সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সংরক্ষিত আসনে প্রার্থী অনেক, ভোটারের আগ্রহ নেই

সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সংরক্ষিত আসনে প্রার্থী অনেক, ভোটারের আগ্রহ নেই
বাঁ থেকেআবিদা আজাদ, জেসমিনা খানম, রাধাদেবি টুনটু মুন, তাসলিমা নুরজাহান রুবি ও নাসরিন আক্তার। নীচে বাঁ থেকে নাদিরা সুলতানা হেলেন, ইসমত আরা জেরিন, ফারজানা আফরোজ আলম, নারর্গিস আক্তার নীরা, সখিনা বেগম ও সুপ্তি তলাপাত্র পলি।

সুমাইয়া নাজনীন।।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ আস্থা রাখলেন দলের দীর্ঘ দিনের পরীক্ষিত ত্যাগী নেতা নগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক রেজাউল করিম চৌধুরীর ওপর। 

অন্যদিকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সংরক্ষিত নারী আসনগুলোতে প্রার্থী হতে আগ্রহীদের সংখ্যা অনেক। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে তাদের আত্মপ্রচারমূলক প্রচারণাতেই সীমাবদ্ধ তাদের হই-হুল্লোর। আমরা সেই সমস্ত প্রার্থীদের সম্পর্কেই তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করছি যারা নির্বাচনের ব্যাপারে খুবই আগ্রহী ও তৎপর। আবার অনেকেই যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে ততটা দক্ষ নয়, একারণে অনেকের নাম আসলেও বাস্তবতার নিরিখে তাদের সবার নাম তুলে আনা সম্ভব নয়। আত্মপ্রচার নয়, যে সমস্ত প্রার্থী নির্বাচন করতে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন শুধুমাত্র তাদের তুলে ধরেই এই প্রতিবেদন।

জানা গেছে, আসন্ন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে সংরক্ষিত আসন ৯, ১০, ১১ থেকে এবারো নির্বাচন করবেন ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের সম্ভাব্য প্রার্থী বর্তমান নারী কাউন্সিলর আবিদা আজাদ। এছাড়াও দলটি থেকে এবার মনোনয়ন প্রত্যাশি আছেন ১৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নাদিরা সুলতানা হেলেন, মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী তাসলিমা নুরজাহান রুবি ও পান্না আকতার।

অন্যদিকে বিএনপি থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশি নগর মহিলাদল নেত্রী সখিনা বেগম ও আকবরশাহ থানা মহিলাদলনেত্রী জেরিন খান। গত দুইবারের কাউন্সিলর মিসেস আরজু শাহাবুদ্দিন রাজনৈতিক দৈন্যতার প্রেক্ষাপটে কাউন্সিলর নির্বাচন করবেন না বলে জানিয়েছেন। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছেন, শেষ পর্যন্ত তিনি হয়তো নির্বাচনে আসতে পারেন।

স্থানীয় ভোটার, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতা-কর্মী, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এখানে মূলতঃ বর্তমান কাউন্সিলর আবিদা আজাদ ও বিএনপি থেকে মনোনয়নপ্রাপ্তি সাপেক্ষে সখিনা বেগমের সাথে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে।

সাবেক কাউন্সিলর আরজু শাহাবুদ্দিন নির্বাচন না করলে বিএনপি থেকে নিশ্চিতভাবে মনোনয়ন পাবেন সখিনা বেগম।

নগরীর ১২, ২৩ ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত সংরক্ষিত আসনে এবারো কাউন্সিলর নির্বাচন করছেন ফারহানা জাবেদ। তবে অন্যপ্রার্থীদের ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি।  

নগরীর ১১নং দক্ষিণ কাট্টলী, ২৫নং রামপুর এবং ২৬নং উত্তর হালিশহর নিয়ে গঠিত সংরক্ষিত আসনে এবারো বর্তমান কাউন্সিলর বিএনপি নেত্রী জেসমীনা খানম দল থেকে মনোনয়ন পাচ্ছেন এটা প্রায় নিশ্চিত। অন্যদিকে এই ওয়ার্ডে নারী কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করতে মাঠে সবচেয়ে বেশি সরব রাধা দেবি টুনটু মুন। এরপরেই যার তৎপরতা চোখে পড়ে তিনি হচ্ছেন নার্গিস আকতার নীরা। তবে তাদের দু’জনের তৎপরতাই শুধুমাত্র ১১ নম্বর ওয়ার্ড কেন্দ্রিক। তাদের সাথে আছেন আরেক মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী সুপ্তি তলাপাত্র পলি। তবে তাদের অপেক্ষাকৃত তিন ওয়ার্ডেই কিছুটা বেশি সরব রয়েছেন রামপুর ওয়ার্ড মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারজানা আফরোজ আলম ও নাসরিন আকতার।

মাঠ পর্যায়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজনীতিতে আগে থেকে বেশ সক্রিয় রামপুর ওয়ার্ড মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারজানা আফরোজ আলম হাসিনা মহিউদ্দিনের অনুসারি। বাকিরা বিগত দু’এক বছরের ব্যবধানে বেশি সক্রিয় হয়েছেন। স্থানীয়দের ধারণা মতে, এখানে এবারো বর্তমান কাউন্সিলর জেসমীনা খানম এগিয়ে একক প্রার্থী হিসেবে। অন্যদিকে নার্গিস আকতার নীরা ও সুপ্তি তলাপাত্র কাউন্সিলর মোরশেদ আকতার চৌধুরীর অনুসারি হিসেবে পরিচিত। রাধাদেবি টুনটু মুন সংসদ সদস্য ডা. আফছারুল আমীন ও অধ্যাপক মো. ইসমাইল বলয়ে নির্বাচনী তৎপরতা চালাচ্ছেন বলে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে। অন্যদিকে নগর জাতীয় মহিলা শ্রমিক লীগের সভাপতি নাসরিন আকতারও আরেকটি বলয়ে থেকে তার তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।

তবে ক্ষমতাসীন দল হিসেবে এখানে বিএনপির নারীপ্রার্থীর সাথে লড়াই করার মতো কাউন্সিলরপ্রার্থী নেই বলে স্থানীয় ভোটারদের অভিমত। আর নারী কাউন্সিলর নিয়ে এলাকায় তেমন আগ্রহও নেই, যেমনটা আগ্রহ পুরুষ কাউন্সিলরদের নিয়ে রয়েছে।