যুক্তরাজ্য ৪৭ বছরের ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যপদ ছাড়লো

যুক্তরাজ্য ৪৭ বছরের ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যপদ ছাড়লো
৪৭ বছরের ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যপদ ছাড়লো যুক্তরাজ্য

 

বিবিসি বাংলা ।।

আনুষ্ঠানিকভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ৪৭ বছরের সদস্যপদ ছাড়লো যুক্তরাজ্য গণভোটে সমর্থনের তিন বছরেরও বেশি সময় পর। ঐতিহাসিক এই মুহূর্তটি অনুষ্ঠিত হয় স্থানীয় সময় শুক্রবার রাত ১১টায়। এ সময় একদিকে যেমন উদযাপন অনুষ্ঠিত হয় তেমনি বিক্ষোভও করেছে ব্রেক্সিট বিরোধীরা। স্কটল্যান্ডে মোমবাতি জ্বালিয়ে দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে, স্কটল্যান্ড গণভোটে ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকার পক্ষে মত দিয়েছিল। এদিকে লন্ডনের পার্লামেন্ট স্কয়ারে পার্টি করেছে ব্রেক্সিটপন্থীরা। বরিস জনসন প্রতিজ্ঞা করেছেন যে তিনি দেশকে ঐক্যবদ্ধ রেখে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। খবর বিবিসি বাংলার
ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে আসার এক ঘণ্টা আগে সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অনেকের জন্য এই মুহূর্তটি বিস্ময়কর আশা জাগানিয়া মুহূর্ত, এমন একটি মুহূর্ত যেটি তারা কখনো আসবে বলে ভাবেনি। আর অনেকেই রয়েছে যারা এক ধরনের ক্ষতি এবং শঙ্কা অনুভব করছেন। তৃতীয় একটি পক্ষও রয়েছে-আর তাদের সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি- যারা এটা ভেবে উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন যে পুরো এই রাজনৈতিক গোলযোগ কখনো শেষ হবে না। আমরা এই সব অনুভূতিই বুঝি এবং সরকার হিসেবে আমাদের দায়িত্বটাও বুঝি-আমার দায়িত্ব হচ্ছে পুরো দেশকে ঐক্যবদ্ধ করে সবাইকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।’
তিনি বলেন, ইইউ তার সব শক্তিমত্তা এবং প্রশংসনীয় গুণাবলী দিয়ে গত ৫০ বছরে এমনভাবে বিকশিত হয়েছে যা আর এই দেশের জন্য উপযুক্ত নয়।
সামাজিক মাধ্যমে জাতির উদ্দেশ্যে এক বার্তা দেন বরিস জনসন। তিনি বলেন, আজ রাতে বলার মতো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হচ্ছে এটাই যে, এটা কোন শেষ নয় বরং শুরু মাত্র। এটি প্রকৃত জাতীয় নবায়ন এবং পরিবর্তনের একটি মুহূর্ত।
যুক্তরাজ্যে এই মুহূর্তটি কেমন ছিল : আনুষ্ঠানিকভাবে ইউরোপ ত্যাগের ক্ষণ গণনা চলে এবং পুরো দেশ জুড়ে পাব এবং সামাজিক ক্লাবগুলোতে ব্রেক্সিট পার্টি অনুষ্ঠিত হয়েছে। ব্রেক্সিট উদযাপন করতে পার্লামেন্ট স্কয়ারে জমা হয় শত শত মানুষ। সেসময় তারা দেশাত্মবোধক গান গায় এবং নাইজেল ফারাজের মতো শীর্ষ ব্রেক্সিটপন্থীদের বক্তৃতায় সমর্থন দিয়ে আনন্দ করে।
ব্রেক্সিট পার্টির নেতা বলেন, আজ আমরা এমনভাবে উদযাপন করবো যেমনটা এর আগে আর কখনো করিনি। এই মহান জাতীর আধুনিক ইতিহাসে এটি সবচেয়ে বড় মুহূর্ত।
এর আগে ইউরোপীয় ইউনিয়নপন্থীরা হোয়াইটহলে বিক্ষোভ করে এবং ইউনিয়নকে ‘আন্তরিক বিদায়’ জানায়। স্কটল্যান্ডে ব্রেক্সিট বিরোধী র‌্যালি এবং মোমবাতি জ্বালিয়ে শোক জানানো হয়।
মিশ্র প্রতিক্রিয়ার দিনটিতে আরো যেসব উল্লেখযোগ্য কর্মকান্ড হয়েছে সেগুলো হলো:
নর্দান আয়ারল্যান্ডে, বর্ডার কমিউনিটি নামে ব্রেক্সিট বিরোধী একটি প্রচারণা গ্রূপ আয়ারল্যান্ডের কাছে আরমাঘ নামে সীমান্ত এলাকায় বেশ কয়েকটি বিক্ষোভ করে।
ঠিক ১১টার সময় স্কটল্যান্ডের ফার্স্ট মিনিস্টার নিকোলা স্টারজন ইইউ এর একটি পতাকার ছবি টুইট করেন এবং বলেন, ‘স্বাধীন দেশ হিসেবে ইউরোপের কেন্দ্রে ফিরে আসবে স্কটল্যান্ড।’
কার্ডিফে ওয়েলসের ফার্স্ট মিনিস্টার মার্ক ড্রেকফোর্ড বলেন, ওয়েলস ইইউ ত্যাগের পক্ষে ভোট দিলেও এটি একটি ‘ইউরোপীয় জাতি’ হয়েই থাকবে।
স্কটিশ পার্লামেন্টের বাইরে এরইমধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের শূন্যতা অনুভব করার কথা জানিয়ে র‌্যালি করে ইইউ পন্থীরা।
এখন কী হবে : যুক্তরাজ্য যে ইউরোপীয় ইউনিয়নে নেই- তা এই মুহূর্তে খুব কম টের পাবে দেশটির নাগরিকরা। ইইউ এর বেশিরভাগ আইন বলবত থাকবে- যার মধ্যে রয়েছে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত অর্থাৎ যখন পরিবর্তনের সময় বা ট্রানজিশন পিরিয়ড শেষ হয়ে যাবে তার আগ পর্যন্ত জনগণের মুক্ত চলাফেরা।
ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর বাণিজ্য চুক্তিতে পৌঁছানোর ধাপ : কানাডার সাথে থাকা ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাণিজ্য সম্পর্কের মতোই যুক্তরাজ্য ইইউ এর সাথে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি সই করতে যাচ্ছে। কিন্তু ইউরোপীয় নেতারা সতর্ক করেছে যে সময় সীমা শেষ হওয়ার আগে চুক্তি করতে বেশ বেগ পেতে হবে যুক্তরাজ্যকে।
ইউরোপ কেমন প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে? ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়ন কাউন্সিল থেকে ব্রিটিশ পতাকা সরিয়ে নেয় কর্মকর্তারা। ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডের লেয়েন বলেছেন, বাণিজ্য আলোচনায় ব্রিটেন এবং ব্রাসেলস তাদের নিজ নিজ অধিকারের পক্ষে লড়াই করবে।
তিনি যুক্তরাজ্যের যেসব নাগরিকদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান, ‘যারা ইউরোপীয় ইউনিয়নে অবদান রেখেছে এবং একে শক্তিশালী করায় ভূমিকা রেখেছে’ এবং বলেন, ইইউ-তে যুক্তরাজ্যের শেষ দিনটি ছিল ‘আবেগময়’।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুযেল ম্যাঁক্রো বলেন, ‘৭০ বছরের মধ্যে প্রথম মাঝ রাতে একটি দেশ ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগ করবে। এটি একটি ঐতিহাসিক সতর্ক সংকেত যা আমাদের সব দেশের শোনা উচিত।’
ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মিশেল সতর্ক করে বলেন, ‘যুক্তরাজ্য ইইউ’র মান থেকে যত দূরে সরে যাবে, একক বাজারে এর প্রবেশাধিকার তত কমবে।’
ব্রেক্সিট পার্টির এমইপিরা একজন ব্যাগপাইপারের পেছনে পেছনে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট থেকে বেরিয়ে আসে।
যুক্তরাষ্ট্র কী বলছে : যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও বলেন, ‘আমি আনন্দিত যে, ব্রিটিশ নাগরিকদের ইচ্ছার প্রতি সম্মান দেখিয়ে ইউকে এবং ইইউ একটি ব্রেক্সিট চুক্তিতে সম্মত হয়েছে। যুক্তরাজ্যের পরবর্তী অধ্যায়ের শুরু থেকে আমরা তাদের সাথে শক্তিশালী, উৎপাদনশীল এবং সমৃদ্ধ সম্পর্ক গড়ে তোলা অব্যাহত রাখবো।’
যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত ওয়াশিংটনের রাষ্ট্রদূত উডি জনসন বলেন, ব্রেক্সিটের পক্ষে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘দীর্ঘ সমর্থন’ রয়েছে।
এক বিবৃতিতে মিস্টার জনসন বলেন, যুক্তরাজ্যের সাথে আমেরিকার বিশেষ সম্পর্ক ব্রিটেন যে নতুন যুগের সূচনা করছে সেখানে আরো সমর্থন করবে, বিকশিত এবং শক্তিশালী হবে।
এখানে কীভাবে পৌঁছালো ব্রিটেন : তৃতীয়বারের চেষ্টায় ১৯৭৩ সালের পহেলা জানুয়ারি তৎকালীন ইউরোপীয় ইকোনমিক কমিউনিটিতে যোগ দেয় ব্রিটেন। এর দুই বছর পর এক গণভোটে এই জোটে থাকার পক্ষে ব্যাপক সমর্থন আসে। নিজের দলের এমপি এবং নাইজেল ফারাজের ইউকে ইনডিপেনডেন্স পার্টির অব্যাহত চাপের মুখে ২০১৬ সালের জুনে কনজারভেটিভ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন এ নিয়ে আরেকটি গণভোটের আয়োজন করেন।
মিস্টার ক্যামেরন ইইউ-তে থাকার পক্ষে প্রচারণা চালান কিন্তু আরেক কনজারভেটিভ নেতা বরিস জনসনের ইইউ ত্যাগের পক্ষে প্রচারণার মুখে খুবই কম ভোটে হেরে যান তিনি। ইউরোপের পক্ষে পড়ে ৪৮ ভাগ ভোট আর বিপক্ষে পরে ৫২ ভাগ ভোট।
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মিস্টার ক্যামেরনের উত্তরসূরি টেরিজা মে, তার তৈরি করা ইইউ ছাড়ার চুক্তি পার্লামেন্টে প্রাথমিকভাবে পাস করালেও তা চূড়ান্ত করাতে বার বার ব্যর্থ হন এবং পরে তার জায়গায় আসেন মিস্টার জনসন, যিনি নিজেও তার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করতে পারেননি।
গত বছর ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত আগাম নির্বাচনে ৮০ আসনের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জয় পেয়েছিলেন মিস্টার জনসন। তিনি প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যে, ‘ব্রেক্সিট বাস্তবায়ন’ করবেন তিনি।
ক্রিসমাসের আগে প্রধানমন্ত্রীর ব্রেক্সিট চুক্তিতে অনুমোদন দেন এমপিরা এবং সেই বিলটি চলতি বছরের শুরুর দিকে আইনে পরিণত হয়।
সাধারণ মানুষের মনে মিশ্র অনুভূতি : গত কয়েকদিনে ব্রিটেনের সংবাদমাধ্যমে অসংখ্য লোকের সাক্ষাৎকার প্রচারিত হয়েছে – যাদের কেউ ব্রেক্সিট উপলক্ষে আনন্দ উল্লাস করছেন, আবার কেউ তার ইইউ নাগরিকের পরিচয় হারানোর দুঃখে চোখের জল ফেলেছেন।
ব্রিটেনে এমন অনেক দম্পতি আছে – যাদের একজন ব্রিটিশ, আরেকজন ইউরোপের কোন এক দেশের। এতদিন তারা যেন একই দেশের নাগরিক ছিলেন – যখন খুশি এদেশে-ওদেশে যাওয়া-আসা, যেখানে খুশি চাকরিবাকরি করা – কোন বাধা ছিল না। হঠাৎ যেন এক আঘাতে তাদেরকে দুই ভিন্ন দেশের নাগরিক বানিয়ে দিয়েছে এই ব্রেক্সিট।
ব্রাসেলসে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে ব্রিটেনের প্রতিনিধিদের যে অফিস – সেটির নতুন নাম হযেছে ‘ইউকে মিশন ইন দি ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন।’
ব্রেক্সিটের পর ঘটনাক্রম: কী হতে যাচ্ছে-
ব্রিটেনে বসবাসরত ইউরোপিয়ান নানা দেশের নাগরিকের সংখ্যা লক্ষ লক্ষ। তেমনি ইউরোপের বিভিন্ন দেশে লক্ষ লক্ষ ব্রিটিশ নাগরিক বাস করেন।
ব্রেক্সিটের কারণে ২০২১ সাল থেকে এই মানুষদের থাকা, কাজকর্ম করা, যাতায়াত থেকে শুরু করে বহু ক্ষেত্রে নানা রকম সমস্যা ও ঝামেলা তৈরি হতে পারে, যা দ্রুত নিষ্পত্তি করতে হবে দু’পক্ষের আলোচকদের।
ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লাইন তার প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, এটি তাদের জন্য একটি আবেগপূর্ণ দিন। তারা যুক্তরাজ্যের উপস্থিতির অভাব অনুভব করবেন, কিন্তু তিনি এটা স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে ইইউ-ব্রিটেন ভবিষ্যৎ বাণিজ্যের আলোচনায় ব্রাসেলস তাদের স্বার্থ রক্ষার জন্য লড়াই করবে।
জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মেরকেলও বলেছেন, যুক্তরাজ্যের সাথে ইইউর ভবিষ্যৎ সম্পর্ক এবং বাণিজ্য অংশীদারিত্বের আলোচনা ‘সহজ হবে না’।
ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মিশেল সতর্ক করে বলেন, ‘যুক্তরাজ্য ইইউ’র মান থেকে যত দূরে সরে যাবে, একক বাজারে এর প্রবেশাধিকার তত কমবে।’
ঐতিহাসিক সতর্ক সংকেত : ব্রেক্সিটের পর ইইউ তাদের ঐক্যকে ধরে রাখতে সর্বাত্মক চেষ্টা করবে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রঁ ব্রেক্সিটের আগের দিন তার বার্তায় স্পষ্ট করেই বলেছেন, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের জন্য ব্রেক্সিট হচ্ছে ঐতিহাসিক সতর্ক সংকেত যা প্রতিটি সদস্য দেশের মাথায় রাখতে হবে।
তার কথায়, ইইউকে আরো গণতান্ত্রিক, সার্বভৌম এবং নাগরিকদের কাছাকাছি হতে হবে যাতে কোন অসুবিধা হলেও ইউরোপ ছেড়ে যাবার ইচ্ছা কারো না হয়।
ব্রেক্সিটের পর মি. ম্যাক্রঁ বলেন, তিনি গভীরভাবে দুঃখিত, কিন্তু ব্রেক্সিট দুদেশের ভবিষ্যৎকে পৃথক করে দিতে পারবে না।
বিবিসির কাতিয়া এ্যাডলার বলছেন, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন জুড়েই ব্রাসেলসের ব্যাপারে নানা রকম সংশয় আছে – যাকে বলে ইউরো-স্কেপটিসিজম। কিন্তু ২০১৬ সালে ইইউ ছেড়ে যাবার যে চিন্তা ইতালি, ফ্রান্স, সুইডেন, এবং অন্যত্র দেখা গিয়েছিল তা এখন প্রায় মিলিয়ে গেছে।
তবে – কাতিয়া এ্যাডলার লিখছেন – ইতালির মাত্তিও সালভিনি এবং ফ্রান্সে মারিন লা পেনের মত ইউরো-সংশয়বাদী রাজনীতিকরা যুক্তরাজ্যের ঘটনাপ্রবাহ অনুসরণ করছেন। তারা মনে করেন ব্রেক্সিট যদি যুক্তরাজ্যে সাফল্য পায় তাহলে একদিন ফ্রেক্সিট, ইতালেক্সিট জাতীয় কথাবার্তা আবার ইউরোপের পত্রিকাগুলোর প্রথম পাতায় উঠে আসতে শুরু করবে।
ভবিষ্যতে কি আবার কাছাকাছি আসবে ব্রিটেন আর ইইউ : ভবিষ্যতে কি কখনো আবার যুক্তরাজ্য অন্য কোনভাবে ইউরোপিয় ইউনিয়নের সাথে যুক্ত হবে বলে কেউ মনে করেন? ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের ব্রেক্সিট কো-অর্ডিনেটর গাই ভেরহফস্টাট বলেন, তিনি নিশ্চিত করতে চাইবেন ইইউ যেন এমন এক প্রকল্প হয়ে ওঠে যে যুক্তরাজ্য ভবিষ্যতে আবার এর অংশ হতে চাইবে।
স্ট্র্যাথক্লাইড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক স্যার জন কার্টিস বলছেন, যদিও ২০১৬ সালের গণভোটে ৫২ শতাংশ ব্রিটিশ ভোটার ইইউ ত্যাগের পক্ষে ছিলেন, এবং ২০১৯ এর ডিসেম্বরের নির্বাচনেও ব্রেক্সিট বাস্তবায়নের শ্লোগান দিয়ে বরিস জনসন বিপুল বিজয় পেয়েছেন – তার পরও জনমত জরিপে গত দু’বছর ধরেই বেশিরভাগ মানুষ ইইউতে থাকার পক্ষে ছিলেন।
গত নির্বাচনের আগে চালানো জরিপগুলোয় গড়ে ৫৩ শতাংশ ইইউতে থাকার পক্ষে এবং ৪৭ জন ইইউ ত্যাগের পক্ষে বলে দেখা গেছে, বলছেন অধ্যাপক কার্টিস।
তিনি বলছেন, এমনকি ২০১৬ সালের মতো আরেকটি গণভোটও যদি আবার হয় তাহলেও ইইউতে থাকার পক্ষে ৫২ শতাংশ ভোট পড়বে বলে দেখা গেছে।
তবে তার কথায়, এ ব্যবধান সামান্য, তাই নিশ্চিতভাবে কিছু বলা যায় না – বরং এটাই বলা যায় যে ব্রেক্সিট প্রশ্নে ব্রিটেনের জনমত প্রায় সমানে সমানে বিভক্ত হয়ে আছে।