ডলার বাজারে প্রভাব পড়েছে ক্যাসিনো বিরোধী অভিযান

নিউজ ডেস্ক ।।

ডলার বাজারে প্রভাব পড়েছে ক্যাসিনো বিরোধী অভিযান

ক্যাসিনোসহ বিভিন্ন অবৈধ কার্যক্রমের বিরুদ্ধে অভিযান শুরুর পর দেশে ডলারের চাহিদা অনেক বেড়ে গেছে। এর প্রভাব পড়েছে ডলার মার্কেটে। বিশেষ করে কার্ব মার্কেটে হু হু করে বাড়ছে ডলারের দাম। সে তুলনায় সরবরাহ কম বলে জানান মানি এক্সচেঞ্জাররা। বাংলাট্রিবিউন
কার্ব মার্কেটে ডলারের এই মূল্যবৃদ্ধি হুন্ডির প্রবণতা বাড়াচ্ছে, যা প্রকারান্তরে রেমিটেন্স প্রবাহে প্রভাব ফেলবে, বলছেন অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, অবৈধ অর্থ অর্জনকারীরা টাকাকে ডলার করে বিদেশে পাচার করছে। এতে করে দেশে ডলারের চাহিদা প্রতিদিন বাড়ছে। ফলে প্রবাসী আয় (রেমিট্যান্স) ব্যাংকিং চ্যানেলে না এসে হুন্ডিতে আসার আশঙ্কা করছেন তারা। তাই ডলার কেনাবেচার ওপর নজরদারির কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা। কয়েকটি ব্যাংক, মানিচেঞ্জার এবং কার্ব মার্কেটে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ১০-১৫ দিন ধরে ডলারের চাহিদা কয়েক গুণ বেড়েছে। ঢাকার বাজারে কোথাও প্রতি ডলার ৮৭.১০ টাকা, কোথাও ৮৭ আবার কোথাও ৮৬.৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। চট্টগ্রামে প্রতি ডলার বিক্রি হচ্ছে ৮৭.৬০ থেকে ৮৮ টাকা পর্যন্ত।
বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারিত আন্তঃব্যাংক ডলার লেনদেনের রেট ৮৪.৫০ টাকা। সেখানে স্প্রেড ১ থেকে ১.৫০ টাকা বেশি নিয়ে মানিচেঞ্জার বা কার্ব মার্কেট বেচলে দাম পড়ে ৮৫.৫০ টাকা বা সর্বোচ্চ ৮৬ টাকা। কিন্তু কার্ব মার্কেটে বর্তমানে ৮৭.১০ থেকে ৮৮ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে ডলার।
প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযানে সম্প্রতি বিভিন্ন ব্যক্তির বাসা ও অফিস থেকে দেশি-বিদেশি নগদ অর্থ, সোনা, মদ জব্দ করেছে র‌্যাব। অভিযান আরও চলবে বলে জানিয়েছে সরকার ও সংশ্লিষ্ট বাহিনী।
এই অভিযান থেকে বাঁচতে সন্দেহভাজনরা কেউ কেউ বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছেন, কেউবা অর্থ পাচারের চেষ্টা করছেন, আবার কেউ ভার কমাতে অবৈধ টাকাকে ডলারে রূপান্তরের চেষ্টা করছেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের সেপ্টেম্বর মাসে রেমিটেন্স এসেছে ১৪৬ কোটি ৮৪ লাখ মার্কিন ডলার, যা এর আগের মাসের চেয়ে ১ কোটি ৪৪ লাখ মার্কিন ডলার বা ১২২ কোটি টাকা কম। আগস্ট মাসে রেমিটেন্স এসেছিলো ১৪৮ কোটি ২৮ লাখ মার্কিন ডলার।
হঠাৎ করে নগদ ডলারের চাহিদা বাড়ার কারণে দাম বেড়েছে বলে জানান মানিচেঞ্জার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি মোস্তফা খান। তিনি বলেন, ‘তবে চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ কম। দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযানের কারণে অনেকে নগদ ডলার কিনে থাকতে পারেন, আবার হুন্ডি বেড়ে যাওয়াও এর কারণ হতে পারে। আবার দেশের বাইরে থেকে যে নগদ ডলার আসে, তার সরবরাহ ব্যাপক কমে গেছে।’ এসব মিলিয়ে ডলারের দর বাড়তির দিকে বলে মনে করেন তিনি।
ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন মনে করেন এ ব্যাপারে সরকারের নজরদারি বাড়ানো উচিত। তিনি বলেন, ডলারের দাম বেড়ে গেলে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন আমদানিকারকরা। একই সঙ্গে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে মূল্যস্ফীতিতে। এটি মোকাবেলায় বাংলাদেশ ব্যাংককে আরও ডলার ছেড়ে ভারসাম্য আনতে হয়।