সংঘর্ষ থামিয়ে ব্যবস্থা নিতে দিল্লির হাইকোর্ট বসল মধ্যরাতে
আন্তর্জাতিক ডেস্ক ।।
দিল্লী জ্বলছে ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) নিয়ে। সিএএ’র পক্ষে ও বিপক্ষে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে বেড়েই চলেছে মৃতের সংখ্যা। আজ বুধবার পর্যন্ত এ ঘটনায় ২০ জন নিহত হয়েছে, আহত হয়েছেন ১৫০ জনেরও বেশি। আর এ সংঘর্ষ থামাতে ব্যবস্থা নিতে গতকাল মঙ্গলবার মধ্যরাতে বসেছে দিল্লির হাইকোর্ট।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের খবরে বলা হয়, দিল্লির চলমান সংঘর্ষ এড়াতে মঙ্গলবার রাত ১২টা ৩০ মিনিটে বিশেষ বৈঠকে বসেন দিল্লি হাইকোর্ট।
বিচারপতি এস মুরলীধরের বাড়িতে শুনানি করেন দুই বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। জরুরি ভিত্তিতে হওয়া ও শুনানিতে আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে নির্দেশ প্রদান করেন দিল্লি হাইকোর্ট।
দিল্লি পুলিশকে তাদের সব শক্তিকে কাজে লাগানোর কথা বলেছেন আদালত। আহতদের চিকিৎসায় কী ব্যবস্থা নেওয়া হলো তাও আদালতকে জানাতে পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দিল্লি সংঘর্ষের আহতরা গুরু তেঘ বাহাদুর ও লোক নায়ক জয় প্রকাশ নারায়ণ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। সেখানকার মেডিকেল সুপারদেরও এই নির্দেশের কথা জানিয়ে দিতে বলা হয়েছে।
বুধবার দুপুর ২টা ১৫ মিনিটে ফের এই মামলার শুনানি করবেন দিল্লি হাইকোর্ট।
দিল্লিতে সিএএ নিয়ে সংঘর্ষে গত সোমবারের সংঘর্ষে মারা গিয়েছিলেন পাঁচজন। এর মধ্যে এক পুলিশ কর্মকর্তা রয়েছেন। এ ছাড়া মঙ্গলবার থেকে বুধবার পর্যন্ত আরও ১৫ জন নিহতের খবর আসে ভারতীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত দিল্লির অব্যাহত এ সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ জনে।
গতকাল উত্তর-পূর্ব দিল্লির বিভিন্ন এলাকায় সংঘর্ষ দেখা দেয়। বিভিন্ন বিল্ডিং থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা গেছে। দিল্লির রাস্তায় লাঠি, ভাঙা কাঁচের টুকরা, ইট-পাথর পড়ে থাকতে দেখা যায়।
রোববার, সোমবারের মতো মঙ্গলবারের সংঘর্ষেও দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল সন্ধ্যায় তাদের অবশ্য মাঠে নামতে দেখা গেছে। পুলিশকে কাঁদানে গ্যাসের সেল নিক্ষেপ করতে দেখা গেছে। চাঁদবাগ ও ভজনপুরা এলাকায় বিক্ষোভকারী ও পুলিশের সংঘর্ষের ছবিও ধরা পড়েছে।
মঙ্গলবার রাতে জাফরাবাদ, মৌজপুর, চাঁদবাগ, কারওয়াল নগরে কারিফিউ জারি করা হয়। এসব এলাকায় দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দিয়েছে দিল্লি পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনা মোতায়েনের দাবি উঠেছিল। তবে প্রশাসন জানিয়েছে, যথেষ্ট পুলিশ নামানো হয়েছে। এখনই সেনা নামানোর দরকার নেই।
এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় তিন দফায় বৈঠকে বসেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। গতকাল মঙ্গলবার সংঘর্ষস্থল থেকে মাত্র ১৫ কিলোমিটার দূরে ছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। অবশ্য মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেখা যায়নি তাকে।