জাতির জনকের স্বপ্ন আমরা পূরণ করেছি

জাতির জনকের স্বপ্ন আমরা পূরণ করেছি
জাতির জনকের স্বপ্ন আমরা পূরণ করেছি

সোহেল রানা ।।

রাজনীতির সঙ্গে ষাটের দশক থেকেই আমি জড়িয়ে । ১৯৬১ ও ১৯৬৩ সালে ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হই। ১৯৬৬ সালে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের সহসাধারণ সম্পাদক হই। আব্দুর রাজ্জাক ভাই ছিলেন তখন জেনারেল সেক্রেটারি। সত্তরের নির্বাচনে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরে টালবাহানা শুরু করে পাকিস্তানিরা। একাত্তর সালের মার্চের প্রথম দিন ইয়াহিয়া খান স্থগিত ঘোষণা করে জাতীয় পরিষদের অধিবেশন।

প্রতিবাদে ফেটে পড়ে বাংলার মানুষ। মিছিলে-স্লোগানে উত্তাল হয়ে ওঠে বাংলার রাজপথ। আমরাও নেমে আসি পথে। সাতই মার্চ বঙ্গবন্ধু রেসকোর্স ময়দানে ডাক দেন স্বাধীনতার। বিভিন্ন এলাকায় মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি শুরু হয়। গঠিত হয় সংগ্রাম পরিষদ, খোলা হয় প্রশিক্ষণ শিবির। আমরা সংগঠিত হতে থাকি।

২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ঝাঁপিয়ে পড়ে বাংলার মানুষের ওপর। বঙ্গবন্ধু দেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। দীর্ঘ ৯ মাস অস্ত্র হাতে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াইয়ের চূড়ান্ত ফল আসে ডিসেম্বরে। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পরাজিত পাকিস্তানিরা আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। আমরা বিজয় অর্জন করি। বিশ্বের মানচিত্রে উদিত হয় নতুন স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র বাংলাদেশ।

আজও ১৬ ডিসেম্বর এলেই আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে উঠি। মনে জেগে উঠে অতীত দিনের স্মৃতি। বিজয়ের এ দিনের প্রতীক্ষায় আমরা ৯ মাস মরণপণ যুদ্ধ করেছি। আমার দলের অধিনায়ক ছিলেন মোস্তফা মাসুম মন্টু। কেরানীগঞ্জসহ বেশ কয়টি স্থানে যুদ্ধ করেছি। কখনও খেয়ে; কখনও না খেয়ে যুদ্ধের ময়দানে কাটাতে হয়েছে।

বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন একটা ফ্ল্যাগ চাই, একটা দেশ চাই, একটা জাতি চাই। তাঁর নির্দেশে আমরা যুদ্ধ করেছিলাম। আল্লাহতায়ালা আমাদের তিনটিই দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আমরা পূরণ করেছি।

স্বাধীন বাংলাদেশে আমি প্রথম মুক্তিযুদ্ধের ছবি ‘ওরা এগারো জন’ নির্মাণ করি। আমি ছিলাম এ ছবির প্রযোজক। ছবিটি নির্মাণ করা হয়েছিল আমাদের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি রক্ষার্থে।

লেখক : সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও রাজনীতিক ।।