শিগগিরই উত্তর জেলা আ. লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি

শিগগিরই উত্তর জেলা আ. লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি
শিগগিরই উত্তর জেলা আ. লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি

রাহুল দাশ নয়ন ।।

শিগগিরই আসছে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি  । আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে ঘোষণা করা হবে এ কমিটি। এ লক্ষ্যে জেলার সিনিয়র নেতাদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা চলছে।

চমক হিসেবে ৭৫ সদস্যের কমিটিতে এবার প্রায় ২০-৩০ শতাংশ নতুন মুখ আসতে পারে। একইসাথে গত কমিটির অধিকাংশ নেতা পদোন্নতি পেতে পারেন। তবে কমিটির আকারে সীমাবদ্ধতা থাকায় অধিক ত্যাগী ও যোগ্য নেতাদেরকেই স্থান দেয়ার কথা ভাবছেন নেতারা। বিশেষ করে ছাত্রলীগসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের রাজনীতিতে যুক্ত ক্লিন ইমেজের সাবেক নেতাদের নিয়েই হিসেব কষছেন সংশ্লিষ্টরা।

দলের নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো জানায়, উত্তর জেলার রাজনীতিতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের একছত্র আধিপত্য আছে। কমিটিতে কারা স্থান পাবেন তা নিশ্চিত করতে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক দুইজনই বর্ষীয়ান এই নেতার পরামর্শ নিবেন। একইসাথে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদের সাথেও আলাপ-আলোচনা করবেন দুই নেতা। কেন্দ্রীয় এই দুই নেতার সাথে আলাপ করেই পূর্ণাঙ্গ কমিটি চূড়ান্ত করা হবে। গত শুক্রবার ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের সাথে উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন নিয়ে আলোচনা করেছেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এমএ সালাম বলেন, ‘আমরা পূর্ণাঙ্গ কমিটির বিষয়ে আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। কমিটিতে রাখতে গেলে অনেককেই রাখতে হবে। আমাদেরও সীমাবদ্ধতা আছে। তবুও সবার সমন্বয়ে কমিটি করার চেষ্টা করছি। অতীতে সম্মেলনের সপ্তাহ খানেকের মধ্যে আমরা কমিটি পূর্ণাঙ্গ করেছিলাম। এবার জাতীয় সম্মেলন থাকায় একটু দেরি হচ্ছে। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা হবে।’

এদিকে কমিটিতে আসতে জোর লবিং-তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন উত্তর জেলার নেতাকর্মীরা। এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের নেতাদের পাশাপাশি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সাবেক নেতারাও তৎপরতা চালাচ্ছেন। উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ সালামের বাসা ও অফিস সার্বক্ষণিক নেতাকর্মীতে ভরপুর থাকে। সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমানের সাথেও পদ প্রত্যাশীদের সার্বক্ষণিক যোগাযোগ হচ্ছে। এই দুই নেতার পাশাপাশি ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন ও ড. হাছান মাহমুদের সুদৃষ্টি কামনা করছেন পদপ্রত্যাশীরা। এই দুই নেতার সাথে যোগাযোগ করতে ঢাকা-চট্টগ্রাম দৌড়ঝাঁপ করছেন পদপ্রত্যাশী নেতাকর্মীরা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক এক নেতা বলেন, আওয়ামী লীগের কমিটিতে ছিলেন অথচ দলীয় ও জাতীয় সভা-সমাবেশে আসেননি এমন নেতাদের কমিটিতে না রাখার পক্ষেই অবস্থান নিয়েছেন সিনিয়র নেতারা। এসব নেতাদের বাদ দিয়ে সেখানে দীর্ঘদিন ধরে পদবঞ্চিত থাকা সাবেক নেতাদের প্রাধান্য দেয়ার চিন্তাভাবনা করছেন নেতারা। এ কমিটি যেহেতু প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা অনুমোদন করবেন সেখানে যাতে বিতর্কিত কেউ স্থান না পান সেদিকে সতর্ক নজর রাখবেন কমিটি গঠনের সাথে যুক্ত থাকা নেতারা।

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান বলেন, ‘পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন নিয়ে আমরা একবার বসে পর্যালোচনা করেছি। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনো নেয়া হয়নি। আগামী দু’চারদিনের মধ্যে কমিটি গঠন হবে। পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে ২০-৩০ শতাংশ নতুন নেতাদের ঠাঁই দেয়া হবে। তবে যারাই কমিটিতে আসবে সবার রাজনীতিতে ত্যাগ ও যোগ্যতাকে প্রাধান্য দেয়া হবে।’

প্রসঙ্গত, গত ৭ডিসেম্বর উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে ৩৬৬ জন কাউন্সিলর প্রত্যক্ষ ভোটে সভাপতি পদে এমএ সালাম ও সাধারণ সম্পাদক পদে শেখ আতাউর রহমানকে বিজয়ী করেন। কাউন্সিল অধিবেশনে ভোটাভুটিতে সভাপতি পদে বিজয়ী এমএ সালাম পেয়েছিলেন ২২৩ ভোট ও নিকটতম প্রতিদ্বদ্বী এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি পেয়েছিলেন ১২৯ ভোট। সাধারণ সম্পাদক পদে বিজয়ী শেখ আতাউর রহমান পেয়েছিলেন ১৯৬ ভোট এবং নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বী গিয়াস উদ্দিন পান ১৫৪ ভোট।