ফটোশিল্পী কমল দাশ , মৃত্যু থেকে জীবনের পথে

পোস্টকার্ড ডেস্ক।।

ফটোশিল্পী কমল দাশ , মৃত্যু থেকে জীবনের পথে

ছবিতে জীবনের দিনলিপি- রাতলিপি লিখে লিখে মৃত্যু থেকে পূণরায় সেই জীবনের গন্তব্যে হাঁটতে পারেন একমাত্র শিল্পী। ইল্যুশনের ইট সুরকি কিম্বা কাদামাটির অথবা ঘাসে ঢাকা সে এক মায়াবি পথে শিল্পী ছাড়া আর কেউ হাটতে জানে না। আর অনেকেই কারিগর হতে পারে শিল্পী হতে পারে না। কমল দাশ, শিল্পী- ছবির শিল্পী-আলো ছায়া আর রং অথবা রংহীন শাদাকালোর শিল্পী। সে যাই হোক, ইমোশনের আভরনে ইল্যুশনের আকর্ষণ থাকে তার ছবিতে। রেটিনা আর কর্ণিয়ার তীক্ষ্ণ চাহনি তো আছেই। যার ফলে আমি যা দেখিনা কমল তা দেখে, সাধারণ আপনি যা দেখেন না কমল তাও দেখে। এ এই হোলো আবেগতাড়িত- মোহপীড়িত শিল্পীর দর্শণ। আর সেই দর্শনীয় অথবা দার্শনিক চোখ পৃথিবীর যে প্রান্তেরই হোক না কেন তার ভাষা পড়তে জানেন আর্ন্তজাতিক বিচারিক চোখ। আর তাই কমল দাশ এলেন- দেখলেন- জয় করলেন’ মন্তব্যটির অবিকল প্রতিরূপ হয়ে অল্প সময়েই ঝুলিতে ভরে নিলেন একাদিক বিদেশি পুরস্কার। যার মূল্যও এ্ দেশে মানদণ্ডে কম নয়- লাখের অংক বর্ধমান।

এইতো সেদিন বাংলাদেশের ওয়াল স্ট্রিট খাতুনগঞ্জের গলি ঘুপছিতে কমলের পাপড়িগুলো ছিলো পৈত্রিক বানিজ্যসূত্রে মশল্লার হরেক গন্ধে ঢাকা। তার চোখে যেন বার বার আলো ফেলছিল সময়ের ফ্লাসলাইট। ব্যর্থতার ঝাঁঝগন্ধ মাথা মশল্লার রঙিন ধুলো ঝেড়ে ফেলে কাঁধে তুলে নিলো আলোর বেয়নেট বাঁধা মোক্ষম মেশিন- যার নাম ক্যামেরা। তারপর শুধু ক্লিক-শাটার-স্ন্যাপ আর ক্ল্যাপ। বলা বাহুল্য দেশে সত্তর আশির দশকের স্বনামখ্যাত আলোকচিত্রিদের প্রায় সকলেই ছিলেন শিক্ষিত- ফলে তাদের বলা যেতো ফটো আর্টিস্ট। তাদের মধ্যে প্রবীণ অনেকে প্রয়াত হলেও এখনো আছেন অনেকে। কিন্তু এর বিপরীতে ফটোজীবী মানে প্রফেশনাল ফটোগ্রফারদের আরেকটি যে ধারা রয়েছে তার অন্যতম ক্ষেত্র হলো গণমাধ্যম যেখানে নব্বই দশকে এসে ভিড় বাড়তে থাকে লেখাপড়া না জানা অনেক ক্লিকবাজের যাদের সাধারণ নাম ফটোসাংবাদিক।তারাও যে কখনো ঝলসে ওঠেননি তা নয়। কিন্তু চট্টগ্রামে এই ক্ষেত্রে শিক্ষার শূণ্যতা প্রকট রূপ নিতে শুরু করে যখন, তখন গল্পের পাণ্ডুলিপি তুলে রেখে রাশেদ মাহমুদের মতো ব্যক্তিদের ফটোসাংবাদিকতায় যুক্ত আশার আলো ছড়ালেও সহসা হতাশার অন্ধকারও তাদের তাড়া করে বেড়ায়। কারণ গণমাধ্যমে তাদের পরিবেশ এখনো অনেকটাই প্রতিকূল। তাই পেশাগত জীবনে তাদের ফ্লাশলাইট হামেশা ঝলসে ওঠেনা। কিন্তু শিল্পীরা তো অবিরাম। তাদের আগমনের ধারাও অবিরাম। কমলও ছিলো সেই ধারার আগন্তুক যে কিনা এখন অপ্রত্যাশিত নয়। সৌভাগ্যের বিষয় হলো প্রথিতযশা বাতিঘর আবদুল্লাহ আবু সাঈদের স্বপ্নতরণী বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের যে ক’জন সংগঠক চট্টগ্রামে সক্রিয় ছিলেন বা আছেন কমল দাশ তাদের একজন অনুগামী। সেই হিসেবে আলোর পরশ তার মননে তো লাগবেই। মাটির সমাজে তার শিকড় প্রোথিত হলেও ভালোবাসেন পাখি হয়ে ঘুরে বেড়াতে বনে বাদাড়ে। #সৌধ/সিটিজি