দাঁড়িয়ে থাকা লরিতে নাকাল সীতাকুণ্ডের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক

দাঁড়িয়ে থাকা লরিতে নাকাল সীতাকুণ্ডের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক
দাঁড়িয়ে থাকা লরিতে নাকাল সীতাকুণ্ডের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক

বিশেষ প্রতিবেদক ।।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুণ্ডে মহাসড়কের দুই পাশ দখল করে তিনটি কনটেইনার ডিপোর অবৈধ গাড়ি পার্কিং গড়ে তোলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ‘লাইফ লাইন’ হিসেবে পরিচিত মহাসড়কের এ অংশে অব্যাহত লরি পার্কিংয়ের ফলে সড়ক সংকুচিত হয়ে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। এতে করে মহাসড়কের এই অংশে প্রতিনিয়ত যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুণ্ড উপজেলার সোনাইছড়ি, কাশেম জুট মিলস ও ভাটিয়ারীর বানুর বাজার এলাকায় অবস্থিত তিনটি কনটেইনার ডিপোতে প্রতিদিন হাজারো পণ্যবাহী যানবাহন আসা-যাওয়া করে। এই ডিপোগুলোর ধারণক্ষমতার চেয়েও অতিরিক্ত গাড়ি আসায় ভেতরে জায়গা না পেয়ে সড়কের একপাশ দখল করে দাঁড়িয়ে থাকে। এতে সড়ক সংকীর্ণ হয়ে যায়। ফলে মহাসড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়।

তাঁরা আরও জানান, মহাসড়কের এই যানজট এখন নিত্যদিনের ঘটনায় পরিণত হয়েছে। আর তীব্র যানজটে পড়ে নাকাল হচ্ছেন যাত্রী ও গাড়িচালকেরা। লকডাউনেও এই তিন কনটেইনার ডিপোর কারণে এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।

বারো আউলিয়া এলাকার বাসিন্দা সালাউদ্দীন বলেন, ডিপোগুলোর সামনে প্রতিদিন তীব্র যানজট হয়। সাধারণ মানুষ, জরুরি রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি সেবায় নিয়োজিত গাড়িও আটকে থাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। কিন্তু এসব ডিপোর মালিকদের এ নিয়ে কোনো মাথাব্যথা নেই।

যানজটের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন যাত্রী মহিউদ্দীন বলেন , চাকরির জন্য প্রতিদিন ভোরে শহরে ছুটতে হয়। তবে আসা-যাওয়ার সময় ডিপোর গাড়িগুলোর কারণে যানজটে পড়তে হয়। তবে সপ্তাহের প্রতি বৃহস্পতিবার মহাসড়কের ফৌজদারহাট থেকে সোনাইছড়ি পর্যন্ত ১২-১৪ কিলোমিটারজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়।

ভুক্তভোগী একাধিক গাড়িচালক জানান, ঢাকা-চট্টগ্রামে ‘লাইফ লাইন’খ্যাত মহাসড়কের এ অংশে প্রতিদিন ৩৫-৪০ হাজার গাড়ি চলাচল করে। বিকেলের দিকে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ঢাকা অভিমুখে হাজারো গাড়ি যাত্রা করলে চট্টগ্রামের প্রবেশদ্বার সীতাকুণ্ডে যানবাহনের চাপ সৃষ্টি হয়। তবে সড়কের পাশে থাকা শিল্পপ্রতিষ্ঠানের গাড়িগুলোর কারণে রাস্তা সংকুচিত হয়ে যায়। এতে মহাসড়কের এই অংশে অব্যাহত যানজটের পাশাপাশি দুর্ঘটনায় অনেকে হতাহত হচ্ছেন।

সীতাকুণ্ড থেকে চট্টগ্রামগামী বাস ‘সীতাকুণ্ডের চাকার’ চালক বাদসা বলেন, ‘মহাসড়কের এ অংশে আমাদের প্রতিনিয়ত গাড়ি চালাতে গিয়ে চরম অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়। সড়কের পাশজুড়ে গড়ে ওঠা শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর সামনে এবং আরও বেশকিছু স্থানে মহাসড়কের ওপরই সবসময় লং বেইকল, লরি, ট্রাক ইত্যাদি দাঁড়িয়ে থাকে। এসব গাড়িকে ওভারটেকিং করে চলতে হয় আমাদের। তা করতে গিয়ে মহাসড়কের মাঝামাঝি গাড়ি চালাই। এতে অনেক সময় দুর্ঘটনাও ঘটে। তাতে আমাদের কিছু করার থাকে না।’ মহাসড়ককে নিরাপদ করতে এসব অবৈধ পার্কিং বন্ধ করার জোর দাবি জানান তিনি।

এদিকে যানজটের কারণে দুর্ভোগের কথা মেনে নিয়ে বারো আউলিয়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজি নাজমুল হক বলেন, এখানে ডিপোতে তাদের ধারণক্ষমতার চেয়েও অনেক বেশি পণ্যবাহী গাড়ি আসে। এসব গাড়ি ডিপোতে স্থান না পেয়ে মহাসড়ক দখল করে দাঁড়িয়ে থাকে। এ কারণে যানজট হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমরা মহাসড়ক যানজটমুক্ত রাখতে সংশ্লিষ্ট ডিপোগুলোর কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার অনুরোধ করেছি। প্রতিবারই তাঁরা সড়ক যানজটমুক্ত রাখার প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবে তা করছেন না। বিষয়টির সমাধানে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে বলে জানান তিনি।

খালেদ / পোস্টকার্ড ;