মালিক শ্রমিকের বৈষম্য আমাদের মানসিকতার কারণে

মালিক শ্রমিকের  বৈষম্য আমাদের মানসিকতার কারণে

আমাদের মতো মধ্যম আয়ের দেশে ২৪০ টাকার পেঁয়াজ খেতে হচ্ছে। ৩০ টাকার পেঁয়াজ ২৪০ টাকা আমরা মেনে নিতে রাজি না। আবার দেখা যাচ্ছে, ৪০০ টাকা দি‌য়ে এক‌টি বার্গার খেয়ে ফেলছি। সমস্যাটা হলো−একটা মানসিক জায়গা আছে, তাই বলে আমি পেঁয়াজের দাম বাড়ানোর পক্ষে না বলে জানিয়েছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সাধারণ সম্পাদক সংসদ সদস্য শিরিন আক্তার।

বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা ও নারী গৃহকর্মীদের প্রতি সহিংসতা রোধ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বাইরের দেশের সাথে তুলনা করে বলেন,মালিক ও শ্রমিক সম্মানের জায়গা এক। কিন্তু আমাদের মানসিকতার কারণে আমাদের দেশে  সেই সম্মানের জায়গা  প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হচ্ছে না। মালিক শ্রমিক যে বৈষম্য তা বিশ্বের আর কোথাও নেই। নারী গৃহকর্মীদের মর্যাদার জন্য প্রতি ওয়ার্ডে  একটি অফিস প্রতিষ্ঠা করে প্রতিটি নারী গৃহকর্মীকে সার্বক্ষণিক পর‌্যবেক্ষণে রাখতে হবে,যাতে তার অধিকার প্রতিষ্টা পায়।

‘আমাদের মানসিকতার কারণে মালিক শ্রমিকের এই বৈষম্য’

‘আমাদের মানসিকতার কারণে মালিক শ্রমিকের এই বৈষম্য’

তিনি আরও বলেন, জাতীয় সংসদে যত দ্রুত সম্ভব  এ দাবী তুলে ৭১ বিধি ও পয়েন্ট অব অর্ডারের আওতায়  জাতির সামেন তুলে ধরা ব্যবস্থা করতে হবে। এবং এটি সবসময় ও ধারাবাহিকভাবে চালিয়ে যেতে হবে।

তিনি বলেন, গৃহকর্মী নির্যাতনের শিকার হলেও আইনি সহায়তা পেতে যথাযথ ব্যবস্থা এবং আইনি সহায়তা প্রদানকারী সংস্থার সংখ্যা বাড়াতে হবে। গৃহকর্মীদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা, দুর্ঘটনাজনিত ক্ষতিপূরণ, কাজের নিয়োগপত্র, সাপ্তাহিক একদিনের ছুটি, নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টা, বিশ্রাম ও বিনোদনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে তাদের প্রতি নির্যাতন বন্ধ করতে হবে।

নারী মৈত্রী’র নির্বাহী পরিচালক শাহীন আক্তার ডলি বলেন,  নারী গৃহকর্মীদের মর্যাদা ও সম্মানের জন্য আজকে যে প্রতিবেদন  ও দাবী তুলে ধরা হয়েছে , তা খুবই সুনির্দিষ্ট যা আগামীর পথ চলার দিকনির্দেশনা দেবে। তিনি আরও বলেন, নারী গৃহকর্মীর  মর্যাদা ও  সম্মানের দাবী  একটি সামাজিক আন্দোলনে যাতে ৭টি প্রতিষ্টান ও সরকারকে একসাথে পাশাপাশি কাজ করতে হবে।

আয়োজকদের পক্ষ থেকে কিছু দাবি তুলে ধরে অক্সফামের সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার তারেক আজিজ বলেন, গৃহকর্মকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে প্রতিষ্ঠানে কাজ ও শ্রম আইনে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। সমাজে গৃহকর্মের সম্মানজনক অবস্থান তৈরি করতে হবে। গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতির যথাযথ বাস্তবায়নে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীনে কেন্দ্রীয়ভাবে একটি মনিটরিং সেল গঠন করতে হবে।

আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন অক্সফামের প্রকল্প সমন্বয়কারী গীতা রানী অধিকারী, নারী মৈত্রী’র নির্বাহী পরিচালক শাহীন আক্তার ডলি, জাতীয় গৃহশ্রমিক নেটওয়ার্কের সমন্বয়কারী আবুল হোসেন প্রমুখ।