তবে কি ‘জামায়াতের ‌বি টিম’ নিয়েই সরকার হটানোর নীলনকশা কায়েম করতে হেফাজতের নতুন কমিটি !

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন যে, দেলোয়ার হোসেন সাঈদী যেমন দীর্ঘদিন আনুষ্ঠানিকভাবে জামায়াত করেননি। কিন্তু জামায়াত দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ঠিক তেমনি জুনায়েদ বাবুনগরী আনুষ্ঠানিকভাবে জামায়াত না করলেও জামায়াতের একজন ‘থিঙ্ক ট্যাংক’ হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন।

তবে কি ‘জামায়াতের ‌বি টিম’ নিয়েই সরকার হটানোর নীলনকশা কায়েম করতে হেফাজতের নতুন কমিটি !
তবে কি ‘জামায়াতের ‌বি টিম’ নিয়েই হেফাজতের নতুন কমিটি !

পোস্টকার্ড প্রতিবেদক।।

কুখ্যাত ধর্মব্যবসায়ী মামুনুল হকসহ গ্রেফতার হওয়া হেফাজত নেতাদের বাদ দিয়ে ৩৩ সদস্যের নতুন কমিটি গঠন করেছে হেফাজত। যার নেতৃত্বে রয়েছেন অন্তত চারটি মামলায় অভিযুক্ত আসামি জুনায়েদ বাবুনগরী নিজেই।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে যে, আসলে জুনায়েদ বাবুনগরীর কোন রকম পরিবর্তন ঘটেনি। এমনকি সরকারকে হটাতে ইসলামী বিপ্লবের নীলনকশা কায়েম থেকে সরেও আসেননি তিনি। বরং বিএনপির একটি অংশ জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের আরেক কৌশল —‌‌ এই নতুন কমিটি।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জুনায়েদ বাবুনগরী তার বাঁচার ঢাল হিসেবে হেফাজতের নতুন কমিটি করেছেন। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলার তদন্ত চলমান। তবে এখনও তিনি গ্রেফতার হচ্ছে না; সেটি একটি বড় প্রশ্নও বটে।

জুনায়েদ বাবুনগরী এখন কৌশলগত কারণেই দুই পা পিছিয়ে গেছেন কিন্তু পিছিয়ে গিয়েও তিনি এখনও জামায়াত-বিএনপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। নতুন কমিটি করার ক্ষেত্রে জুনায়েদ বাবুনগরী সম্পূর্ণভাবে জামায়াতের উপর নির্ভর করেছেন এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

আল্লামা শফীর মৃত্যুর পর জুনায়েদ বাবুনগরী হেফাজতের যে কমিটি করেন সেই কমিটিতে তিনি কেবল আহমদ শফীর পক্ষাবলম্বীদেরকে বাদ দেননি, তিনি একটি রাজনৈতিক আবরণ দিয়েছিলেন। যারা বিএনপি-জামায়াতের ২০ দলীয় জোটে আছে তাদেরকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। পাশাপাশি দুর্নীতিবাজ তথাকথিত মাওলানাদেরকেও তিনি নেতৃত্বে এনেছিলেন। এর লক্ষ্য ছিল দু’টি। প্রথমত, সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের একটি ফন্ট হিসেবে কাজ করা। আর দ্বিতীয়ত, চাপ দিয়ে অর্থ লুটপাট করা।

মামুনুলসহ হেফাজত নেতাদের গ্রেফতারের পর দেখা যায়, হেফাজতের বিভিন্ন নেতৃবৃন্দের অবৈধ সম্পদের পাহাড় রয়েছে। এমনকি জুনায়েদ বাবুনগরীরও বিপুল বিত্তের সন্ধান পেয়েছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থারা। আর এসব নিয়ে যখন তদন্ত চলমান। ঠিক সেই সময় জামায়াতকে দিয়ে একটি নতুন কমিটি করেছেন। যেখানে জুনায়েদ বাবুনগরী নিজে আমির এবং নুরুল ইসলাম জিহাদীকে মহাসচিব করে মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হিসেবে নতুন কমিটি ঘোষণা করলেন।

আগের কমিটিতে হেফাজতের কিছু কিছু নেতা খেলাফত, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন বা অন্যান্য ইসলামপন্থী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তবে একটি মূল অংশ গোপনে জামায়াতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন। মূলত জামায়াতপন্থীরাই নিয়ন্ত্রণ করত। আপাতদৃষ্টিতে নতুন কমিটির সদস্যদের কোন রাজনৈতিক পরিচয় পাওয়া না গেলেও এরা প্রত্যেকেই জামায়াতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। জামায়াতের যে আন্ডারগ্রাউন্ড কর্মী তারাই মূলত হেফাজতের নেতৃত্বে এসেছেন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, জামায়াতই হেফাজতকে চালায়। জুনায়েদ বাবুনগরীর সঙ্গে জামায়াতের দীর্ঘদিনের সম্পর্ক। জুনায়েদ বাবুনগরী যেহেতু পাকিস্তানে ছিলেন, দীর্ঘদিন পাকিস্তান থেকে পড়াশোনা করে এসেছেন। তিনি পাকিস্তানপন্থী এবং জামায়াতের একজন ‘থিঙ্ক ট্যাংক’।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন যে, দেলোয়ার হোসেন সাঈদী যেমন দীর্ঘদিন আনুষ্ঠানিকভাবে জামায়াত করেননি। কিন্তু জামায়াত দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ঠিক তেমনি জুনায়েদ বাবুনগরী আনুষ্ঠানিকভাবে জামায়াত না করলেও জামায়াতের একজন ‘থিঙ্ক ট্যাংক’ হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন। হেফাজতের নতুন কমিটিটি আসলে ‘জামায়াতেরই ‌বি টিম’। এই কমিটির গঠনের নেপথ্যে স্বাধীনতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীর দল জামায়াত ইসলাম।