শূন্য হাতে ভারত থেকে ফিরিনি: প্রধানমন্ত্রী

শূন্য হাতে ভারত থেকে ফিরিনি: প্রধানমন্ত্রী
শূন্য হাতে ভারত থেকে ফিরিনি: প্রধানমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিবেদক, ঢাকা ।। 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রত্যাশা করছেন আগামী নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করবে। তিনি বলেছেন, ‘সবাই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক, সেটাই আমরা চাই। তবে যদি কেউ না করে, সেটা যার যার দলের সিদ্ধান্ত। সে জন্য আমরা সংবিধান তো বন্ধ করে রাখতে পারি না। আমরা চাই গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকবে। সংবিধান অনুযায়ী গণতান্ত্রিক ধারাটি অব্যাহত থাকবে। শান্তিপূর্ণ পরিবেশ থাকবে।’

বুধবার গণভবনে ভারত সফর-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। আগামী জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ এককভাবে নাকি ১৪ দলীয় জোট বা জাতীয় পার্টিসহ মহাজোট করে অংশ নেবে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা ১৪ দল করেছি। জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন করেছি। জাতীয় পার্টি আলাদাভাবে নির্বাচন করেছে। তবে তাদের সঙ্গে আমাদের একটি সমঝোতা ছিল। ভবিষ্যৎ নির্বাচনে কে কোথায় থাকবে, তা সময় বলে দেবে। নির্বাচনে যারা সব সময়ে আমাদের সঙ্গে ছিল। তারা আমাদের সঙ্গে থাকবে। এতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।’ জোটগত ভোটের প্রশ্নে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ উদারভাবে কাজ করে। আওয়ামী লীগের দরজা খোলা। নির্বাচনে আওয়ামী লীগকেই মানুষ ভোট দেবেন।

আওয়ামীলীগ প্রার্থী দেবে যাচাই করে

জেলা পরিষদে বেশ কিছু প্রার্থী পরিবর্তন হয়েছে, জাতীয় নির্বাচনে এমন হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘নির্বাচনে মনোনয়ন পরিবর্তন খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। আমরা অবশ্যই যাচাই করে দেখব, কার জেতার সম্ভাবনা আছে, কার নেই। নির্বাচনের এখনো এক বছরের বেশি বাকি। সময় যত যাবে ততই বিষয়টি পরিষ্কার হবে।’ জেলা পরিষদে নমিনেশন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘হয়তো বেশি দিন বাঁচবেন না। বৃদ্ধ হয়ে গেছেন। তাঁদের আর কষ্ট দিতে চাইনি। তাঁদের মনোনয়ন দিয়েছি। সেখানে পরিবর্তন আনিনি।’

নির্বাচন জোট না মহাজোট সময় বলে দেবে

আগামী জাতীয় নির্বাচন আওয়ামী লীগ এককভাবে, নাকি ১৪ দলীয় জোট বা জাতীয় পার্টিসহ মহাজোট করে অংশ নিবে এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা সময় এলে বলা যাবে। আমরা ১৪ দল করে জোটবদ্ধভাবে ‍নির্বাচন করেছি। জাতীয় পার্টি সঙ্গে ছিল। তারা (জাতীয় পার্টি) আলাদা নির্বাচন করেছে। কিন্তু একটা সমঝোতা ছিল। আর ভবিষ্যৎ নির্বাচনে কে, কোথায়(?) থাকবে, সেটা সময়ই বলে দেবে। আওয়ামী লীগ উদারভাবে কাজ করে। আমাদের দরজা খোলা।

জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অর্ধেকের বেশি প্রার্থী পরিবর্তন করেছে, তারই ধারাবাহিকতায় জাতীয় নির্বাচনেও প্রার্থী পরিবর্তন করা হবে নাকি এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেকোনো নির্বাচন মনোনয়ন পরিবর্তন খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। অবশ্যই যাচাই করে দেখব, কার জেতার সম্ভাবনা আছে, কার নেই।

জেলা পরিষদে চেয়ারম্যান পদে প্রবীণ নেতাদের মনোনয়নের বিষয়ে ইঙ্গিত করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, বেশ কিছু নিবেদিতপ্রাণ কর্মী আছেন। বয়োবৃদ্ধ হয়ে গেছেন, হয়তো আর বেশি দিন বাঁচবেন না, তাদের আর কষ্ট দিতে চাইনি। তাই সেখানে পরিবর্তন আনিনি।

তিনি বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে কোনটা কতটুকু করবেন? কে ভোট পাবে, না পাবে। ভোট পেলেও জিতবে কি না সবকিছু বিবেচনা করেই প্রার্থী দেয়া হয়। এখনো নির্বাচনে একবছরেরও বেশি সময় বাকি আছে। সময় যত যাবে, ততই এ বিষয়টি পরিষ্কার হবে। আমাদের সঙ্গে কে থাকবে, না থাকবে নাকি নতুন জোট হবে? হোক অসুবিধা নাই তো। সবাই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক- সেটাই চাই। আর যদি কেউ না করে সেটা যার যার দলের সিদ্ধান্ত। সেই জন্য সংবিধান বন্ধ করে রাখতে পারি না। সংবিধানের ধারা অনুযায়ী গণতান্ত্রিক ধারাটা অব্যাহত থাকবে। আমরা চাই গণতান্ত্রিক ধারাটা অব্যাহত থাকুক।

দলের কেউ অন্যায় করলে ছাড়া হয় না বলেও জানান আওয়ামী লীগ সভাপতি। তিনি বলেন, দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে, কিছু বলব না, তা না। যে অন্যায় করবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব এবং নিচ্ছি। সেটা কখনো সহ্য করব না।

যারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি নিয়ে কথা বলছে তাদের উদ্দেশে সরকারপ্রধান বলেন, তারা কি এক-এগারোর কথা ভুলে গেছে? ২০০৭ সালের কথা ভুলে গেছে? তখন কী অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে? কী রাজনৈতিক কর্মী, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী সবার নাভিশ্বাস উঠেছিল। সেখান থেকে সবাই অন্তত মুক্তি পেয়েছেন।

২০০৯ থেকে এখন পর্যন্ত সবার স্বাধীনভাবে কথা বলা, চলার অধিকার, সমালোচনা এবং প্রশংসা করার অধিকার সবাই পাচ্ছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, কেউ মুখ বন্ধ করে রাখছে না। বাধা দিচ্ছি না। যেভাবে পারেন বলেন। মতপ্রকাশে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছি। সেটা স্বীকার করতে হবে।

সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘বেশি কিপটামি না করে একটু বলেন যে কাজগুলো আমরা করলাম। এত কৃপণতা কেন? টক শোতে টক টক কথা বলেন। তবে টকের সঙ্গে মিষ্টি না হলে হয় না। সেটাও দেখবেন।’

আন্দোলনে বিএনপির সাড়া নেই

শেখ হাসিনা বিএনপির আন্দোলনের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, ‘আজকে রাস্তার আন্দোলন। জনগণ সাড়া না দিলে তো সেটা আমার দায়িত্ব নয়। আওয়ামী লীগ যে বিএনপির হাতে নির্যাতিত হয়েছে, সেটা কি ভুলে গেছেন? সবাই তো আওয়ামী লীগের ওপর চড়াও হয়েছে।’ বিএনপির উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘যাঁরা তত্ত্বাবধায়ক বা ইত্যাদি বলে চিৎকার করছেন, তাঁরা ওয়ান-ইলেভেনের কথা ভুলে গেছেন? ২০০৭-এর কথা ভুলে গেছেন? কী অবস্থা সৃষ্টি হয়েছিল। সেখান থেকে তো অন্তত সবাই মুক্তি পেয়েছেন। ২০০৯ থেকে ২০২২ পর্যন্ত স্বাধীনভাবে কথা বলার অধিকার, চলাফেলার অধিকার, সমালোচনার অধিকার, প্রশংসা করার অধিকার—সবই তো পাচ্ছেন। কেউ তো কারও মুখ বন্ধ করে রাখছে না।’

বিরোধী দলের সমালোচনার জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি দেশের জন্য কাজ করি। দেশের মানুষের জন্য কাজ করি। আমার স্বার্থ এ দেশের মানুষ ভালো থাকুক। সমালোচনা যারা করবে করুক না।’

শূন্য হাতে ভারত থেকে ফিরিনি  

ভারত সফরে বাংলাদেশ কী পেল? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কী পেলাম, এই প্রশ্নটা খুব আপেক্ষিক। এটা আপনার নিজের ওপর নির্ভর করছে, আপনি বিষয়টি কীভাবে দেখছেন।’ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের যে ভৌগোলিক অবস্থা, চারদিকে ভারত, একটুখানি মিয়ানমার, তারপর বঙ্গোপসাগর। বন্ধুপ্রতিম দেশ থেকে ব্যবসা-বাণিজ্য, কৃষি, যোগাযোগ—সব বিষয়ে সহযোগিতা পাই।’ তিনি জানান, ‘নুমালিগড় থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে ডিজেল নিয়ে আসছি। সেই লাইন ভারত নির্মাণ করে দিচ্ছে। দিনাজপুরের পার্বতীপুর ডিপোতে এই তেল থাকবে। উত্তরবঙ্গে আর সুদূর চট্টগ্রাম থেকে বাঘাবাড়ী হয়ে তেল যাবে না। রিফাইন করা তেল ওখান থেকেই আসবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘ভারত থেকে এলএনজি আমদানির ব্যাপারেও আলোচনা হয়েছে। ভারত যে এলএনজি নিয়ে আসছে, সেখান থেকে খুলনা অঞ্চলের জন্য যেন এলএনজি পেতে পারি, সেই আলোচনা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘মনে হয় না যে একেবারে শূন্য হাতে ফিরে এসেছি।’

ভারতকে বিনা মূল্যে ট্রানজিট সুবিধা দেওয়া প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যে জলবিদ্যুৎ আনব, সেটার জন্যও তো ট্রানজিট দরকার। কারণ, গ্রিড লাইন তৈরি করতে হবে। লোকজন যাবে। সেই সার্বিক বিষয় নিয়ে এটা বলা হয়েছে। এটা তো এখানেই সীমাবদ্ধ থাকবে না।’ তিনি আরও বলেন, দরজা বন্ধ করলে তো লাভ হয় না। খুলে দিলেই লাভ হতে পারে। মানুষের ভালো হয়। কল্যাণ হয়, কর্মসংস্থান বাড়ে। ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ে।

লাভ হয় না দরজা বন্ধ করলে

ভারত বাংলাদেশকে ফ্রি ট্রানজিট দিবে তার ব্যাপ্তি এবং কবে নাগাদ কাজ শুরু হবে সেই সম্পর্কে প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে যোগাযোগের ক্ষেত্রে ট্রানজিট খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ভারতেরও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগের সুযোগ। ইতিমধ্যে ভুটান-নেপাল-ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে সমঝোতা আছে। ভুটান পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় বড় বড় ট্রাক ঢুকতে দিতে পারে না। তারপরও ব্যবসা-বাণিজ্য হতে পারে। বাংলাদেশের পণ্য ভারত, ভুটান, নেপালে যাওয়ার সুবিধাটা পাওয়া। নেপাল, ভুটান থেকে বাংলাদেশে পণ্যটা আসা।

তিনি বলেন, নেপাল, ভুটান ও ভারতের উত্তরাঞ্চলের মানুষও বাংলাদেশর বিমানবন্দর ব্যবহার করতে পারে। সেই সঙ্গে ট্রানজিট সুবিধাও আছে। জলবিদ্যুৎ আনার জন্যও ট্রানজিট দরকার। কারণ গ্রিডলাইন তৈরি করতে হবে। লোকজন যাবে। সেই সার্বিক বিষয় নিয়ে এটা বলা হয়েছে। এটা তো এখানেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। এটা আরও যাবে- মিয়ানমার, থাইল্যান্ড হয়ে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যোগাযোগ তৈরি হবে। ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কাজ করছি সেটার সুযোগ হবে। দরজা বন্ধ করলে লাভ হয় না। খুলে দিলেই না লাভ হতে পারে। মানুষের ভালো হয়। কল্যাণ হয়, কর্মসংস্থান বাড়ে। ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ে। আর বাণিজ্য তো বসতির লক্ষ্মী। সেটা তো আছেই।

যারা সমালোচনা করে তারা কী এনেছে ? 

কুশিয়ারার পানি বণ্টন নিয়ে যারা প্রশ্ন করে বা সমালোচনা করে তারা কী এনেছে বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থাকতে যখন ভারতে গেলেন খুব সেজেগুজে। তারা আদর আপ্যায়ন কম করেনি। সবই করেছেন। কিন্তু ফিরে এসে কী বললেন? গঙ্গার পানি বণ্টনের কথা ভুলেই গিয়েছিলাম। এই তো উত্তরটা ছিল? এই যে গঙ্গা নদীর পানিতে বাংলাদেশের অধিকার আছে সেই অধিকারের কথাটুকু বলতেই ভুলে গেয়েছিলেন। যারা ওখানে গিয়ে নিজের দেশের স্বার্থের কথা ভুলে যান তারা সমালোচনাটা করেন কোন মুখে?

রসিকতা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একেবারে হটটক থেকে শুরু করে টক টক কথাও তো চলে। কই হটটকে যারা উপস্থাপক থাকেন তারা তো জিজ্ঞেস করেন না। ওরা তো ভুলেই যায়। দেশের স্বার্থের কথা হলেই ভুলে যায়। দেয়ার কথা হলে ভোলে না। জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসার পর ভারতের সকল পণ্যের ওপর থেকে শুল্ক প্রত্যাহার করে দিয়েছিল। ভারতীয় পণ্যে সয়লাব হয়ে গেয়েছিল। এটা বাস্তব কথা।

অনেক স্বনামধন্য ব্যক্তির টাকা পাচারের তথ্য আছে

প্রধানমন্ত্রী টাকা পাচারসংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘এমন এমন ব্যক্তির অর্থ পাচারের তথ্য আছে, সেটা আপনারা লিখবেন কি না, আমার সন্দেহ আছে। অনেক স্বনামধন্য ব্যক্তির ব্যাপারেও তথ্য আমার কাছে আছে। আমাদের দুদক ও ব্যাংকের মাধ্যমে তথ্য আসছে। তবে সেটা আপনারা লিখবেন কি না, সেটা দেখব।’ তথ্য চেয়ে সুইস ব্যাংকে চিঠি পাঠানো হয়েছিল জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বহু আগে আমরা তালিকা চেয়েছিলাম, কিন্তু সেটা আসেনি। সবাই হাওয়াই কথা বলে যায়। কিন্তু সঠিক তথ্য দিয়ে বলতে পারে না।’

চলমান বৈশ্বিক সংকট দীর্ঘ হওয়ার আশঙ্কা 

চলমান বৈশ্বিক সংকট প্রসঙ্গে সরকারপ্রধান বলেন, হয়তো সামনের বছর এই সংকট আরও বেশি দেখা দেবে বিশ্বব্যাপী। সারা বিশ্বে দুর্ভিক্ষের শঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, সারা বিশ্বে অর্থনীতির চরম দুরবস্থা দেখা দিতে পারে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় মানুষকে আগে থেকে সাশ্রয়ী হওয়ার অনুরোধ করেন তিনি। প্রকৃতির বিরূপ প্রতিক্রিয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ইউরোপের বিভিন্ন দেশে দাবানলে অনেক দেশের ফসল পুড়ে গেছে। এ জন্য আমাদের আগে থেকে ব্যবস্থা থাকতে হবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের মানুষের জন্য যা যা করণীয়, সেটা সরকার করে যাচ্ছে।’

মোবাইল ব্যাংকিং নজরদারিতে

মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে মানিলন্ডারিং বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অবশ্যই এটা নজরদারিতে আনা হয়েছে বলেই জানতে পারলেন। সাংবাদিকরা খুঁজে বের করেননি। এটা নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন কাজ করছে। সুইচ ব্যাংককে বহু আগেই তালিকা, চাহিদাপত্র পাঠিয়েছিলাম। তারা তথ্য দেয়নি। অনেকের নামই আছে। যেভাবে হোক মানিলন্ডারিং বন্ধের ব্যাপারে সরকার কঠোর বলেও জানান সরকারপ্রধান।

তিনি বলেন, ডলার সংকট বাংলাদেশের একার না। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্বে এই সংকট। ডলার নিয়ে কিছুটা খেলা একটা শ্রেণি তো খেলতে শুরু করেছিল। এটা এখন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। এই সংকট সামনের বছর আরও বেশি দেখা দেবে। এত খারাপ অবস্থা সারা বিশ্বে হতে পারে যেটা কল্পনা করা যাচ্ছে না।

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে ভারত ইতিবাচক

বাংলাদেশ রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে ভারতের সহযোগিতা চেয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, তাদের সাড়াটা ছিল ইতিবাচক। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে মিয়ানমারের সরকারের দিক থেকে। তাদের যে যতটা পারুক চাপ দিক। কিন্তু এরা কিছু করে না। মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের জায়গা দেওয়া হলেও সেটা এখন বোঝা হয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বঙ্গবন্ধুর বায়োপিক গ্রহণযোগ্য হয়েছে

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনীনির্ভর বায়োপিক সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ট্রেলার দেখার পর অনেক প্রশ্ন এসেছে। একটা কথা বলতে পারি, ট্রেলারটা যদি গ্রহণযোগ্য না হতো, তাহলে ফ্রান্সের কান উৎসবে এটা কিন্তু কোনো দিন গ্রহণ করা হতো না। এটার গুণগত মান নিয়ে অনেকেই অনেক কথা বলতে পারেন। কিন্তু এ কথাও বিবেচনা করতে হবে, কান উৎসব যা-তা গ্রহণ করে না।’

ধর্মান্ধ গোষ্ঠী দুই দেশেই রয়েছে

অপর এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে যখন উৎসব হয়, পূজা-পার্বণ হয় ভারতের অনেকেই এসে যোগ দেন। আবার ভারতে যখন হয় তখন বাংলাদেশ থেকে অনেকে যোগ দেন। বাংলাদেশে সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষের সমান অধিকার আছে। ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। দুদিকেই কিছু ধর্মান্ধ তো থাকবেই। তাদের বক্তব্য, তাদের কথায় অস্বস্তিকর পরিবেশ সৃষ্টি হতে পারে। সে ক্ষেত্রে ওই ভাবে কিছু করার নেই।

তিনি বলেন, সকল ধর্মের সমান অধিকারে আমরা বিশ্বাস করি। সকলে যার যার ধর্ম শান্তিপূর্ণভাবে পালনের পরিবেশটা বাংলাদেশ ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে। মাঝে মাঝে কিছু ঘটনা ঘটে বা ঘটানো হয়। তার পরও তো যারা অপরাধী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়। অপরাধীদের কখনো ছেড়ে দেয়া হয় না। একটা সম্প্রীতি যেন বজায় থাকে সেই চেষ্টাটা সব সময় থাকে।

খালেদ / পোস্টকার্ড;