সাংবাদিকরা সহজ কিস্তিতে ফ্ল্যাট পাবে : প্রধানমন্ত্রী

সাংবাদিকরা সহজ কিস্তিতে ফ্ল্যাট পাবে : প্রধানমন্ত্রী
সাংবাদিকরা সহজ কিস্তিতে ফ্ল্যাট পাবে : প্রধানমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিবেদক, ঢাকা ।।

সাংবাদিকরা যাতে কিস্তিতে ফ্ল্যাট কিনতে পারে সে বিষয়ে সরকার উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমরা সাংবাদিকদের আবাসনের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছি। ইতিমধ্যে অনেকেই প্লট পেয়েছেন, কেউ কেউ তা বিক্রিও করেছেন। সরকারিভাবে অনেক ফ্ল্যাট তৈরি করা হয়েছে। সামান্য কিছু টাকা জমা দিয়ে সাংবাদিকরা চাইলে কিস্তিতে পরিশোধ করে এসব ফ্ল্যাট নিতে পারবেন।’

সোমবার সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অসুস্থ, অসচ্ছল ও দুর্ঘটনায় আহত এবং নিহত সাংবাদিক পরিবারের সদস্যদের আর্থিক সহায়তা ভাতা বা অনুদানের চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।

সরকারপ্রধান বলেন,  ন্যাম সম্মেলনের জন্য যখন ফ্ল্যাট তৈরি করি তখনই লক্ষ্য ছিল যে সম্মেলন হওয়ার পরে ফ্ল্যাটগুলো আমারা কবি, শিল্পী সাহ্যিতিক, সাংবাদিক, আসলে তাদের কোনো চাকিরর তো কোনো স্থায়িত্ব থাকে না। যখন বয়স্ক হয়ে যায় বা অসুস্থ হয়ে যায়, তখন কি করে চলবে। তার কোনো নিদিষ্ট সুযোগই থাকে না। সরকারি চাকরি যারা করে তারা তো অবসর ভাতা পায়। যেমন আমাদের  রাজনীতিবিদদেরও কিছু থাকে না, সাংবাদিকদেরও কিছু থাকে না। এটা তো বাস্তবতা। তাই সরকারি ফ্ল্যাটগুলো চাইলে আপনারা সাংবাদিকরা নিতে পারেন। প্রথমে অল্প কিছু টাকা জমা দিয়ে, কোনোটা ১৬ বছর আবার কোনোটা ২৬ বছর পর্যন্ত টাকা পরিশোধ করে সেটার মালিক হয়ে যান। এ ছাড়া কেউ যদি গ্রামে গিয়েও বাড়ি করতে চান তাহলে সরকার সহায়তা করবে।   

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও একসময় সাংবাদিকতা করেছেন। তার আত্মজীবনী পড়লে আপনারা সেটি জানতে পারবেন। শুধু সাংবাদিকতা নয়, পত্রিকা বিক্রির কাজও তিনি করেছেন। সেদিক থেকে বিবেচনা করলে আমি আপনাদের পরিবারের একজন সদস্য।

তিনি বলেন, '৯৬ সালে আমি যখন সরকারে গঠন করি তখন মাত্র একটি টেলিভিশন ছিল, সেটাও আবার সরকারি টেলিভিশন। সংবাদপত্র ছিল কয়েকটি। স্বাধীনতার সময় অনেক সংবাদপত্র হানাদার বাহিনী পুড়িয়ে দিয়েছিল। জাতির পিতার লক্ষ্য ছিল এদেশের জনগণের যেন মত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকে।  

শেখ হাসিনা বলেন, এদেশে কোন মানুষ ভূমিহীন থাকবে না, গৃহহীন থাকবে না। তাদেরকে আমরা ঘর করে দিচ্ছি। আমরা চাই প্রত্যেকের একটা ঠিকানা হবে। সেই সাথে তাদের আমরা ঋণ দিচ্ছি, কাজের ব্যবস্থা করে দিচ্ছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সংবাদপত্রে যারা কর্মরত সাংবাদিক, কর্মচারী বা প্রেসশ্রমিক রয়েছেন তাদের কল্যাণে আমরা ইতোমধ্যে একটা ওয়েজবোর্ড কার্যকর করেছি। যেহেতু এখানে বেসরকারি খাতটাই সব, এটা নির্ভর করে অনেকটা মালিকদের ওপর। তারপরও ইলেক্ট্রলিন মিডিয়ার সাংবাদিকদের ওয়েজবোর্ডের আওতায় আনার উদ্যোগ নেওয়া হবে এবং এটা বাস্তবায়ন করা হবে। আর আপনাদের কল্যাণে গণমাধ্যমকর্মী আইন, চাকরির শর্তাবলী আইন সেটাও আমরা প্রণয়ন করে দেব।’

সাংবাদিকদের কল্যাণে তহবিল ও পরে ট্রাস্ট তৈরি করার কথা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সংবাদিকরা অসুস্থ কিংবা কোনো দুর্ঘটনায় আহত হয়ে থাকে, আবার কেউ কর্তব্য পালন করতে গিয়ে মৃত্যুবরণ করে, তাহলে পরিবারগুলো যেন একটা সহযোগিতা পায় সে কথা চিন্তা করে প্রথমে একটা কল্যাণ তহবিল করা হয়; তারপর একটা ট্রাস্টায়ন করে দিই। তহবিল করলে যে সেটা সবসময় থাকবে সেটা না, আবার কাজেও আসে না। ট্রাস্ট সুরক্ষা দেয়, সেটা মাথায় রেখেই এই ট্রাস্টায়ন করে, তারপর আমি সিড মানিটাও দিয়ে দিয়েছিলাম।’

তিনি বলেন, ‘তারপর আমাদের বেশকিছু টেলিভিশনের মালিক, পত্রিকার মালিক অনেকেই তো আছেন অর্থশালী-সম্পদশালী, তাদের বলেছিলাম কিছু টাকা-পয়সা অনুদান দিতে। যাক সেখানেও পাওয়া গেছে, টাকা-পয়সা বেড়েছে কিছুটা। তবে অনেকেই দেয়নি। এসময় যারা অনুদান দেয়নি তাদের আবারও অনুদান দেওয়ার কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়ার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

খালেদ / পোস্টকার্ড ;