হাইওয়ে পুলিশের দুর্বল ভুমিকায় সীতাকুন্ডের ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কে অঘোষিত পার্কিং

হাইওয়ে পুলিশের দুর্বল ভুমিকায় সীতাকুন্ডের ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কে অঘোষিত পার্কিং

এস.এম.পিন্টু ও নাঈম আহমেদ ।।

ঢাকা - চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুন্ড ও মিরসরাই অংশে স্থাপিত বিভিন্ন শিল্প কারখানার পন্য আনা নেওয়ার কাজে ব্যবহৃত ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও লড়িগুলো এমনভাবে রাস্তার উপর পার্কিং করে রাখে দেখলে বুঝার উপায় নেই যে এটি হাইওয়ে সড়ক নাকি কারখানা মালিকদের অঘোষিত পার্কিং টার্মিনাল। এই অবৈধ পার্কিং এর ফলে হাইওয়ে রোডে গাড়ি চলাচলে মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হয় বলে জানিয়েছেন ঢাকা চট্টগ্রাম রুটের একাধিক বাস চালক ও স্থানীয়রা।

হাইওয়ে পুলিশের দুর্বল ভুমিকাই এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী বলেও মনে করছেন তারা।  তারা বলেন কারখানার চালকগুলো কোন নিয়ম নীতি মানেনা নিজেদের খেয়াল খুশিমত গাড়ি পার্কিং ও সিগনাল ছাড়াই হঠাৎ গাড়ি নিয়ে রাস্তায় উঠে আসে এর ফলে দ্রুত গতির গাড়িগুলো কন্ট্রোল করতে মারাত্মক সমস্যা হয়ে থাকে মাঝে মাঝে কন্ট্রোলের বাইরে গিয়ে দুর্ঘটনাও ঘটে। ঢাকা চট্টগ্রাম রুটে দুর্ঘটনার অনুপাত হিসেবে দেখা যায় সড়ক দুর্ঘটনা ও দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা সীতাকুন্ডেই  সবচেয়ে বেশী।

চলতি বছরেই সীতাকুন্ডে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে প্রায় অর্ধশত লোক আহত হয়েছে প্রায় শতাধিক। চট্টগ্রামের প্রবেশ মুখ সীতাকুন্ড উপজেলাটির কোনো না কোনো স্থানে প্রতিনিয়ত এই দুর্ঘটনা ঘটছে। শিল্পঞ্চল খ্যাত এই উপজেলাটির ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের উভয় পাশে রয়েছে প্রায় তিন শতাধিক প্রতিষ্ঠান। উপজেলার কুমিরা ইউনিয়নে অবস্থিত কেএসআরএম ফ্যাক্টরির সামনে ঘটেছে প্রায় ১০ টির  অধিক ছোট বড় দুর্ঘটনা। ওই স্থানে রয়েছে রয়েল সিমেন্ট কেওয়াইসি আর সহ প্রায় ৫টি প্রতিষ্ঠান। শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যখানে অবস্থিত রয়েছে সীতাকুন্ডের একমাত্র কুমিরা আবাসিক বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজ । যেখানে অধ্যায়নরত রয়েছে প্রায় চার হাজারের অধিক শিক্ষার্থী। কেএসআরএম প্রতিষ্ঠানের সামনে প্রায় অর্ধশত লরি গাড়ি রেখে রাস্তার উপর প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে যার ফলে রাস্তা পারাপারে যেমন এলাকাবাসীর জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে তেমনি সড়কে যানজট বৃদ্ধি পাচ্ছে। একই সাথে ত্রিমুখী গাড়ি চলাচলের ফলে দুর্ঘটনার প্রভাব অনেকাংশে বেড়ে যাচ্ছে। আরো যেসব কারখানার গাড়ির কারনে রাস্তায় চলাচল বিঘ্নিত হয় এগুলো হচ্ছে কুমিরায় কেডিএস লজিস্টিক্স, ফৌজদারহাটে বিএসআরএম, বাড়কুন্ডে কেএসআরএম, কাশেম জুটমিল সংলগ্ন বিএম কন্টেইনার ডিপো, শীতলপুরে আবুল খায়ের স্টীল উল্লেখযোগ্য।

এসব দেখবালের দায়িত্বে থাকা হাইওয়ে পুলিশ ও জেলা পুলিশ প্রয়োজনীয় কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় তাদের দায়িত্ববোধ নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয় জনসাধারণ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক স্থানীয় ব্যক্তি জানান পুলিশের কাজ রাস্তায় অবৈধ পার্কিং বন্ধ করা কিন্তু তারা তা না করে উল্টো  রাস্তা দখরকারীদের প্রটেকশন দিচ্ছে বলে মনে হয় নিশ্চয় এখানে অনৈতিক কোন আদান প্রদান থাকতে পারে নাহলে পুলিশ চাইলে ১ ঘন্টার মধ্যে রাস্তা পরিস্কার করে দিতে পারবে।

এব্যপারে কেএসআরএম গ্রুপের মিডিয়া এডভাইজার মিজানুল ইসলাম বলেন সীতাকুন্ড হচ্ছে শিল্প জোন। সেখানে মহাসড়কের পাশেই গড়ে উঠেছে বিভিন্ন শিল্প গ্রæপের কারখানাগুলো। এসব কারখানার কাঁচামাল ও তৈরী পণ্য আনা নেওয়ার সময় সাময়িক জটলা তৈরি হওয়া স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু তা যানজট কিংবা দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে না। আর অবৈধভাবে পার্কিংয়ের অভিযোগ ভিত্তিহীন ও মনগড়া।  হাইওয়ে পুলিশ এসব ব্যাপারে বেশ তৎপর। কিন্তু কেএসআরএম কারখানার সামনেই রাস্তার উপর একত্রে ২০/২৫টি লড়ি দাড়িয়ে আছে তারপরও অভিযোগ অস্বীকার করা মানে মিথ্যাচার করার সামিল নয়কি ?

এব্যপারে  হাইওয়ে পুলিশের (কুমিল্লা) এসপি মোঃ নজরুল ইসলাম অবৈধ পার্কিং ও দুর্বল ভুমিকার কথা অস্বীকার করে বলেন আমরা আইনগতভাবে যা করা দরকার তাই করছি।

এব্যপারে জেলা পুলিশের এসপি এস.এম. রশিদুল হক অবৈধ পার্কিং এর বিষয়টি স্বীকার করে বলেন এর আগেও আমরা অভিযান করে অবৈধ পার্কিং বন্ধ করেছিলাম কিন্তু তারা পুনরায় আবার স্বরূপে ফিরে আসে। তবে এবার বিষয়টি আমি শক্ত হাতে দমন করব।