সন্দ্বীপে অস্বাভাবিক জোয়ারে পানিবন্দি ১২ হাজার মানুষ

সন্দ্বীপে অস্বাভাবিক জোয়ারে পানিবন্দি ১২ হাজার মানুষ
সন্দ্বীপে অস্বাভাবিক জোয়ারে পানিবন্দি ১২ হাজার মানুষ

সন্দ্বীপ সংবাদদাতা ।।

সন্দ্বীপের সারিকাইত ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের পুরাতন বেড়িবাঁধ ছিড়ে এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন দুই ওয়ার্ডের প্রায় ১২ হাজার মানুষ। জোয়ারের পানি ঢুকে ফসলি জমি, পুকুর, মাছের প্রজেক্টসহ ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ১০ দিন ধরে এভাবে জোয়ারের সময় পানিবন্দি অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন তারা।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, দ্রুত বেড়িবাঁধ নির্মাণ না হওয়ায় জোয়ারের পানিতে পানি বন্দি অবস্থায় থাকতে হচ্ছে। বর্ষা মৌসুমের অত্যধিক জোয়ারের কারণে গত দশদিন ধরে ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ভাঙ্গা বেড়িবাঁধ দিয়ে লোকালয়ে জোয়ারের পানি ঢুকছে। গত অমাবস্যার জোয়ারে স্রোত বেশি থাকায় প্রায় ৪শ’ মিটার পুরাতন বেড়িবাঁধ ছিড়ে যায়। এতে প্রায় ৪শ’ একর জমির ফসল ভাসিয়ে নেয়। ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্রায় ৫০টি পুকুরের মাছ জোয়ারের পানিতে ভাসিয়ে নেয়। রাস্তাঘাট ডুবে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়। গবাদিপশুর চারণভূমি পানিতে ডুবে পশুখাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। রান্নাঘরের চুলা ডুবে যাওয়ায় খাটের উপর চুলা বসিয়ে রান্না করছেন অনেকে। পাঁচটি ঘরের বেড়া জোয়ারের পানির স্রোতে নিয়ে গেছে। পানিবন্দি অবস্থায় দিন কাটালেও কোন সরকারি সহযোগিতা পায়নি ভুক্তভোগী পরিবার।

সারিকাইত ৬ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার কাজী মো. ফোরকান জানান, জোয়ারের পানিতে পুকুরে চাষের প্রায় ৬০ লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে।

সারিকাইত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলাম পনির জানান, পুরাতন বেড়িবাঁধ ছিড়ে পানি ঢুকে গত ১০ দিন ধরে মানুষের ঘরবাড়িতে দুইবার করে পানি ঢুকে। তবে অমাবস্যার জোয়ারে পানি স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে বেশি উচু হওয়ায় নদীর কূল থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার ভিতরে জোয়ারের পানি ঢুকে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেশি হয়েছে। মাছের প্রজেক্ট, ফসলের ক্ষেতে প্রায় এক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

ডলি কনস্ট্রাকশন নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গত তিন বছর আগে সারিকাইত ইউনিয়নের দক্ষিণে ১৫শ’ মিটার আরসিসি ব্লক বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ পায়। চলতি বছরের জুন মাসে এই বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কাজের মেয়াদ শেষ হলেও কাজের কোন অগ্রগতি হয়নি। দুইমাস আগে কিছু অংশে মাটি ভরাটের কাজ করলেও দুই দফা জোয়ারে তা ছিড়ে যায়। বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ ধীরগতি হওয়ার কারণ জানতে উপজেলা পরিষদের সভায় তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।