পরীমনি কে? : মির্জা ফখরুল, ফখরুল সাহেব আমরা একসাথে মদ খেতাম : পরীমনি

পরীমনি কে? : মির্জা ফখরুল, ফখরুল সাহেব আমরা একসাথে মদ খেতাম : পরীমনি

পোস্টকার্ড ডেস্ক ।।

আলোচিত নায়িকা পরীমনির ধর্ষণ ও হত্যার চেষ্টা নিয়ে দেশে চলছে ব্যাপক আলোচনা। কিন্তু বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলছেন তিনি পরীমনিকে চেনেন না। বুধবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপির স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন কমিটির উদ্যোগে এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি বলেছেন,‘পরীমনি কে?’ তার এই প্রশ্নের পরে শুরু হয়েছে জল্পনা। যেখানে পরীমনিকে চেনেন না দেশে এমন কোন মানুষ নেই, সেখানে মির্জা ফখরুলের এমন মন্তব্যের কারণ কী? মির্জা ফখরুল কি আসলেই চেনেন না নায়িকা পরীমনিকে? প্রশ্নটির উত্তর খুঁজতে যেয়ে বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।

জানা গেছে, ৮ জুন রাতে ঢাকা বোট ক্লাবে নায়িকা পরীমনিকে ধর্ষণের করা হয়। এরপর পরীমনি বাদী হয়ে গত সোমবার নাসির ইউ মাহমুদ, অমিসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে সাভার থানায় মামলা করেন। পরীমনি ফেসবুক পেজে এবং মিডিয়ার সামনে সংবাদ সম্মেলনে তার ওপর ঘটে যাওয়া নির্যাতনের বর্ণনা তুলে ধরলে পুলিশ দ্রুত নাসির ইউ মাহমুদসহ জড়িতদের গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের পর নির্যাতকদের সম্পর্কে একে একে নানা তথ্য উঠে আসতে থাকে। তখন জানা যায়, পরীমনিকে নির্যাতনকারী ব্যবসায়ী নাছির ইউ মাহমুদ ঢাকা বোট ক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য (বিনোদন ও সংস্কৃতি)। অতীত ঘাটতে গিয়ে দেখা যায়, আশির দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এস এম হল শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন নাছির ইউ মাহমুদ। দীর্ঘদিন বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত থাকার পর একপর্যায়ে জাতীয় পার্টির রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন। বর্তমানে দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য তিনি।

সূত্র জানায়, পরীমনির নির্যাতনকারী নাছির বর্তমানে জাতীয় পার্টি করলেও প্রথম ভালোবাসা বিএনপির সাথে যোগাযোগ বন্ধ করেননি। বিএনপি নেতাদের সাথে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিলো। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সাথেও তার নিয়মিত দেখা হত। সারাদিন বিএনপির গুলশান অফিসে সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করে রাতের বেলা মির্জা ফখরুল ঢাকার বিভিন্ন ক্লাবে সময় কাটাতেন। তার এ কাজের ঘনিষ্ঠ সঙ্গী ছিলেন নাছির ইউ মাহমুদ। ঢাকা বোট ক্লাবেও যেতেন মির্জা ফখরুল। সেখানে কয়েকবার পরীমনির সাথে মির্জা ফখরুলের সাক্ষাৎ করিয়ে দিয়েছেন নাছির। কিন্তু একদিনের ঘটনায় পরীমনির সাথে মির্জা ফখরুলের দূরত্ব তৈরি হয়ে যায়। কিন্তু কি সেই ঘটনা?

পরীমনি বলেন, মির্জা ফখরুল সাহেব আমাকে চেনেন না শুনে আমি খুবই আশ্চর্য হয়েছি। ওনার সাথে আমার অনেকবার দেখা হয়েছে। আমার মনে হয়, উনি প্রতিহিংসাবশত এটা বলেছেন। নাছির ভাইয়ের সাথে তিনি বোট ক্লাবে নিয়মিত আসতেন। এছাড়া গুলশান ক্লাবেও ফখরুল সাহেবের সাথে দেখা হয়েছে। একদিনের ঘটনার পর থেকে মির্জা ফখরুলের সাথে আমার যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। পরিচয়ের সূত্রে আমরা একসাথে মদ খেতাম। একদিন রাতে মদের টেবিলে আমার পাশের চেয়ারে বসেন ফখরুল সাহেব। একটু সময় যেতেই তিনি আমার গায়ে হেলে পড়েন। আমি সরিয়ে দেই। কিন্তু বারবার পড়লে আমি জিজ্ঞেস করি এভাবে গায়ে পড়ছেন কেন? তখন ফখরুল সাহেব আমাকে তার সাথে শোয়ার প্রস্তাব দেন। বলেন, তোমার মত সুন্দরীকে পাওয়ার জন্য আমি সব করতে রাজি আছি। এটা শুনে আমি অবাক হয়ে যাই। তার মত একজন বৃদ্ধ মানুষ কিভাবে এই প্রস্তাব দেন আমাকে! আমি তাকে শ্রদ্ধা করতাম। এই ঘটনার পর সব শ্রদ্ধা উঠে যায়। তাকে বলি, তার সাথে আমার যোগাযোগ রাখা সম্ভব নয়। তখন মির্জা ফখরুল খুবই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখান। সরকারে আসলে আমাকে দেখে নেবেন বলে হুমকি দেন। আমার মনে হয়, সেই ক্ষোভ থেকেই আমাকে না চেনার কথা বলেছেন মির্জা ফখরুল।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএনপির নেতাদের নারী এবং মদপ্রীতি নতুন ঘটনা নয়। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ফ্রিজ ভর্তি মদ থাকত। তার সন্তান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান একজন দুর্নীতিবাজ, মদ্যপ এবং নারীলোভী ব্যক্তি। আর তারেকের ছোট ভাই আরাফাত রহমান কোকো তো অতিরিক্ত ফেন্সিডিল খাওয়ার কারণে অকালে মৃত্যুবরণ করেছেন। সেই দলের মহাসচিবের চরিত্র যে একই হবে তা বোঝাই যায়। বিশ্লেষকদের মত,পরীমনির কথা আমলে নিয়ে মির্জা ফখরুলের বিরুদ্ধেও তদন্ত করা উচিত।

সুত্র: বাংলা নিউজ ব্যাংক ।