছে আবরারের রক্তে - খন্দকার মোশররফ হোসেন

ড. খন্দকার মোশররফ হোসেন বলেছেন, ১৯৯০ সালে শহীদ জেহাদের রক্তের বিনিময়ে স্বৈরাচার এরশাদের পতন হয়েছে। একইভাবে শহীদ আবরার ফাহাদের রক্তে এই সরকারের পতনের বীজ বপন হয়েছে।  

 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য শনিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জনসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরকালে দেশটির সঙ্গে করা সব ‘দেশবিরোধী চুক্তি’ বাতিল ও বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যার প্রতিবাদে সারা দেশের মহানগরগুলোতে জনসমাবেশ করে বিএনপি। এর অংশ হিসেবে নয়াপল্টনে ঢাকা মহানগর বিএনপির আয়োজনে এ জনসমাবেশ হয়।

ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, দেশবিরোধী চুক্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে আবরার একটা স্ট্যাটাস দিয়েছিল। এর জন্য তাকে প্রাণ দিতে হলো। এটা দেশের মানুষের প্রতিবাদ। আবরারের কথাটাই দেশের মানুষের কথা। আবরারকে হত্যা করে দেশের জনগণের কণ্ঠকে হত্যা করা হয়েছে। ছাত্রসমাজ এর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। তার রক্ত জনগণ বৃথা যেতে দেবে না।

তিনি বলেন, ফেনী নদীর পানি উত্তোলনে প্রধানমন্ত্রী সম্মতি দিয়েছেন, সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করতে সম্মতি দিয়েছেন, উপকূলে যৌথ নজরদারির নামে ভারতকে ২০টি রাডার প্রতিষ্ঠা করার অনুমতি দিয়েছেন। আমরা যে এলপিজি আমদানি করি তা ভারতে রপ্তানি করার অনুমতি দিয়েছেন। এসব চুক্তির প্রতিটি বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী। ফেনী নদীর পানি উত্তোলনের অনুমতি দিলেন, কিন্তু কতখানি তারা উত্তোলন করবে তা পরিমাপ করার বিষয় এ চুক্তিতে কিছু নেই। এছাড়া, ৩৬টি নদীর পানি ভারত জোর করে তুলে নিয়ে যাচ্ছে, এ বিষয়ে কিছুই বলা হয়নি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, এই সরকার দুর্নীতিতে ডুবে গেছে। সবদিক দিয়ে খাদের কিনারায় চলে গেছে।

স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরে গেলে সে দেশের একজন উপ-মন্ত্রী উনাকে রিসিভ করেন। এতে এ দেশের মানুষ হিসেবে খুব লজ্জা বোধ করি।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেলের সভাপতিত্বে জনসমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন- বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, বিএনপির সহ-প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, যুবদলের সভাপতি সাইফুল ইসলাম নিরব, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, কেন্দ্রীয় মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু প্রমুখ।

সমাবেশে যোগ দিতে শনিবার সকাল থেকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আসেন দলের নেতাকর্মীরা। এর আগে সকাল ৯টা থেকে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয় পুলিশ। বেলা দেড়টার দিকে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের দুই দফা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। নেতাকর্মীরা নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে আসার সময় অনেকেই পুলিশের বাধার মুখে পড়েন। সড়কের দুই পাশেই পুলিশ চেকপোস্ট বসায়। সবার পরিচয়পত্র দেখে তারপর প্রবেশ করতে দেয়া হয়।

এই সমাবেশে আসার সময় বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রায় ৫০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে বিএনপির পক্ষ থেকে। গ্রেপ্তাকৃতদের সমাবেশ শেষ হওয়ার আগেই ছেড়ে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির নেতারা।