শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির একান্তে মধ্যাহ্নভোজ , খুব কম রাষ্ট্রনেতাই এই সম্মান পেয়েছেন

শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির একান্তে মধ্যাহ্নভোজ , খুব কম রাষ্ট্রনেতাই এই সম্মান পেয়েছেন
শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির একান্তে মধ্যাহ্নভোজ , খুব কম রাষ্ট্রনেতাই এই সম্মান পেয়েছেন

পোস্টকার্ড ডেস্ক।।

বিমানবন্দরে অভ্যর্থনায় ত্রুটি হয়েছে বা অতিথির অমর্যাদা করা হয়েছে বলে যারা রীতিমতো হইচই জুড়ে দিয়েছিলেন, তাদের মুখের ওপর জবাব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আজ দিল্লির হায়দারাবাদ হাউজে একান্ত মধ্যাহ্নভোজনে আপ্যায়িত করলেন নরেন্দ্র মোদি।

‘প্রধানমন্ত্রী মোদি এই সম্মান খুব কম রাষ্ট্রনেতাকেই দিয়েছেন। সেদিক থেকে বললে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে তিনি যে কতটা গুরুত্ব ও সম্মান দেন সেটা এই ওয়ান-অন-ওয়ান লাঞ্চের আয়োজন থেকেই স্পষ্ট। আর এই আইডিয়াটাও সম্পূর্ণভাবে মোদির নিজের’, মঙ্গলবার বিকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র একজন কর্মকর্তা এ কথা বলেন ।

দিল্লির যে হায়দারাবাদ হাউজে বিদেশি অতিথিদের সঙ্গে ভারতের সর্বোচ্চ পর্যায়ের বৈঠকগুলো হয়, সেখানে প্রধানমন্ত্রী পুরো প্রতিনিধিদলকে নিয়ে অতিথিদের সঙ্গে লাঞ্চ সারেন, এটাই সাধারণ রেওয়াজ। 

কিন্তু এবারে নরেন্দ্র মোদি শুধু শেখ হাসিনার জন্য সেই নিয়মের ব্যতিক্রম ঘটিয়েছেন–তাদের দুজনের আলাদা মধ্যাহ্নভোজনের আয়োজন করা হয়েছিল আলাদা একটি কক্ষে।

haidra

হায়দ্রাবাদ হাউজ

সেখানে দুদেশের অন্য কোনও মন্ত্রী বা কর্মকর্তাও হাজির ছিলেন না, দুই প্রধানমন্ত্রী দুপুরের খাবার খেতে খেতে প্রায় চল্লিশ মিনিট নিজেদের মধ্যে খোলামেলা কথাবার্তা বলারও সুযোগ পেয়েছেন। 

তবে সেই লাঞ্চে মেনু কী ছিল, তা নিয়ে ভারতীয় কর্মকর্তারা কেউই মুখ খুলতে চাইছিলেন না। বহু চাপাচাপির পর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক অফিসার শুধু বললেন, ‘তার কাছের লোকদের বা পছন্দের অতিথিদের প্রধানমন্ত্রী মোদি সবসময় নিরামিষ গুজরাটি খাবার আর ডেসার্ট দিয়েই আপ্যায়ন করে থাকেন– এখানেও তার ব্যতিক্রম হয়নি এটুকু বলতে পারি।’

হায়দারাবাদ হাউজে বাংলায় ভাষণ

নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের মঞ্চে বহুবারই মাতৃভাষা বাংলায় ভাষণ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী হাসিনা– এবারে দিল্লিতে হায়দারাবাদ হাউজও তার কণ্ঠে বাংলায় ভাষণ শুনতে পেলো।

মঙ্গলবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি হিন্দিতে (ও কিছুটা ইংরেজিতে) তার বক্তব্য শেষ করার পরই বলতে শুরু করেন মঞ্চে তার পাশে দাঁড়ানো শেখ হাসিনা। ইংরেজিতেই ভাষণ শুরু করে বেশ কিছুক্ষণ তাতেই বলে যাচ্ছিলেন তিনি

image(6)

দিল্লিতে মঙ্গলবার শেখ হাসিনা ও প্রধানমন্ত্রী মোদি

একেবারে শেষ দিকে এসে সবাইকে চমকে দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি এবার বাংলাতেও কিছুটা বলতে চাই। ভারত আমাদের খুব পুরনো বন্ধু, একাত্তর সালের যুদ্ধের সময় তাদের অনেক সহযোগিতা আমরা পেয়েছি।’

‘পঁচাত্তরে বাবাকে হারানোর পর আমরা দুই বোন যখন অসহায় দশায়, তখন এই ইন্ডিয়াই কিন্তু আমাদের আশ্রয় দিয়েছিল। শুধু আমাদেরই নয়, পরিবারের আরও অনেককে। ফলে আমাদের দুঃখের সময় ইন্ডিয়া সবসময় পাশে থেকেছে।’   

‘প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সমস্যা তো থাকতেই পারে, কিন্তু আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে একে একে সেগুলো যে মিটিয়ে ফেলা যায়, আমরা দুই দেশ মিলে তার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছি’, সাবলীলভাবে বলে যান তিনি। 

ভাষার কারণে অনেকে হয়তো পুরোটা বুঝতে পারেননি– কিন্তু বাংলায় বলা এই কথাগুলোতে যে দরদ, যে আন্তরিকতা ছিল, তা স্পর্শ করে যায় সভায় উপস্থিত প্রত্যেকটি মানুষকে।-বাংলা ট্রিবিউন

খালেদ /পোস্টকার্ড ;