পবিত্র আশুরা আজ

পোস্টকার্ড ডেস্ক ।।

পবিত্র আশুরা আজ
পবিত্র আশুরা আজ
পবিত্র আশুরা আজ। ১৪৪১ হিজরি সনের দশম দিন। বিশ্ব মুসলিম জাতির জন্য তাৎপর্যময় ও অবিস্মরণীয় এ দিন। ইসলামপূর্ব যুগেও এই দিনকে অনেক মর্যাদাপূর্ণভাবে পালন করা হতো। সৃষ্টির সূচনা থেকে এই দিনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যময় ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। বিশেষ করে হিজরি ৬১ সনের ১০ মহররম মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দৌহিত্র হজরত হোসাইন (রা.) ও তার পরিবার এবং অনুসারীরা সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে যুদ্ধ করতে গিয়ে ফোরাত নদীর তীরে কারবালা প্রান্তরে নির্মমমভাবে ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে শহীদ হন। যা ইসলামের ইতিহাসে এক মর্মান্তিক ও বেদনাবিধুর ঘটনা।
 
কারবালার এই ঘটনাকে স্মরণ করে বিশ্বের মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা যথাযোগ্য মর্যাদায় আশুরা দিবস পালন করে থাকে। শান্তি ও সম্প্রীতির ধর্ম ইসলামের মহান আদর্শকে সমুন্নত রাখতে তাদের এই আত্মত্যাগ মানবতার ইতিহাসে সমুজ্জ্বল রয়েছে। কারবালার শোকাবহ এই ঘটনা অর্থাৎ পবিত্র আশুরার শাশ^ত বাণী সবাইকে অন্যায় ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে এবং সত্য ও সুন্দরের পথে চলতে প্রেরণা যোগায়।
পবিত্র আশুরা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। আশুরা উপলক্ষে আজ সরকারি ছুটি ঘোষিত হয়েছে। জাতীয় দৈনিক পত্রিকার অফিসও আজ বন্ধ থাকবে।
 
আশুরা উপলক্ষে রাজধানী ঢাকাসহ দেশব্যাপী বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। বিশেষ করে শিয়া সম্প্রদায়ের লোকদের উদ্যোগে আজ হোসনি দালানসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় তাজিয়া মিছিল বের হবে। ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া পবিত্র আশুরা উপলক্ষে তাজিয়া শোক মিছিলে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন। এ ছাড়াও এ বছর তাজিয়া মিছিলে ঢোল বাজিয়ে ছুরি, তলোয়ার ও লাঠিখেলা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ডিএমপি কমিশনার ইতোমধ্যেই জানিয়েছেন, নিরাপত্তার স্বার্থে এসব নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তাজিয়া মিছিলে ১২ ফুটের বেশি বড় নিশান, ব্যাগ, পোঁটলা, টিফিন ক্যারিয়ার বহন এবং আগুনের ব্যবহার করা যাবে না। মাঝপথে কেউ মিছিলে অংশ নিতেও পারবেন না বলে তিনি উল্লেখ করেন।

এদিকে আশুরা উপলক্ষে সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) বাদ জোহর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ‘আশুরার তাৎপর্য ও শিক্ষা’ শীর্ষক ওয়াজ ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। মাহফিলে ওয়াজ পেশ করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম মাওলানা মুহাম্মদ মিজানুর রহমান। এতে সভাপতিত্ব করেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের দীনী দাওয়াত ও সংস্কৃতি বিভাগের পরিচালক আনিছুর রহমান সরকার।মাহফিলে আশুরার তাৎপর্য তুলে ধরে বলা হয়, আশুরার দিবসে নবী করিম (সা.) রোজা পালনের জন্য বলেছেন এবং এই রোজার বিনিময়ে গত এক বছরের গুনাহ মাফ করে দেবেন। তবে ইহুদিদের অনুকরণ যেন না হয় সে জন্য অতিরিক্ত আরও একটি রোজা রাখার জন্য বলেছেন। নবী করিম (সা.) তার উম্মতদের এই দিনে গুরুত্বসহকারে ইবাদত-বন্দেগি, জিকির ও নফল ইবাদতের মাধ্যমে বরকত হাসিলের আহ্বান জানান।

আশুরার মূল চেতনা হলো চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ত্যাগ ও কোরবানির মাধ্যমে সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম। তাই মুসলমানদের নিজেদের মধ্যে হানাহানি ও বিভেদ ভুলে কারবালার ত্যাগের মহিমায় পরিশুদ্ধ হয়ে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় ঐক্যের তাগিদ দেয় আশুরা।