চট্টগ্রামের অধিকাংশ আ. লীগ প্রার্থী উচ্চশিক্ষিত, একজন স্বশিক্ষিত

চট্টগ্রামের অধিকাংশ আ. লীগ প্রার্থী উচ্চশিক্ষিত, একজন স্বশিক্ষিত
চট্টগ্রামের অধিকাংশ আ. লীগ প্রার্থী উচ্চশিক্ষিত, একজন স্বশিক্ষিতচট্টগ্রামের অধিকাংশ আ. লীগ প্রার্থী উচ্চশিক্ষিত, একজন স্বশিক্ষিত

রাজনৈতিক ডেস্ক ।।

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামের ১৬টি আসনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অধিকাংশ প্রার্থীই উচ্চশিক্ষিত। তাদের মধ্যে দুজনের রয়েছে পিএইচডি ডিগ্রি। একজন স্নাতকোত্তর। এমএ ডিগ্রি আছে দুজনের। তিনজন এমবিএ, বিবিএ একজন, বিএ দুজন এবং বিকম পাশ করেছেন একজন। বাকি দুই প্রার্থীর একজন এইচএসসি পাশ এবং অন্যজন স্বশিক্ষিত।তবে এক প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতার তথ্য জানা যায়নি এখনো।

ড হাছান মাহমুদ , পিএইচডি ডিগ্রি

চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া-বোয়ালখালী) আসনে আওয়ামী লীগের তিনবারের এমপি ড. হাছান মাহমুদ। এবারও নৌকার মাঝি হয়েছেন তিনি। তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ চট্টগ্রামে শিক্ষাক্ষেত্রে দলীয় মনোনয়ন পাওয়া অন্য সব প্রার্থী থেকে এগিয়ে আছেন। পেশায় ব্যবসায়ী ও শিক্ষক এই সংসদ সদস্য ২০০১ সালে বেলজিয়ামের লিম্বুর্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরিবেশ রসায়ন বিষয়ে ‘পিএইচডি ডিগ্রি ’ অর্জন করেন।

ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী, পিএইচডি

২০১৪ সালে প্রথম বারের মত চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনে ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী আওয়ামী লীগের নৌকার টিকিট পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০১৮ সালেও ফের দলীয় মনোনয়ন পেয়ে এমপি হন তিনি। আবারও টানা তৃতীয় বারের মত আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাকে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। পেশায় শিক্ষক এই এমপি শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন, ‘এমএ (পাস) ও পিএইচডি’।

ফজলে করিম, এমএ পাশ

রাউজান উপজেলা নিয়ে গঠিত চট্টগ্রাম-৬ আসন। আসনটিতে নৌকার মাঝি হয়ে চারবার এমপি নির্বাচিত হয়েছেন এ বি এম. ফজলে করিম চৌধুরী। তিনি চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্বও পালন করেন। এবারও দলীয় সভানেত্রীর ভরসার হাত তার কাঁধেই। হলফনামার তথ্যে ‘এমএ’ পাস উল্লেখ করা এই আওয়ামী লীগ নেতাও পেশায় ব্যবসায়ী। 

ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ , বিবিএ 

চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা-কর্ণফুলী) আসন থেকে টানা তৃতীয়বার আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়ে হ্যাট্রিকের পথে হাঁটছেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ। এর আগে ২০১৪ ও ২০১৮ এর নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। হলফনামায় পেশা হিসেবে ব্যবসা উল্লেখ করা এই প্রার্থী সম্পন্ন করেছেন ‘বিবিএ’। 

ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা 

চট্টগ্রাম–৯ (কোতোয়ালী-বাকলিয়া) আসনে এবারও আওয়ামী লীগের প্রার্থী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। তিনি শিক্ষা উপমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। এই নেতার শিক্ষাগত যোগ্যতা ‘ স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা’। 

এস এম আল মামুন , এমবিএ

আসন্ন সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে সীতাকুণ্ড উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ ত্যাগ করে চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনে এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন এস এম আল মামুন। প্রথমবারের মতো মনোনয়ন পাওয়া এই প্রার্থী সম্পন্ন করেছেন ‘এমবিএ’।

খাদিজাতুল আনোয়ার সনি, এমবিএ 

আগামী নির্বাচন জোটবদ্ধ নাকি দলীয়ভাবে হবে, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবু চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনে এবার দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। এই আসন থেকে নৌকার মাঝি হয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য রফিকুল আনোয়ারের মেয়ে ও সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য খাদিজাতুল আনোয়ার সনি। পেশায় ব্যবসায়ী এ প্রার্থী শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন ‘এমবিএ’।  ওই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ১৪ দলীয় জোটের অন্যতম তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী। 

মাহবুব উর রহমান রুহেল, এমবিএ 

চট্টগ্রাম-১ (মিরসরাই) আসন থেকে এবার নৌকার টিকিট পেয়েছেন সাতবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের ছেলে মাহবুব উর রহমান রুহেল। হলফনামার তথ্য অনুযায়ী, পেশায় ব্যবসায়ী রুহেল  ‘এমবিএ’ সম্পন্ন করেছেন।

মাহফুজুর রহমান মিতা, বাণিজ্যে স্নাতক ডিগ্রি 

সন্দ্বীপ উপজেলা নিয়ে গঠিত চট্টগ্রাম-৩ আসন থেকে চতুর্থবারের মতো মনোনয়ন পেয়েছেন মাহফুজুর রহমান মিতা। তিনি এমপি নির্বাচিত হয়েছেন দুবার। এবার নৌকাকে জিতিয়ে এমপি হিসেবে হ্যাট্রিক করতে চান তিনি। পেশায় ব্যবসায়ী এই সংসদ সদস্যের শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে হলফনামায় উল্লেখ রয়েছে, ‘বাণিজ্যে স্নাতক বা বিকম পাস’। 

নোমান আল মাহমুদ, এইচএসসি পাশ

২০১৮ সালে (একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন) চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে তৃতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা জাসদ নেতা মঈন উদ্দীন খান বাদল। এক বছরের মাথায় তাঁর মৃত্যুর পর ২০২০ সালের জানুয়ারিতে উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ। তিন বছরেরও বেশি সময় দায়িত্ব পালনের পর তিনিও চলে যান না ফেরার দেশে। এরপর চলতি বছরের এপ্রিলে ওই আসনের উপ-নির্বাচনে দলীয় মনোয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও নগর যুবলীগের সাবেক সভাপতি নোমান আল মাহমুদ। ওই উপ-নির্বাচনে আট মাসের জন্য দায়িত্ব পাওয়া এই এমপি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও পেয়েছেন দলীয় মনোনয়ন। তাঁর হলফনামায় শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে তিনি উল্লেখ করেছেন ‘এইচএসসি পাস’।

এম এ লতিফ , লেদার টেকনোলজিতে ডিপ্লোমা 

২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে টানা তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন এম এ লতিফ। যদিও তার বিরুদ্ধে জামায়াত-প্রীতি এবং দলের নেতাকর্মীদের সাথে সমন্বয়হীনতাসহ অনেক অভিযোগ চাউর হয়েছিলো একাধিকবার। এবারও অনেকটা সবাইকে তাক লাগিয়ে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন এই ব্যবসায়ী নেতা।  হলফনামায় তার শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে উল্লেখ আছে, ‘লেদার টেকনোলজি’তে ডিপ্লোমা করেছেন তিনি।

মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী , এমএ পাশ

কখনো মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের অবমাননা, কখনো নির্বাচনী কর্মকর্তাকে মারধর, কখনো অস্ত্র প্রদর্শন, কখনো দলের সাধারণ সম্পাদককে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য আবার কখনো সাংবাদিক পিটিয়ে  খবরের শিরোনাম হয়েছেন চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী। এবারও তিনি মনোনয়ন পেয়েছেন। বিতর্কিত এই এমপি হলফনামায় শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে উল্লেখ করেছেন ‘এমএ’। পেশায় তিনি একটি ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির পরামর্শক।

মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, ‘বিএ (পাস)’

চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনে পরপর দুইবার নৌকার টিকেট পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া সামশুল হক চৌধুরী এবার দলীয় মনোনয়ন পাননি। ওই আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী করেছে পটিয়া উপজেলার সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরীকে। মোতাহেরুল দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বেও আছেন। হলফনামায় পেশা হিসেবে ব্যবসায়ী উল্লেখ করা এই নেতার শিক্ষাগত যোগ্যতা ‘বিএ (পাস)’।

মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী, বিএ পাশ 

চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ) আসন থেকে হ্যাট্রিকের পথে মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি ২০১৪ ও ২০১৮ এর নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। এবারও দল ভরসা করেছে তার উপর।  ব্যবসায়ী এই প্রার্থী তার হলফনামায় শিক্ষাগত যোগ্যতার ঘরে লিখেছেন ‘বিএ (পাস)’।

মহিউদ্দিন বাচ্চু স্বশিক্ষিত

চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং-পাহাড়তলী-হালিশহর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ডা. আফছারুল আমীনের মৃত্যুর পর উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন মহিউদ্দিন বাচ্চু। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন তিনি। মহিউদ্দিন বাচ্চু নির্বাচন কমিশনে নিজের আয়-ব্যয়, সম্পত্তি, ঋণ-সংক্রান্ত জমা দেওয়া হলফনামায় নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতা উল্লেখ করেছেন- ‘স্বশিক্ষিত’। 

এম এ সালাম, শিক্ষাগত যোগ্যতার তথ্য জানা যায়নি

চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এম এ সালামের হলফনামায় থাকা শিক্ষাগত যোগ্যতার তথ্য জানা যায়নি।

খালেদ / পোস্টকার্ড ;