পুরো গ্রীষ্ম রাস্তার লড়াইয়ের পর মার্কিন শ্রমিকরা সাধারণ ধর্মঘটের প্রস্তুতি নিচ্ছে

পুরো গ্রীষ্ম রাস্তার লড়াইয়ের পর মার্কিন শ্রমিকরা সাধারণ ধর্মঘটের প্রস্তুতি নিচ্ছে
পুরো গ্রীষ্ম রাস্তার লড়াইয়ের পর মার্কিন শ্রমিকরা সাধারণ ধর্মঘটের প্রস্তুতি নিচ্ছে

পোস্টকার্ড আন্তর্জাতিক ডেস্ক।।

লক্ষ লক্ষ মানুষ মহামারির কারণে চাকরি হারিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকার তাদের কথা প্রায় ভাবেইনি। ফলে মার্কিন শ্রমজীবীরা ব্যাপক ক্ষুব্ধ। ট্রাম্প প্রতি সপ্তাহে ৪০০ ডলার ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছিলেন (আইন অনুযায়ী সপ্তাহে ৬০০ ডলার দেওয়ার কথা)। সম্প্রতি নিউ ইয়র্কে কাজ হারানো জনগণ ইমেল পেয়েছেন, পূর্বনির্ধারিত রাষ্ট্রীয় সুবিধার বাইরে কোনও অর্থ দেওয়া হবে না। পরবর্তী বিজ্ঞপ্তি পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া মুলতুবি রেখেছে ফেডারেল সরকার। অথচ এখনই  অনেক মানুষের  এই অর্থের জরুরি প্রয়োজন। এই পরিস্থিতিতে মার্কিন সেনেট দেশের শ্রমজীবী ​​মানুষের সহায়তার জন্য কোনও আর্থিক প্যাকেজ পরিকল্পনা না করে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছুটি নিয়েছে। ফলে ব্যাপকভাবে ক্ষুব্ধ মার্কিন শ্রমজীবীরা টুইটারে #জেনারেলস্ট্রাইক পোস্ট দিতে শুরু করে গোটা দেশ জুড়ে।

করোনা মহামারি শুরুর ১ মাসের মাথায় বিভিন্ন শিল্পে শ্রমিক ধর্মঘট হয়। সেখানকার খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, বর্জ্যপদার্থ এবং সাফাই কর্মচারী, আমাজনের কর্মীরা দফায় দফায় ধর্মঘট করেন। জর্জ ফ্লয়েডের রাষ্ট্রীয় হত্যার পর গোটা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার আন্দোলন জঙ্গি রূপ নেয়। বর্ণবিদ্বেষ এবং কোভিড মহামারি, দুইয়ে জেরবার শ্রমিক শ্রেণির একটা বড়ো অংশ বেশ কয়েকটি ধর্মঘট করে। বিমানবন্দর কর্মচারী, ট্যাক্সি চালক,গৃহকর্মী, নার্সিং হোম কেয়ারগিভার এবং মধ্যবিত্ত শিক্ষক এবং নার্সদের পাশাপাশি উচ্চ বেতনের গুগল ইঞ্জিনিয়াররা পর্যন্ত সামিল হয়েছিলেন ধর্মঘটে।

জর্জ ফ্লয়েডের নির্মম হত্যার পর দেশের নানা শহরে জঙ্গি বিক্ষোভ শুরু হয়। ৭০ দিনেরও বেশি সময় ধরে অক্লান্ত ভাবে লড়ে চলেছে পোর্টল্যান্ডের জনগণ। সেখানকার বিক্ষোভকারীরা গত ১৮ জুলাই পোর্টল্যান্ড পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনে আগুন ধরিয়ে দেয়। এর পাশাপাশি তারা স্থানীয় আদালত আক্রমণ করার চেষ্টা  করে এবং পাথর, আতশবাজি এবং স্মোক বোমা দিয়ে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর ওপর হামলা চালায়। পরিস্থিতি সামলাতে ট্রাম্প পোর্টল্যান্ডে টাস্ক ফোর্স মোতায়েন করে। ‘টাস্ক ফোর্সের’ নামে আমেরিকার সীমান্ত রক্ষা বাহিনীর একটি দল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ডেলিগেট সার্ভিসের (ইউএস মার্শাল নামে পরিচিত) এজেন্টরা  বিক্ষোভকারীদের ওপর নির্বিচারে সামরিক অস্ত্র ব্যবহার করে চলেছে।

সব মিলিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সাধারণ ধর্মঘটের সম্ভবনা প্রকট হয়ে উঠছে। বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলন যখন তীব্র আকার ধারণ করেছিল, তখন থেকেই সে দেশের প্রগতিশীল শক্তিগুলি মনে করছিল, আন্দোলনকে পরের ধাপে নিয়ে যেতে দেশজোড়া সাধারণ ধর্মঘটের প্রয়াস নেওয়া দরকার। তা যদি শেষ পর্যন্ত সম্ভব হয়, সেটা হবে এক ঐতিহাসিক ঘটনা। কারণ, শেষবার ১৯৩৪ সালে মার্কিন ইতিহাসে বৃহত্তম সাধারণ ধর্মঘট হয়েছিলো।