সীমা গ্রুপ আমাদের নিজ সন্তানের মতো, অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনার জন্য আমি ক্ষমা প্রার্থী : পারভেজ উদ্দীন সান্টু

সীমা গ্রুপ আমাদের নিজ সন্তানের মতো, অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনার জন্য আমি ক্ষমা প্রার্থী : পারভেজ উদ্দীন সান্টু
সীমা গ্রুপ আমাদের নিজ সন্তানের মতো, অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনার জন্য আমি ক্ষমা প্রার্থী : পারভেজ উদ্দীন সান্টু

সম্প্রতি ঘটে যাওয়া সীতাকুণ্ডের সীমা অক্সিজেন কারখানার অগ্নিকান্ড সম্পর্কে আবেগাপ্লুত স্ট্যাটাস দিয়েছেন সীমা গ্রুপের পরিচালক মোঃ পারভেজ উদ্দীন সান্টু । পাঠকের জন্য তা হুবহু তুলে ধরা হলো...............।

প্রিয় সীতাকুণ্ডবাসী।
আস্সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।

সম্প্রতি ঘটে যাওয়া আমাদের সীমা অক্সিজেন প্লান্টের অনাকাঙ্ক্ষিত দূর্ঘঠনায় যারা নিহত হয়েছেন। তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। নিহতদের পরিবারের প্রতি আমরা সীমা গ্রুপের পরিচালনা পরিষদ এবং আমি ব্যক্তিগত ভাবে ক্ষমা প্রার্থী। আহত ও হতাহত’দের প্রতিও আমি ক্ষমা প্রার্থী। দূর্ঘঠনার সময় আশাপাশের যাদের ঘর-বাড়ী ব্যবসা প্রতিষ্টান দোকান পাটের কয়ক্ষতি হয়েছে তাদের প্রতিও আমি ক্ষমা প্রার্থী।

এটা মহান আল্লাহ্তালা হয়তো ভালো জানেন কি করে এতো বড় দূর্ঘটনা গঠে গেলো। কিন্তু কোনো পিতা জেনে শুনে স্ব-জ্ঞানে নিজের সন্তানের মাথায় হাতুঁড়ি দিয়ে কখনও যেমন আঘাত করতে চাই না। ঠিক তেমনি আমরাও আমাদের হাজার মানুষের প্রতিষ্টান ইচ্ছে করে ক্ষতিগ্রস্ত করতে চাইনি। এই প্রতিষ্টান আমাদের নিজের সন্তানের মতো। সুতরাং আমরা মেনে নিয়েছি এটি একটি অনাকাঙ্ক্ষিত দূর্ঘঠনা।

১৯৯৬ সালে আমার মরহুম পিতা আলহাজ্ব শফি সাহেবের হাতে গড়া কদমরসুলস্হলে আমাদের সীমা অক্সিজেন প্লান্ট। এই প্লান্টে কর্মরত ৯০% কর্মকর্তা কর্মচারী আমাদের সীতাকুণ্ডের বিভিন্ন ইউনিয়নের। যাদের সঙ্গে আমাদের ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক।

আপনারা অবগত আছেন বিশ্ব মহামারী করোনাকালীন সময় চট্টগ্রামের বিভিন্ন হাসপাতাল সহ সীতাকুণ্ডের বিভিন্ন ইউনিয়নে করোনা রোগীদের আমরা সীমা অক্সিজেন প্লান্ট থেকে সম্পূর্ণ ফ্রি অক্সিজেন সরবারহ করেছিলাম।

সে সময় আমি আমার প্রতিষ্টানের লাভ লস্ চিন্তা করি নাই। কারণ তখন মানুষের বিপদের সময় পাশে থাকাটায় আমাদের প্রতিষ্টান ও আমার জন্য ফরজ ছিলো।

দূর্ঘঠনার দিন ঘঠনাস্হলে এসে আমাদের ততক্ষণিক যারা সহযোগীতা করেছিলেন তাদের মাঝে সীতাকুণ্ডের উপজেলা নির্বাহী অফিসার সম্মানিত জনাব শাহাদাৎ হোসেন মহোদয়। সীতাকুণ্ড মডেল থানার সম্মানিত ওসি জনাব তোফায়েল আহাম্মেদ মহোদয়। ৮নং ইউনিয়ন পরিষদের সম্মানিত চেয়ারম্যান মনির আহাম্মেদ ভাই। ৯নং ইউনিয়ন পরিষদের সম্মানিত চেয়ারম্যান বড়ভাই নাজিম উদ্দীন। ১০ নং সলিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের সম্মানিত চেয়ারম্যান সালাউদ্দীন আজিজ মামা। গাউসিয়া কমিটি এবং কদমরসুলবাসী। সকলের প্রতি আমি ব্যক্তিগত ভাবে ঋণী ও চির কৃতজ্ঞ।

আপনাদের জানা প্রয়োজন বাংলাদেশ শ্রম আইনে কর্মস্হলে নিহত শ্রমিক পায় ২ লাখ টাকা।যেহেতু আমাদের প্রতিষ্টানে কর্মরত যারা আছেন তাদের সঙ্গে ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক। তাই তাদের পরিবারে কথা চিন্তা করে ১০ লাখ টাকার অনুদান প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহন করি। আমি জানি এই অনুদানে তাদের মতো দক্ষ কর্মরত মানুষ আর ফিরে পাবো না। তবে কারো চাপে নয়। মানবিকতা ও তাদের সন্তান পরিবারের কথা চিন্তা করে আমাদের এই ততক্ষণিক সিদ্ধান্ত।

দূর্ঘঠনার দিন থেকে আমার ভাটিয়ারীবাসী সহ সীতাকুণ্ডের বিভিন্ন ইউনিয়নের যাদের সহানুভূতি ও মানসিক সহযোগীতা পেয়েছি তাদের প্রতি আমি ব্যক্তিগত ভাবে চির কৃতজ্ঞ।

আর যারা বিরুপপ্রতিক্রিয়া জানিয়ে গণমাধ্যমে আমার ও আমাদের প্রতিষ্টানের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে নিউজ করেছেন তাদের কাছে প্রশ্ন হলো..?
২হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সীমা গ্রুপ বন্ধ হয়ে গেলে। এই ২হাজার কর্মকর্তা কর্মচারী’দের পরিবারের দায়িত্ব কি আপনারা নিতে পারবেন..?

মনে রাখবেন একটি প্রতিষ্টান ধ্বংস হয়ে গেলে শুধু মালিক একা নয়, হাজার হাজার পরিবারের উপর এই ক্ষতির প্রভাব পড়ে। আবার এই ক্ষতির প্রভাব একসময় রাষ্ট্রের উপরে পড়ে।

তাই দোয়া করুন আমাদের জন্য যাতে দুঃসময় কাটিয়ে আবার আমরা ঘুরে দাঁড়াতে পারি।আবার স্বচ্ছল হোক সীমা অক্সিজেন প্লান্ট। আবার স্বচ্ছল হোক সীতাকুণ্ডে আমাদের প্রতিষ্টানে কর্মরত মানুষ গুলোর পরিবার।

পরিশেষে সকলের মঙ্গল কামনা করছি। সকলে ভালো ও সুস্হ থাকুন।
আল্লাহ্ হাফেজ।

নিবেদক-
মোঃ পারভেজ উদ্দীন সান্টু
পরিচালক।
সীমা গ্রুপ।

খালেদ / পোস্টকার্ড;