বঙ্গবন্ধুর খুনি মাজেদকে ১০ জল্লাদ ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দিল, নতুন কেন্দ্রীয় কারাগারে এটিই প্রথম মৃত্যুদণ্ড

বঙ্গবন্ধুর খুনি মাজেদকে ১০ জল্লাদ ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দিল, নতুন কেন্দ্রীয় কারাগারে এটিই প্রথম মৃত্যুদণ্ড
বঙ্গবন্ধুর খুনি মাজেদকে ১০ জল্লাদ ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দিল। নতুন কেন্দ্রীয় কারাগারে এটিই প্রথম মৃত্যুদণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক ।।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত খুনি ক্যাপ্টেন (বরখাস্ত) আবদুল মাজেদের ফাঁসি কার্যকর করা হল ফিলিপাইন থেকে আনা ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে রাত ঠিক ১২টা ১ মিনিটে। কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোস্তফা কামাল পাশা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। নতুন কেন্দ্রীয় কারাগারে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের এটিই প্রথম ঘটনা।

রাত সাড়ে ১১টার দিকে মাজেদকে তওবা পড়ান একজন ইমাম। তখন মাজেদ কান্নাকাটি করেছেন। এর আগে তার স্ত্রীকে মাজেদের লাশ নেওয়ার জন্য ডাকা হয় কারাগার কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে।

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষ আগেই ফাঁসিতে ঝোালানোর সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করে রেখেছিল। মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আগে ফিলিপাইন থেকে আনা ফাঁসির রশিতে পিচ্ছিল জাতীয় পদার্থ ব্যবহার করা হয়। ১০ সদস্যের জল্লাদ টিম নিখুঁতভাবে সম্পন্ন করে ফাঁসি কার্যকরের পুরো বিষয়টি। ফাঁসি কার্যকর করতে জল্লাদ শাহজাহানের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি জল্লাদ টিম কাজ করেন। তাদের মধ্যে আবুল হোসেন, তরিকুল ইসলাম ও সোহেল রানা ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের কয়েদি। বাকি সদস্যদের নরসিংদী ও কাশিমপুর কারাগার থেকে আনা হয়।

শুক্রবার (১০ এপ্রিল) মাজেদের সঙ্গে পরিবারের ৫ সদস্যের একটি দল ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে সাক্ষাত করেন। এর মধ্যে স্ত্রী সালেহা, স্ত্রীর বোন ও বোন জামাই, ভাতিজা ও একজন চাচাশ্বশুর ছিলেন। তারা প্রায় ঘণ্টাখানেক কথা বলেছেন মাজেদের সঙ্গে।

এর আগে গত ৮ এপ্রিল জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অন্যতম খুনি ক্যাপ্টেন (বরখাস্ত) আব্দুল মাজেদের প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ করে দেন রাষ্ট্রপতি।

উল্লেখ্য, ৭ এপ্রিল ভোর পৌনে চারটায় বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি মাজেদকে মিরপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট (সিটিটিসি)। পরে তাকে আদালতে তোলা হলে বিচারক কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যাকারী এই মাজেদ দীর্ঘদিন বিদেশে পলাতক ছিলেন। গত মাসের যেকোনো সময় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত মাজেদ দেশে ফেরেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এর আগে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় আবদুল মাজেদসহ ১২ আসামিকে ২০০৯ সালে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের মধ্যে সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশীদ খান, বজলুল হুদা, এ কে এম মহিউদ্দিন আহমেদ ও মুহিউদ্দিন আহমেদের ফাঁসি ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি কার্যকর হয়।

রায় কার্যকরের আগে ২০০২ সালে পলাতক অবস্থায় জিম্বাবুয়েতে মারা যান আসামি আজিজ পাশা। মাজেদ গ্রেফতার হওয়ার পর বর্তমানে পলাতক রয়েছেন পাঁচজন। পলাতক আসামিরা হলেন খন্দকার আবদুর রশীদ, শরিফুল হক ডালিম, এস এইচ এম বি নূর চৌধুরী, এ এম রাশেদ চৌধুরী ও মোসলেম উদ্দিন। তারা সবাই সাবেক সেনা কর্মকর্তা। তারা বিভিন্ন দেশে পালিয়ে আছেন।