বর্ণিল আয়োজনে ত্রিপুরাব্দ বরণ

বর্ণিল আয়োজনে ত্রিপুরাব্দ বরণ
বর্ণিল আয়োজনে ত্রিপুরাব্দ বরণ

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি ।। 

ত্রিপুরা জাতির আত্মপরিচয় ও স্বকীয় বৈশিষ্ট্য সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে বর্ণিল আয়োজনে খাগড়াছড়িতে ত্রিপুরা জনগোষ্ঠী নতুন বছর ত্রিপুরাব্দ–১৪৩৪ কে বরণ করেছে। 

শুক্রবার সকালে জেলার দীঘিনালা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করে বাংলাদেশ ত্রিপুরা যুব কল্যাণ সংসদ। শোভাযাত্রাটি উপজেলার বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে স্কুল মাঠে এসে শেষ হয়। মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জলনের মধ্য দিয়ে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। পরে ত্রিপুরা ঐতিহ্যবাহী বোতল নৃত্যসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক পরিবেশনা করেন শিল্পীরা।

বাংলাদেশ ত্রিপুুরা কল্যাণ সংসদের কেন্দ্রীয় সাবেক সভাপতি নলেন্দ্র লাল ত্রিপুরা জানান, ৫৯০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ত্রিপুরা জাতির ত্রিপুরাব্দ বা ত্রিপুরা সনের প্রচলন হয়। ১১৮তম ত্রিপুরা মহারাজা হিমতি ত্রিপুরা রাজ্যের সীমান্তবর্তী রাজ্য বঙ্গের শাসককে পরাজিত করে কিছু অংশ নিজের নিয়ন্ত্রণে আনেন। এই বিজয়কে স্মরণীয় করে রাখার জন্যে মহারাজ হিমতি ত্রিপুরাব্দ প্রবর্তন করেন।

বাংলাদেশ ত্রিপুরা যুব কল্যাণ সংসদ দীঘিনালা শাখার সভাপতি খোকন বিকাশ ত্রিপুরা বলেন, ত্রিং বা ত্রিপুরাব্দ পালিত হয় ১ তালহিং তারিখে। এই সময়কালে ত্রিপুরা জুমিয়াদের সব ফসল তোলার কাজ সম্পন্ন হয় এবং তারা নতুন জুম চাষ করার জন্য জায়গা সন্ধান করতে শুরু করে। তাই, জুমচাষের সাথে সামঞ্জস্য রেখে এই দিনটিকে ত্রিপুরাব্দের প্রথম দিন বা বর্ষ শুরুর দিন হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, ত্রিপুরা জাতির বর্ষপঞ্জিকে ত্রিপুরাব্দ বা ত্রিপুরা সন বলা হয়। এই ত্রিপুরাব্দের সংক্ষিপ্ত রূপই ‘ত্রিং‘। ত্রিপুরা মহারাজাদের আমলে সমসাময়িক বহু অঞ্চলের ভূপতিগণ ত্রিপুরাব্দকেই যথার্থ সন হিসেবে ব্যবহার করতেন। কুমিল্লা, সিলেট, নোয়াখালি, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন অঞ্চলের প্রাচীন দলিল–দস্তাবেজ যাচাই করলে এখনো ত্রিপুরাব্দের তারিখ ও সন পাওয়া যাবে। কিন্ত ১৯৪৯ সালে স্বাধীন ত্রিপুরা রাজ্য ভারত সরকারের অভ্যন্তরে অন্তর্ভূক্তির পর ত্রিপুরাব্দ ব্যবহার সীমিত হয়ে পরে। 

খালেদ / পোস্টকার্ড ;