লোকজন জড়ো করে ছবি তুলে ত্রাণ কেড়ে নেয়া হাটহাজারীর সেই চেয়ারম্যান বরখাস্ত

লোকজন জড়ো করে ছবি তুলে ত্রাণ কেড়ে নেয়া হাটহাজারীর সেই চেয়ারম্যান বরখাস্ত

ইশরাত আলম আরজু ।।

লোকজন জড়ো করে হাতে ত্রাণ তুলে দিয়ে ছবি তুলে তাদের পিটিয়ে তাড়ানোর ঘটনায় অভিযুক্ত চট্টগ্রামের হাটহাজারীর মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আবছারকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।

রোববার (১২ এপ্রিল) বিকেলে হাটহাজারী উপজেলা প্রশাসনের কাছে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-সচিব মোহাম্মদ ইফতেখার আহমদ চৌধুরী স্বাক্ষরিত আলাদা দুটি চিঠিতে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

প্রথম চিঠিতে লেখা হয়, ‘যেহেতু চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলার ৩ নং মির্জাপুর ইউনিয়নের পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আবছারের বিরুদ্ধে করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় বরাদ্দকৃত চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাটহাজারী কর্তৃক প্রমাণিত হয়েছে এবং জেলা প্রশাসক স্থানীয় সরকার আইন, ২০০৯ এর ৩৪ (৪)(খ)(ঘ) অনুযায়ী উক্ত চেয়ারম্যানকে স্বীয় পদ থেকে বরখাস্তের সুপারিশ করেছেন।’

‘সেহেতু বর্ণিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলার ৩ নং মির্জাপুর ইউনিয়নের পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আবছারকে স্থানীয় সরকার আইন ২০০৯ এর ৩৪(১) অনুযায়ী তার স্বীয় পদ থেকে অপসারণ করা হলো।’

আরেক চিঠিতে তাকে কেন চূড়ান্তভাবে বরখাস্ত করা হবে না তা ১০ দিনের মধ্যে জানাতে বলা হয়েছে।

গত ৬ এপ্রিল চেয়ারম্যান নুরুল আবছার করোনাভাইরাসের কারণে কর্মহীন মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণের নামে লোকজন জড়ো করেন। কিন্তু ইউএনও পরিদর্শন করে চলে যেতেই ত্রাণ দেয়া বন্ধ করেন দেন চেয়ারম্যানের লোকজন। এর প্রতিবাদ করলে চেয়ারম্যান ও তার অনুসারীরা চড়াও হন অসহায় লোকজনের ওপর। এমনকি তাদের পেটানোও হয়।

নুরুল আবছার হাটহাজারী উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা। তার বিরুদ্ধে প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ এবং নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।

ত্রাণবঞ্চিত ও মারধরের শিকার লোকজন পরে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুহুল আমিনের কাছে গিয়ে অভিযোগ করে। ইউএনও তখন নিজের বরাদ্দে থাকা ত্রাণ দিয়ে সেই লোকদের বাড়ি পাঠিয়ে দেন।

ইউএনও রুহুল আমিন তখন বলেন, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে কর্মহীন দিনমজুর ও হতদরিদ্রের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণের জন্য মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদে তিন দফায় ত্রাণ পাঠানো হয়। প্রথম দফায় ৫০০ কেজি চাউল ও নগদ ৩০০০ টাকা, দ্বিতীয় দফায় ৫৩৩ কেজি চাউল, তৃতীয় দফায় স্থানীয় এমপির পক্ষ থেকে ৫০ বস্তা ত্রাণ (চাউল, ডাল, আলু, পেঁয়াজ) পাঠানো হয়। কিন্তু চেয়ারম্যান নিজ ইউনিয়নে বিতরণ করছেন কি-না সেটার মাস্টার রোল কপি উপজেলায় জমা দেয়া হয়নি। ওই ইউনিয়নের মেম্বারদের লিখিত অভিযোগও আমরা পেয়েছি। কপিটি জেলা প্রশাসক বরাবর পাঠানো হচ্ছে।