পাহাড় কেটে রাস্তা করা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় : ড. হাছান মাহমুদ

পাহাড় কেটে রাস্তা করা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় : ড. হাছান মাহমুদ

পোস্টকার্ড প্রতিবেদক ।।

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, পরিবেশ রক্ষায় সরকারি সংস্থাগুলোর আরো বেশী যত্নবান হওয়া দরকার । তিনি বলেন,  চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) মতো একটি প্রতিষ্ঠান যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের নামে রাস্তা বানাতে গিয়ে আজ থেকে প্রায় দুই বছর আগে এশিয়ান উইমেন ইউনিভার্সিটির পাশে ৩শ’ ফুট পাহাড় কেটে সমতল করে ফেলেছে। এটি আমাকে প্রচন্ড পীড়া দিয়েছে।

শনিবার ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ইনস্টিটিউট অব ফরেস্ট্রি এন্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সের’ পুণর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, পাহাড় কেটে এভাবে রাস্তা করা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। চট্টগ্রাম শহরের সৌন্দর্য্য হচ্ছে পাহাড়। তাই পাহাড় সংরক্ষণ করে এবং পাহাড়ের অবস্থান বজায় রেখে উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালনা করা উচিৎ। ভবন বানাতে গিয়ে, উন্নয়ন কর্মকান্ড চালাতে গিয়ে যেন পরিবেশ-প্রকৃতি যাতে নষ্ট এবং নান্দনিকতা যেন দৃষ্টিকটু না হয়, সেটি মাথায় রাখতে হবে।

তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশে বনের ভেতরে ও বাইরে গাছের সংখ্যা বেড়েছে। উদাহরণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, আজ থেকে ১১/১২ বছর আগে বাংলাদেশের বৃক্ষাচ্ছাদিত এলাকার পরিমাণ ১৯ শতাংশের নিচে ছিল, এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪ শতাংশের বেশী। গত ১১ বছরে মানুষ বেড়েছে, মানুষের জন্য নতুন বসতি নির্মাণ করতে হয়েছে, শহরগুলোর আকার বেড়েছে, একইসাথে অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়েছে। দুই লেনের রাস্তা চার লেন হয়েছে, শিল্পায়ন হয়েছে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে গাছ লাগানোর প্রস্তাব দিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমার তিন সন্তানের মধ্যে দুই সন্তানের জন্ম হয়েছে বেলজিয়ামে। জন্মের কয়েকদিন পর আমরা পৌর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে চিঠি পেলাম, সেখানে লেখা তোমাদের সন্তানদের নিয়ে অমুক দিন অমুক জায়গায় হাজির হতে হবে। সেখানে একটি গাছ লাগানো হবে এবং একটি নেমপ্লেট দেয়া হবে। সেই গাছটি থেকে যাবে, নেমপ্লেটটিও থেকে যাবে। অর্থ্যাৎ প্রতি সন্তান জন্মলাভের পর সেখানে সন্তানের নামে একটি গাছ লাগানো হয়। সেই গাছটি থেকে যাই। সেটি কাটা হয় না। সে যখন বড় হয়, তখন সে নেমপ্লেট থাকায় গাছটাকে খুঁজে পায়।’

তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষকে অনুরোধ জানান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে যত নবজাতকের জন্ম হবে, তাদের নামে যেন একটি করে গাছ লাগানো হয়, সেজন্য একটি এলাকাকে নির্ধারণ করে এ কাজ করতে হবে। সেক্ষেত্রে ফরেস্ট্রি ডিপার্টমেন্ট সহায়তা করতে পারে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর শিরীন আখতারের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল এস. এম. মতিউর রহমান, নেদারল্যান্ডসে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শেখ মোহাম্মদ বেলাল, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ফরেস্ট্রি এন্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক অধ্যাপক গিয়াস উদ্দিন, ফরেস্ট্রি’র এলামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জসিম উদ্দিন প্রমুখ বক্তৃতা করেন।