অপু বিশ্বাস ও নাজমার উপর বিরক্ত প্রধানমন্ত্রী, প্রশ্ন - কেনো এসেছো?

অপু বিশ্বাস ও নাজমার উপর বিরক্ত প্রধানমন্ত্রী, প্রশ্ন - কেনো এসেছো?

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুব মহিলালীগের সভাপতি নাজমা আকতার ও সাধারণ সম্পাদক অপু উকিলের ওপর বিরক্তি প্রকাশ করেছেন । পাপিয়াকাণ্ড প্রকাশের পর বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তারা সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি তাদের প্রতি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।

দলীয় পদ-পদবি ব্যবহার করে নানা অপকর্মের ব্যাপারে জিরো টলারেন্স নীতি সরকারপ্রধানের। এজন্য যুব মহিলালীগেও শুদ্ধি অভিযান চালানোর নির্দেশ দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, আমি কাউকে ছাড়ব না। খুঁজে খুঁজে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের সময় যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আকতার ও সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল ছাড়াও চট্টগ্রামের এমপি এম আবদুল লতিফ, মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী ঝুমু ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী কৃষিবিদ মশিউর রহমান হুমায়ুন উপস্থিত ছিলেন।

গণভবন সূত্র জানায়, দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষাৎ পেতে বেশ কিছুক্ষণ সময় নিতে হয় যুব মহিলা লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে। প্রধানমন্ত্রী যখন নিচে আসেন তখন তারা ভয়ে ভয়ে গিয়ে দলীয় সভানেত্রীকে সালাম দেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের কাছে জানতে চান কেন এসেছো? জবাবে যুব মহিলা লীগের দুই নেত্রী বলেন, নেত্রী আপনি সব জানেন। আমরা সংগঠনের ভাবমূর্তিটা ধরে রাখতে পারলাম না। এখন আমাদের করণীয় কী? আপনি যে নির্দেশ দেবেন, আমরা তা-ই করব। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তোমরা সংগঠনের নেতৃত্বে আছ। কে কোথায় কী করছে তার খবর রাখতে হবে। এক শ্রেণির লোক সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষু্ণ্ন করে চলেছে। তাহলে তোমাদের সংগঠনের প্রতি দায় কোথায়? সচেতনতা কোথায়? তোমাদের খোঁজখবর রাখা উচিত ছিল। শুধু একজন পাপিয়াই জড়িত নয়, এ ঘটনায় আরও অনেকেই জড়িত। তাদের ব্যাপারেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। এ সময় নাজমা ও অপু উকিল প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, আপা পাপিয়াকে এত টাকা কারা দিল? একটি হোটেলে থাকা ও খরচ বহনের টাকা কোথায় পেল? এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের ব্যাপারেও খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। তারাও রেহাই পাবে না। আমি এরই মধ্যে তাদের সন্ধান করতে নির্দেশ দিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, কারা কী করছে সব তথ্য আমার কাছে আসছে। অনেকের নাম এসেছে। আমি কাউকে ছাড়ব না। ঢাকায় কোথায় কে কী করছে, সব তথ্য আমার কাছে আছে। একজনও ছাড় পাবে না।

এ সময় সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে সারা দেশের সংগঠনের নেত্রীদের ব্যাপারে খোঁজখবর নিতে বলেন। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, সারা দেশে খোঁজখবর নাও। ছাকনি দিয়ে ছেকে নাও। সংগঠনের ইমেজ উদ্ধার করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার সত্যতা নিশ্চিত করে যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আকতার ও সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল বলেন, বিকালে আমরা দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করি। তাঁর কাছে বর্তমান পরিস্থিতিতে আমাদের করণীয় কী সে পরামর্শ চাই। এ সময় প্রধানমন্ত্রী আমাদের সংগঠনের সারা দেশের নেত্রীদের ব্যাপারে খোঁজখবর নিতে বলেছেন। একই সঙ্গে ঢাকায় কে কোথায় কী করছেন সব তথ্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আছে বলে জানান।