নবী করিম (দ.)-এর দৈহিক সৌন্দর্য

নবী করিম (দ.)-এর দৈহিক  সৌন্দর্য

কানিজ সুমাইয়া।।

নবী রাসুলে আরাবি (দ.) ছিলেন অসামান্য সৌন্দর্যমণ্ডিত এক অসাধারণ ব্যক্তিত্ব। পৃথিবীর কোনো মানুষের সঙ্গেই যার তুলনা নেই। তিনি ছিলেন সর্বগুণে গুণান্বিত এবং সর্বপ্রকার চরিত্রে বিভূষিত এমন এক ব্যক্তি যার সংশ্রবে আসা ব্যক্তি মাত্রই তার প্রতি শ্রদ্ধায় পরিপূর্ণ হয়ে যেত।
রাসুলের দৈহিক গঠনও ছিল তুলনাহীন। তার মুখমণ্ডল ছিল প্রশস্ত। (মুসলিম : ২/২৫৮)। শারীরিক গঠন ছিল মাঝারি গড়নের। (বুখারি : ১/ ৫০২)। দীর্ঘ পলক বিশিষ্ট, সুরমা সুশোভিত আঁখি যুগল ছিল। হজরত যাবের বিন সামুরা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (দ.)-এর চক্ষুদ্বয় ছিল সুরমা বর্ণের, দেখে মনে হতো তিনি সুরমা ব্যবহার করেছেন। অথচ প্রকৃতপক্ষে তিনি সুরমা ব্যবহার করেননি। (তিরমিজি : হাদিস ৩৬৪৫)।
তার চোখের পাতা ছিল লম্বাটে গড়নের। পরস্পর সন্নিবেশিত চিকন ভ্রু যুগল। কালো কুচকুচে কেশরাশি। (যাদুল মাআদ ২/৫৪; র্আরাহিকুল মাখতুল : পৃ. ৮৫৭)। অন্য এক বর্ণনায় এসেছে তার চুলগুলো অতিরিক্ত কোঁকড়ানো ছিল না, কিংবা একেবারে সোজা খাড়াও ছিল না; বরং এ দুয়ের সমন্বয়ে ছিল এক চমৎকার গঠনশৈলী বিশিষ্ট। তার গণ্ডদেশে মাংস বাহুল্য ছিল না। গায়ের রঙ ছিল গোলাপি ও বাদামির সংমিশ্রণে। দাড়ি মোবারক ছিল ঘন সন্নিবেশিত।
প্রশস্ত ললাট। হাতের কবজিদ্বয় কিছুটা বড় আকারের, হাতের তালুদ্বয় ছিল প্রশস্ত ও সোজা এবং পায়ের পাতাও প্রশস্ত। আঙুলগুলো কিছুটা বড় সর আকারের ছিল। চলার সময় তিনি সামনের দিকে কিছুটা ঝুঁকে চলতেন। (খুলাসাতুস সিয়ার : ১৯-২০)
হজরত আলী (রা.) বলেন, ‘তিনি অতি লম্বা অথবা খাটো কোনোটিই ছিলেন না। তিনি ছিলেন এ দুয়ের সমন্বয়ের অত্যন্ত মানানসই মধ্যম দেহীর পুরুষ। তার কাঁধের হাড়গুলো ছিল বড় আকারের এমনকি তাঁর দুই কাঁধের মধ্যবর্তী স্থানে ছিল ‘মহরে নবুওয়াত’। বুকের উপরিভাগ থেকে নাভি পর্যন্ত ছিল স্বল্প পশমবিশিষ্ট হালকা বক্ষরেখা। শরীরের অন্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ছিল কেশমুক্ত। তবে হাতের কবজি এবং কাঁধের ওপর পশম ছিল। (সিরাত ইবনে হিশাম : ১/৪০১-৪০২)
হজরত জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি এক চাঁদনি রাতে নবী কারীম (দ.)-কে দেখলাম তাঁর ওপর রক্তিম আভা ছড়ানো ছিল আমি তখন একবার রাসুলুল্লাহ (দ.)-এর দিকে এবং আরেকবার চাঁদের দিকে তাকিয়ে দেখছিলাম। শেষ পর্যন্ত আমি এ সিদ্ধান্তে উপনীত হলাম যে, চাঁদের চেয়েও তিনি অধিক সুন্দর।’ (শামায়েলে তিরমিজি : পৃ ২)