প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে গোয়েন্দা প্রতিবেদন , একাধিক চসিক কাউন্সিলর বাদ পড়ছেন!

প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে গোয়েন্দা প্রতিবেদন , একাধিক চসিক কাউন্সিলর বাদ পড়ছেন!
প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে গোয়েন্দা প্রতিবেদন , একাধিক চসিক কাউন্সিলর বাদ পড়ছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক ।।

চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগ নেতা রেজাউল করিমকে আসন্ন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে মনোনয়ন দিয়ে বেশ চমকই দেখিয়েছেন দলটির সভানেত্রী শেখ হাসিনা । এরপর থেকে জল্পনা কল্পনা শুরু হয়েছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ওয়ার্ড গুলোর কাউন্সিলর পদে দলীয় মনোনয়ন কে কে পাচ্ছেন ।

সবাই অপেক্ষায় আছেন কে কে পাচ্ছেন ৪১ টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, সংরক্ষিত কাউন্সলর পদে ১৩ টি পদে দলীয় মনোনয়ন। মেয়র পদে মনোনয়নের হাল ব্যাপক পরিবর্তনের আভাস জানান দিচ্ছে। যেখানে বর্তমান মেয়র নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে আ জ ম নাছির উদ্দিনকে মনোনয়ন দেয়া হয়নি সেখানে বর্তমান কাউন্সিলরদের কেউই আবার মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারছে না।

মনোনয়ন সংক্রান্ত কমিটির সূত্র বলছে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের নির্দেশে চসিক কাউন্সিলরদের বিষয়ে একাধিক গোয়েন্দা রিপোর্ট সংগ্রহ করা হয়েছে। একটি রিপোর্ট একাধিক সূত্রে ভেরিফাই করে চলেছে চুলচেড়া বিশ্লেষণ৷ খোদ প্রধানমন্ত্রী বিতর্কিতদের দলীয় মনোনয়ন না দেয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে মাদক, সন্ত্রাস, জমি-পাহাড় দখল সহ একাধিক বিষয়ে স্থানীয় পর্যায়ে সংগৃহিত গোয়েন্দা প্রতিবেদন ইতিমধ্যে খতিয়ে দেখা হয়েছে৷ সেই সাথে একনেতা একপদ ফর্মূলায় বাদ যেতে পারেন একাধিক ওয়ার্ড কাউন্সিলর। যে সকল কাউন্সিলর অন্যান্য সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ পদে আছে এবং যাদের মেয়াদ এখনো বলবৎ আছে তাদের কাউন্সিলর পদে মনোনয়ন না দিয়ে নতুন কাউকে সুযোগ করে দেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

গতকাল মনোনয়ন সংস্লিষ্ট এলাধিক সূত্র থেকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাধারণ ওয়ার্ড- ১, ৯, ১২, ১৩, ১৪, ১৫, ২০, ২৩, ২৫, ২৮, ৩০, ৩১, ৩৩, ৩৮ নাম্বারে বর্তমান কাউন্সিলরদের পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনার তথ্য মিলেছে। যাদের মধ্যে একজন প্যানেল মেয়রের নাম রয়েছে। ইতিমধ্যে বর্তমান কাউন্সিলর সহ মনোনয়ন প্রত্যাশী ৪০৬ জনের কাছ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাহার ফরমে সাক্ষর নিয়ে রাখা হয়েছে। সেই সাথে বিদ্রোহী প্রার্থী হলে সংগঠন থেকে বহিষ্কারের কথাও জানিয়ে দেয়া হবে।

ইতিমধ্যে মাদক ব্যবসায়ির তালিকায় থাকা অন্তত ৩ জন কাউন্সিলরের নাম বাদ পড়বে। পাহাড় কাটা ও জমি/প্লট দখলের অভিযোগে বাদ পড়ার পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ জানানো হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে। হত্যা ও অস্ত্র মামলায় নাম আসায় বাদ যেতে পারেন দুই কাউন্সিলর। এদিকে সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরদের বিষয়ে নিস্ক্রিয়, জন বিছিন্ন এবং বিতর্কিতদের বাদ দেয়ার স্বিদ্ধান্ত নেয়া হতে পারে বলে আভাস মিলেছে। তবে শেষ মূহুর্তে আবারো নেত্রীর দিক নির্দেশনা মেনেই চূড়ান্ত মননোয়ন দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন মনোনয়ন বাছাই প্রক্রিয়ায় থাকা একাধিক সদস্য।

১৩ নাম্বার পাহাড়তলী ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ হোসেন হিরণ  জানান, মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে অন্য সবার মতন তিনিও আশাবাদি। কিন্তু দল যদি তারচেয়ে তরুণ যোগ্য কাউকে মনোনয়ন দেয় সেক্ষেত্রে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার কোন সুযোগ নেই৷ দল যাকেই মনোনয়ন দেবে তার জন্যে কাজ করবেন বলেও জানান একাধিকবার নির্বাচিত কাউন্সিলর হিরণ।

অন্যদিকে ৩০ নাম্বার পূর্ব মাদারবাড়ি ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাজহারুল ইসলাম নিজের মনোনয় প্রাপ্তির বিষয়ে শতভাগ আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন৷। ২৮ নাম্বার পাঠানটুলি ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল কাদের মনোনয়ন প্রাপ্তির বিষয়টা আল্লাহ ও নেত্রীর ওপর ছেড়ে দিয়েছেন বলে  জানিয়েছেন। তবে ১২ নং সরাই পাড়া ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাবের আহম্মেদ তার সাজানো বাগানে নির্বাচন করবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন। দল যদি তাঁকে প্রয়োজন মনে নাও করে সে ক্ষেত্রেও তিনি নির্বাচনে অংশ নেয়ার ব্যাপারে প্রস্তুত বলেও জানিয়েছেন।

এদিকে চট্টগ্রাম জেলা দুদক সূত্র জানা গেছে বর্তমান কাউন্সিলরদের অনেকেই গত সাড়ে চার বছরে অনেক অর্থবিত্তের মালিক হয়েছে বলে তাদের কাছেও তথ্য আছে। এই বিষয়ে নির্দেশনা পাওয়ার পর আনুষ্ঠানিক অনুসন্ধান শুরু করতে তারা প্রস্তুত আছে। তবে সেটা আসন্ন নির্বাচনের পূর্বে সম্ভব হবে না বলেও জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুদক কর্মমর্তা।