উইমেনস এসএমই মেলা জমে উঠেছে ছুটির দিনে

উইমেনস এসএমই মেলা জমে উঠেছে ছুটির দিনে
উইমেনস এসএমই মেলা ছুটির দিনে জমে উঠেছে

মরিয়ম জাহান মুন্নী ।।

চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিতব্য ১৩তম আন্তর্জাতিক উইমেন’স এসএমই মেলা সাপ্তাহিক ছুটির দিনে জমে উঠেছে । বেড়েছে বিক্রিও। শুরুতে লোক সমাগম কম হলেও গতকাল শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে মেলায় ছিল উপচে পড়া ভিড়। দৈনন্দিন ব্যবহার্য পণ্য থেকে শুরু করে ঘর সাজানোর সামগ্রী, পাট-বাঁশ-বেতের পণ্য, লোহার সামগ্রী, মাটির পণ্য, নারীদের শাড়ি, চুড়ি, কানের দুল, ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী, শীতকালীন পোশাকসহ বাহারি সব জিনিসের পসরা স্টলগুলোতে।

গতকাল সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, পলোগ্রাউন্ডে জমকালো আলোতে সেজেছে ১৩তম আন্তর্জাতিক উইমেন’স এসএমই এক্সপো-১৯। দেশি স্টলের পাশাপাশি জমে উঠেছে বিদেশি প্যাভিলনও। মেলা দেখতে পরিবার নিয়ে ভিড় করছে অনেকেই। আবার মা-বাবার হাত ধরে আসছে শিশুরাও। গেট দিয়ে মেলায় ঢুকলেই শুরুতে চোখে পড়ে ছেলেদের স্যুটের দোকান। নানা ডিজাইনের এ স্যুট-কোটগুলো ১৫শ’ টাকা থেকে শুরু করে ৩২শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশের দোকানটি প্লাস্টিক সামগ্রীর। আকারভেদে প্লাস্টিক পণ্যের দাম ১শ’ থেকে ৫শ’ পর্যন্ত হাঁকাচ্ছে বিক্রেতারা। তবে ক্রেতারাও যাচাই করে কিনছেন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। আছে ফুলের ঝাড়–, শলার ঝাড়ু যাতে বাঁধাইয়েও রয়েছে রকমফের। তার উপর নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে দাম। কোনটার জোড়া ১শ টাকা, কোনটা ১২০, আবার কিছু কিছু ১৫০ টাকা জোড়ায় বিক্রি করছে বিক্রেতারা।

আরেকটু সামনে গেলেই চোখে পড়ে সাজিয়ে রাখা জামদানি শাড়ি আর ইন্ডিয়ান থ্রি-পিসের দোকান। এই শাড়ি ও থ্রি-পিসের দাম ৫শ থেকে ১০ হাজার টাকা। আছে কাঠের তৈরি রকমারি খেলনা, একতারা ও পুতুলের দোকান। পুতুল, খেলনা, বাঁশি ও একতারাগুলোর আকার ভেদে ভিন্ন ভিন্ন দামে বিক্রি হচ্ছে। একটি একতারা ৮০ থেকে ২শ’ টাকা পর্যন্ত। পুতুল ১শ’ থেকে ৩ হাজার টাকারও আছে। বাঁশির দাম ১০ টাকা থেকে ৫শ’ টাকা পর্যন্ত। এরপরেই চোখে পড়ে নানারকম ঘর সাজানোর ফুল। সঙ্গে বিক্রি হচ্ছে ফুলের টব। তবে ফুলের দাম আকাশ ছোঁয়া। দাম ১শ’ টাকা থেকে হাজারের উপরে। আছে ফুচকা, চটপটি, চিকেন গ্রিল ও বিরিয়ানি নিয়ে খাবারের দোকান। আরো আছে মিঠা মাখানো খই-মুড়ি, সন্দেশ, গজা, বুট, জিলাপি, তিলের নাড়–, খইয়ের নাড়–সহ বিভিন্ন ধরনের বিস্কুট। এর পাশেই পাওয়া যাচ্ছে লোহার তৈরি নানা জিনিসপত্র। বিভিন্ন ধরণের দা, বটিসহ নানা রকমের ব্যবহার্য জিনিস। আকারভেদে দাম ৪শ’ থেকে হাজার টাকা। আরেকটু ভেতরে গেলেই দেখা যায় মাটির তৈরি খেলনাসামগ্রী, বিভিন্ন আকারের টব, আয়না, ওয়ালমেট, কলমদানি, চায়ের কাপ, ভাতের থালা, গ্লাসসহ রকমারি পণ্য। শীতল পাটি, ফুল পাটিসহ বাহারি পাটি বোঝাই করে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসেছেন বিক্রেতারা। শীতল পাটির দাম আড়াই হাজার থেকে শুরু করে হাজার টাকা পর্যন্ত।

বিক্রেতারা বলেন, প্রথম দিকে তেমন ক্রেতা ছিলনা। তবে আজ বন্ধের দিন হওয়া মেলা জমে উঠে।

মেলায় স্ত্রী তাহমিনা আক্তার ও মেয়েকে নিয়ে ঘুরতে আসেন মো. ইনঞ্জিনিয়র তৈহিদুল ইসলাম। তাদের সাথে কথা বলে জানা যায় মিরারসরাই থেকে এসেছেন মেলায়। প্রায় দুই ঘন্টা ধরে বিভিন্ন জিনিস দেখছে ও কিনছেন। কিন্তু তারা বলেন, মেলায় জিনিসপত্রের দাম অনেক বেশি। যেগুলো বাইরে ১শ টাকা, সেগুলো এখানে ৪শ থেকে ৫শ টাকা দামে বিক্রি করছে।

আন্তর্জাতিক উইমেন’স এসএমই এক্সপোর চেয়ারপার্সন ডা. মুনাল মাহবুব বলেন, মেলায় ছোট-বড় প্রায় ৩০টি স্টল এবং ১৫টি প্যাভেলিয়ন আছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনের উদ্যোক্তারাও মেলায় অংশগ্রহণ করেছে। এবছর বিদেশি জোনগুলোর মধ্যে আছে বাহারাইন, কাতার, মধ্যপ্রাচ্য, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ভারত, পাকিস্থানসহ বিভিন্ন দেশের বিপুলসংখ্যক দোকান। এই দোকানগুলোর মধ্যে আছে ভারতীয় জুতা, গহনা, শাড়ি ও কসমেটিক্সের দোকান, পাকিস্থানি শাড়ি ও থ্রি-পিসের দোকান। বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিকের দোকনও আছে। মেলার শেষ প্রান্তে আছে শিশুদের বিনোদনের জন্য আকর্ষণীয় বিনোদন পার্ক।