শতভাগ পেনশন উত্তোলনকারী সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য সুসংবাদ আসছে

শতভাগ পেনশন উত্তোলনকারী সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য সুসংবাদ আসছে

পোস্টকার্ড প্রতিবেদক ।।

সম্প্রতি অর্থ বিভাগ কর্তৃক জারিকৃত প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে যে,  শতভাগ পেনশন উত্তোলনকারী সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর মৃত্যুর পর তার বিধবা স্ত্রী বা বিপত্নীক স্বামী ও প্রতিবন্ধী সন্তান পেনশন সুবিধা পাবেন। পাশাপাশি চিকিৎসা ভাতা, উৎসব বোনাসও দেয়া হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে পাওয়া গেছে এসব তথ্য।

২০১৭ সালের পহেলা জুলাই থেকে শতভাগ পেনশন উত্তোলনকারী অবসরপ্রাপ্ত সরকারি চাকরিজীবীদের পুনরায় পেনশনের আওতায় আনা হয়। অবসরপ্রাপ্তদের আর্থিক ও সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পেনশন পুনঃস্থাপনের সিন্ধান্ত নেয়া হয়। এই সুবিধা পেতে একজন পেনশনকারীকে অবসর গ্রহণের তারিখ থেকে পরবর্তী ১৫ বছর অপেক্ষা করতে হবে। অর্থাৎ ১৫ বছর বেঁচে থাকার পর নতুন করে সরকার তাকে ফের পেনশন দেবে।

 

চলতি সপ্তাহে অর্থ বিভাগের জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘শতভাগ পেনশন সমর্পণকারীগণ প্রজাতন্ত্রের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীর পেনশন পুনঃস্থাপিত হয়ে থাকলে তার মৃত্যুর পর তার বিধবা স্ত্রী/বিপত্নীক স্বামী ও প্রতিবন্ধী সন্তান (যদি থাকে) পুনঃস্থাপিত পেনশন সুবিধা প্রাপ্য হবেন। এছাড়া তাদের চিকিৎসা ভাতা ও উৎসব ভাতা প্রাপ্যতার বিষয়ে অর্থ বিভাগের প্রজ্ঞাপন (৩০.০৮.১৯) অনুসরণীয় হবে।’

জানা গেছে, শতভাগ পেনশন উত্তোলনের পর পনেরো বছর অতিক্রান্ত হয়েছে- এমন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা বর্তমানে ২০ হাজার। এ খাতে সরকারের ব্যয় হচ্ছে বছরে ১৩৯ কোটি টাকা। এ ছাড়া বিদ্যমান পেনশন পদ্ধতি অনুযায়ী, প্রতিবছর তারা ৫ শতাংশ হারে পেনশন সুবিধাভোগীরা ইনিক্রিমেন্ট পাচ্ছেন। ফলে ওই হিসাবে সুবিধা দিতে সরকারকে অতিরিক্ত ব্যয় করতে হচ্ছে ৬ কোটি টাকা।

জানা গেছে, শতভাগ পেনশন উত্তোলনকারীদের অনেকে পেনশনের অর্থ বিভিন্নভাবে নষ্ট করে ফেলছেন। শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন কেউ কেউ। আবার জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে সর্বস্ব হারিয়েছেন অনেকে।

পাশাপাশি আত্মীয়-স্বজনের মাধ্যমে প্রতারিত ও প্রলোভনে পড়ে প্রাপ্য অর্থ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করতে গিয়ে ক্ষতির মুখে পড়েছেন। পেনশনের অর্থ অনেকেই ধরে রাখতে পারেননি। ফলে তাদের অনেকে চরম আর্থিক দৈন্যতায় পড়ে আশ্রয় নিয়েছেন নিজের সন্তান এবং বৃদ্ধাশ্রমে। সরকারি চাকরিজীবী হওয়া, বয়স ও স্বাস্থ্যগত কারণে অনেকে অন্য কোনো কাজে অংশগ্রহণ করতে পারছেন না। এমন পরিস্থিতিতে কেউ কেউ বন্ধুদের মাসিক সাহায্যের ওপর বেঁচে আছেন। এমন সংখ্যা আছেন বর্তমানে ১ লাখ ৭ হাজার ৬৫২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী, যারা পেনশনের একশ’ ভাগ টাকা তুলে নিয়ে অবসরে গেছেন। বর্তমান এ সব চাকরিজীবী বিদ্যমান নিয়ম অনুযায়ী দু’টি উৎসব বোনাস, বাংলা নববর্ষ ভাতা ও মাসিক চিকিৎসা ভাতা পাচ্ছেন।