যে ঔষুধ ফার্মেসিতে পাওয়ার কথা সেটা সেখানে নেই অথচ বেশী দামে পাওয়া যাচ্ছে রাস্তায় ! কিন্তু কেন ?  

অসাধু ঔষধ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে মাঠে নামছে মনিটরিং টিম, অভিযান যেন অব্যাহত থাকে 

যে ঔষুধ ফার্মেসিতে পাওয়ার কথা সেটা সেখানে নেই অথচ বেশী দামে পাওয়া যাচ্ছে রাস্তায় ! কিন্তু কেন ?  

পোস্টকার্ড ডেস্ক ।।

প্রাণঘাতি ভাইরাস করোনা সংকটকে পুঁজি করে দেশে যেসব অসাধু ব্যবসায়ী ওষুধ ও মেডিকেল ইকুইপম্যান্টের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে আজ থেকে মাঠে নামছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব মনিটরিং টিম ও মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সংস্থা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। 

গতকাল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত দ্রব্যমূল্য সংক্রান্ত টাস্কফোর্সের সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়। টাস্কফোর্সের প্রধান বাণিজ্য সচিব ড. মো. জাফর উদ্দিন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, করোনা মহামারীতেও যেসব ব্যবসায়ী মোড়কে লেখা মূল্যের চেয়ে অনৈতিকভাবে ওষুধ ও ওষুধ সামগ্রীর দাম বেশি রাখছেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মনিটরিং কার্যক্রম জোরদার করা হচ্ছে। আগামীকাল (আজ) থেকেই মনিটরিং টিম দুটো অভিযান পরিচালনা করবে বলে জানান তিনি।

ওষুধের বাজার খুবই অস্থির চট্টগ্রামে । করোনাভাইরাসের প্রকোপ বৃদ্ধির পর যেসব সাধারণ ওষুধ মিলতো সব ফার্মেসিতেই, হঠাৎ করে সেসব ওষুধ বাজার থেকে উধাও হয়ে গেছে। চট্টগ্রামে ওষুধের পাইকারি বাজার হাজারি গলিতেও পাওয়া যাচ্ছে না এসব ওষুধ। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানা গেছে, কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে বাড়ানো হয়েছে বেক্সিমকোর নাপা, স্কয়ারের ফেক্সো, জিমেক্স, সিভিট ট্যাবলেটের দাম। এই তালিকায় আছে অ্যান্টিহিস্টামিন, অ্যান্টিম্যালেরিয়াল ও অ্যাজিথ্রোমাইসিন জাতীয় ওষুধসহ জীবাণুনাশক সামগ্রীও।

গত মাস দুয়েক ওষুধ এবং স্যানিটাইজারসহ বিভিন্ন জীবাণুনাশক সামগ্রী নিয়ে অস্বাভাবিক বাণিজ্যে মেতেছে দেশ। শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে মানুষের পকেট থেকে। অতি সাধারণমানের ওষুধগুলো রাতারাতি বিশেষ মর্যাদা পেয়ে যায়। দোকানে দোকানে ঘুরেও ওষুধগুলো পাওয়া যায় না। সব দোকানেরই একই কথা-‘নেই।’ পরবর্তীতে পরিচিত কাউকে ধরে চড়া দাম ম্যানেজ করতে পারলে ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলেছে, কোভিড-১৯ রোগের চিকিৎসায় এখন পর্যন্ত নিশ্চিত কোনো ওষুধ আবিষ্কার হয়নি। বিশ্বের নানা দেশ ওষুধ আবিষ্কারের চেষ্টা করছে। তবে কয়েকজন চিকিৎসক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিছু কিছু ট্যাবলেটের নাম উল্লেখ করে বলেছেন, এগুলো সেবনে করোনা উপসর্গ কমে যায়। রোগ ভালো হয়। আর এরপর থেকেই ওষুধগুলোর বাজারে আকাল লাগে। বিশেষ করে ট্যাবলেট ইভারমেকটিন (৬ মিলিগ্রাম) সেবনের কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, রোগীর ওজন ৬০ কেজির নিচে হলে ২টি ট্যাবলেট এবং ৬০ কেজির ওপরে হলে ৩টি ট্যাবলেট একসঙ্গে খালি পেটে ১ বার খেতে হবে। ইভারমেকটিন-এর এই ট্যাবলেট স্ক্যাবো, ইভরা, প্যারাকিল ইত্যাদি নামে বাজারে পাওয়া যায়। ট্যাবলেট ফ্যাভিপিরাভির (২০০ মিলিগ্রাম) খাওয়ার কথা বলা হয়েছে। এই ট্যাবলেট বাজারে এ্যাকারভিয়া, ফ্যাভিপিরা, এ্যাভিগান ইত্যাদি নামে পাওয়া যায়। ম্যালেরিয়ার ট্যাবলেট হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন বাজারে পাওয়া যায় রিকোনিল নামে। অতি সহজে এসব ওষুধ পাওয়া যায় গলির মুখের ফার্মেসি থেকে শুরু করে বড় বড় সব ফার্মেসিতে। কিন্তু করোনার প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে এসব ওষুধ সোনার হরিণে পরিণত হয়েছে। বেক্সিমকো, স্কয়ারসহ দেশীয় বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির উৎপাদিত ওষুধের এই আকাল সাধারণ মানুষকে ভাবিয়ে তুলেছে। নাপার মতো অতি সাধারণ ওষুধ পাওয়াও কঠিন হয়ে উঠেছে।

করোনা পরিস্থিতিতে ব্যাপক চাহিদাকে পুঁজি করে চট্টগ্রাম মহানগরীতে ওষুধের বাজার অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিকারী অসাধু ওষুধ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে। ইতিমধ্যে মাঠে নেমেছে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ। অভিযানে এখন সতর্ক বা জরিমানা নয়। নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি মূল্যে ওষুধ বিক্রি করলেই তাৎক্ষণিক গ্রেপ্তারের লক্ষ্য নিয়েই এই অভিযানে নেমেছে পুলিশ।

এদিকে, আইনজীবী, কলামিস্ট, মানবাধিকার ও সুশাসনকর্মী জিয়া হাবীব আহসান এক বিবৃতিতে বলেছেন, ওষুধের বাড়তি দামে লঙ্ঘিত হচ্ছে ভোক্তা অধিকার। তিনি বলেন, একথা অস্বীকার করা যাবে না দেশে প্রয়োজনের তুলনায় সরকারি হাসপাতাল অপ্রতুল।সব পেশাতেই কম বেশি অবহেলার অভিযোগ পাওয়া যায়। বাংলাদেশে চিকিৎসা অবহেলা বা ভুল চিকিৎসা একটি অতি সাধারণ বিষয় হয়ে গিয়েছে। প্রায় প্রতিদিন কোন না কোন গণমাধ্যমে আমরা এই বিষয়ে জানতে পারছি। চিকিৎসা পেশার সাথে সংশ্লিষ্ট যারা আছেন তারা কেউ কেউ অধিক মুনাফা, গাফিলতি বা আইন না মানার কারণে চিকিৎসা অবহেলা করে চলেছেন। এই পেশাগত অবহেলার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষের জীবন বা সম্পদের ক্ষতিসাধন হচ্ছে। করোনা পরিস্থিতিতে দেশের ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ওষুধের দামের ক্ষেত্রে বাজার অর্থনীতির সুবিধা নিচ্ছে। অথচ মৃত্যুসঞ্জীবনী পণ্যের ক্ষেত্রে তা সম্পূর্ণ সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকার কথা। তাছাড়া ভোগ্যপণ্যের মতো ওষুধের বাজার প্রতিযোগিতামূলক নয়। সাধারণত ক্রেতাদের বাক্সভর্তি ওষুধের প্রয়োজন না থাকায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তারা প্যাকেটের গায়ের দাম দেখার সুযোগ পান না। তাছাড়া অন্যান্য পণ্যের মতো ওষুধের দাম সম্পর্কে রোগীদের সুস্পষ্ট ধারণা থাকে না বা দামাদামির ঘটনাও খুব বেশি হয় না।সবচেয়ে বড় কথা, মানুষ ওষুধ কেনে জীবন বাঁচাতে এবং শারীরিক সুস্থতার জন্য। প্রয়োজনকে গুরুত্ব দিয়ে এভাবেই প্রতিদিন অধিক মূল্যে ওষুধ কিনতে বাধ্য হন রোগীরা। বাংলাদেশে চিকিৎসা অবহেলা ও ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণে প্রতিকার পাবার জন্য সাংবিধানিক, দেওয়ানী, ফৌজদারি ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু বিদ্যমান আইনি ব্যবস্থায় নানা ধরনের সমস্যা বা সীমাবদ্ধতা রয়েছে। সবশেষে বলা যায়, বাংলাদেশে চিকিৎসা অবহেলার প্রতিরোধ বা প্রতিকার এর জন্য সরকারের আইনসভা, নির্বাহী বিভাগ ও বিচার বিভাগকে একসাথে কাজ করতে হবে।মাঝে মধ্যে কোম্পানিগুলো ওষুধের দাম না বাড়ালেও তবে দোকানিরা অধিক মুনাফা লাভের আশায় যদি দাম বাড়িয়ে থাকে তা দেখার দায়িত্ব ওষুধ প্রশাসনের। ওষুধ কেনায় ক্রেতাদের আরও সচেতন হতে হবে। ওষুধের গায়ের দাম দেখে নির্ধারিত মূল্যে ওষুধ কিনতে হবে। ভেজাল বিরোধী অভিযানও দরকার । জীবন রক্ষাকারী ওষুধ ভেজাল করা মৃত্যুদণ্ডযোগ্য সাজা হওয়া চাই ।

আপনারা সবাই জানেন, চট্টগ্রামের ঔষুধের দোকান গুলোর খুটির জোর কোথায়। তারা মানুষের জীবন বাঁচানোর ঔষুধ বিক্রি করে বলে ঔষুধের দোকান বন্ধ রেখে নানা আন্দোলন করে নানা সময়ে তাই খুব প্রয়োজনীয় বলে তারা মানুষকে জিম্মি করে রেখেছে সবকিছুর বিষয়ে।

যে ঔষুধ ফার্মেসিতে পাওয়া যাওয়ার কথা সে ঔষধ ঔষুধের দোকানের বারান্দায় কিংবা রাস্তায় পাওয়া যাচ্ছে বেশি দামে এই সিন্ডিকেটের সাথে কারা জড়িত ঔষুধের দোকান গুলো তল্লাশি করলে ঔষুধ গুলো অবশ্যই পাওয়া যাবে এবং তাদের দোকানগুলো তল্লাশি করা হউক।

মানুষকে বাঁচার সুযোগ করে দিন। তা না হলে জনগণ রাস্তায় নেমে গেলে কারো রক্ষা হবে না।এখনই ব্যবস্থা নিন নিত্য প্রয়োজনীয় ঔষুধ গুলোর দাম যা ছিল তা যেন নেওয়া হয় যতই পরিস্থিতি কঠিন হোক না কেন ।