ভুল চিকিৎসায় সীতাকুণ্ড জেনারেল হাসপাতালে প্রসূতির মৃত্যু , হাসপাতাল ব্যবস্থাপক বলছে সমঝোতা হয়েছে

ভুল চিকিৎসায় সীতাকুণ্ড জেনারেল হাসপাতালে প্রসূতির মৃত্যু , হাসপাতাল ব্যবস্থাপক বলছে সমঝোতা হয়েছে
ভুল চিকিৎসায় সীতাকুণ্ড জেনারেল হাসপাতালে প্রসূতির মৃত্যু

পোস্টকার্ড ডেস্ক ।।

ভুল চিকিৎসায় সীতাকুণ্ড জেনারেল হাসপাতালে এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তার স্বজনেরা। মৃত ফারিয়া আক্তার বর্ষা (২০) মিরসরাইয়ের হাইতকান্দি ইউনিয়নের বালিয়াদি গ্রামের শাহ নেওয়াজের স্ত্রী।

বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে সীতাকুণ্ড জেনারেল হাসপাতালে বর্ষার মৃত্যু হয় বলে তার মামা মো. নুরুল মোস্তফা পলাশ জানান।

এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল ৭টায় প্রসব বেদনা শুরু হলে ফারিয়া আক্তার বর্ষাকে জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভর্তির ১ ঘন্টা পর অস্ত্রোপচার ছাড়াই একটি নবজাতক পুত্র সন্তান প্রসব করেন তিনি।

ফারিয়ার মামা পলাশ বলেন, সন্তান প্রসবের পর মা ও নবজাতক দুজনই সুস্থ ছিলেন। সকাল ১০ টা ৩০ মিনিটের দিকে গাইনি ওয়ার্ড থেকে হাসপাতালের নার্সরা ফারিয়াকে স্যালাইন দেয়ার কথা বলে অন্য কক্ষে নিয়ে যান। স্যালাইন দিয়েই ফারিয়ার শরীরে গাইনি চিকিৎসক একটি ইনজেকশন পুশ করেন। ইনজেকশন পুশের ৩০ মিনিট পর তার মৃত্যু হয়।

মৃত্যুর বিষয়টি বুঝতে পেরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীকে শহরে রেফার করে। এসময় ফারিয়াকে চট্টগ্রামের ইপিকে ভর্তি করা হলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ২ ঘন্টা আগে ফারিয়ার মৃত্যু হয়েছে বলে জানান।

পলাশ বলেন, ‘তারা (জেনারেল) আমাদেরকে মৃত্যুর কারণ জানাতে পারেনি। কিন্তু পরবর্তীতে জানিয়েছে খিঁচুনির কারণে মৃত্যু হয়েছে। আমরা শহরে নিয়ে যাওয়ার আগেই তার মৃত্যু হয় জেনারেল হাসপাতালে। অথচ তারা বিষয়টি আমাদের বলেনি। নরমাল ডেলিভারি ও ডেলিভারির ২ ঘন্টারও বেশি সময় পরে কীভাবে সুস্থ প্রসূতির মৃত্যু হয়? তাদের অবহেলা রয়েছে চিকিৎসায়। তারা সঠিকভাবে রোগীকে চিকিৎসা দেয়নি। আমরা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। ওসিকে পুরো বিষয়টি আমরা জানিয়েছি। আগামীকাল আমরা চিকিৎসক ও হাসপাতালের এমডিকে আসামি করে মামলা দায়ের করব।

এদিকে চিকিৎসায় অবহেলার বিষয়টি অস্বীকার করে সীতাকুণ্ড জেনারেল হাসপাতালের ব্যবস্থাপক মো. মাঈনুদ্দিন বলেন, এসব বিষয়ে আপনি ডাক্তারের বক্তব্য নিলে ভালো হবে। কেসটি ডাক্তার মাহবুবা আক্তার বর্ণা ও ডাক্তার সাহেদ সম্পূর্ণ করেছে। রোগীরা ডাক্তারের তত্ত্বাবধানেই থাকে। ফোনে সবকিছু বলা যায় না। আমার বক্তব্য হচ্ছে রোগী ডেলিভারির পর তার অবস্থা ভালোই ছিল। চিকিৎসকরা তাকে সঠিক চিকিৎসা দিয়েছেন। কিন্তু হঠাৎ করে রোগীর খিঁচুনি ওঠে যাওয়ায় পরিস্থিতি খারাপের দিকে যায়। তখন আমরা ৫ মিনিটের মধ্যে তাকে রেফার করি। আমাদের হাসপাতালে কেন রোগীর মৃত্যু হবে? রোগীর পরিস্থিতি খারাপ হলে আমাদের হাসপাতালে রাখার কোন সুযোগ নেই।

তবে চিকিৎসকের বক্তব্য নেয়ার পরামর্শ দিলেও চিকিৎসক মাহবুবা আক্তার বর্ণার মুঠোফোন নম্বর প্রতিবেদককে প্রদান করেননি হাসপাতালের ব্যবস্থাপক মো. মাঈনুদ্দিন। এসময় তিনি বিষয়টি নিয়ে মৃত প্রসূতির পরিবারের সঙ্গে সমঝোতা হয়েছে বলেও দাবি করেন এবং এসব নিয়ে কোন সমস্যা হবে না বলেও উল্লেখ করেন।

এ বিষয়ে সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নুর উদ্দিন রাশেদ বলেন, আমরা লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

খালেদ / পোস্টকার্ড ;