চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীরা সিদ্ধান্ত না মানলে ব্যবস্থা : মোশাররফ

বিদ্রোহী প্রার্থীদের নিয়ে সমন্বয় সভা ৫ মার্চ

চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীরা সিদ্ধান্ত না মানলে ব্যবস্থা : মোশাররফ
চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীরা সিদ্ধান্ত না মানলে ব্যবস্থা : মোশাররফ

নিজস্ব প্রতিবেদক ।।

আসন্ন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থীর প্রধান সমন্বয়ক ,আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এম.পি বলেছেন, আসন্ন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের প্রার্র্থীর বিজয় নিশ্চিত করতে মহানগর, থানা ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের প্রত্যেক নেতাকর্মীকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। প্রত্যেক নেতাকর্মীকে ভোটারদের ঘরে ঘরে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রেজাউল করিম চৌধুরীর সালাম পৌঁছে দিতে হবে।

আওয়ামী লীগের দলীয় সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী ছাড়া বিভিন্ন ওয়ার্ডে অন্য যারা প্রার্থী হয়েছেন (বিদ্রোহী) তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও সভায় সিদ্ধান্ত হয়। আগামী ৫ মার্চ বিদ্রোহী প্রার্থীদের নিয়ে প্রথমে একটি সমন্বয় সভা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। যদি মহানগর আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত কেউ অমান্য করে তাহলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে সভায় ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এম.পি তার বক্তব্যে বলেন।

এছাড়াও মহানগর আওয়ামী লীগের ৭১ সদস্যের কমিটির মধ্যে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা ছাড়া অন্যান্য কর্মকর্তাদের নগরীর একেকটি ওয়ার্ডের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির দায়িত্ব দেয়ার ব্যাপারেও আলোচনা হয়েছে। আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান হিসেবে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য প্রফেসর ড. অনুপম সেন এবং সদস্য সচিব হিসেবে মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুলের নাম প্রস্তাব করা হয় সভায়। গতকাল বিকেলে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির জরুরি সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এম.পি।

তিনি বলেন, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক ভিত্তি অত্যন্ত শক্তিশালী। এই সংগঠনের প্রাণপুরুষ প্রয়াত জননেতা এম. এ মান্নান, সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর মতো নেতারা এই সংগঠনকে আজকের অবস্থায় উন্নীত করেছেন এবং আন্দোলন সংগ্রামে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ সর্বাগ্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। আজকের যারা নেতৃত্বে আছেন তারাও সেই ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন রেখে দলের হাল ধরেছেন। তাদেরই একজন মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, মুক্তিযোদ্ধা এম. রেজাউল করিম চৌধুরীকে জননেত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নৌকা প্রতীক দিয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী এবং চট্টগ্রামবাসীকে ধন্য করেছেন। তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, নির্বাচনী আচরণ বিধির প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে নির্বাচনে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে সরব উপস্থিতির অবশ্যই উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। আসন্ন নির্বাচন নিয়ে প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক শক্তি নানা অজুহাত তৈরি করছে এবং নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে বিভিন্ন অপকৌশল প্রয়োগ করতে তৎপর। এসবকে মোকাবিলা করতে আসন্ন মেয়র নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিত করতে মহানগর আওয়ামী লীগ যে উদ্যোগ ও পরিকল্পনা এবং কৌশল নির্ধারণ করে দেবে তা প্রত্যেক নেতাকর্মীকে আন্তরিকভাবে অনুসরণ করতে হবে।

দারুল ফজল মার্কেটস্থ দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন আসন্ন চসিক নির্বাচনের নানান দিক তুলে ধরেন এবং সাংগঠনিক নির্দেশনাগুলো যথাযথভাবে লালন ও ধারণ করে নির্বাচনী প্রচারণা ও কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে যারা কাউন্সিলর পদে মনোনয়ন নিয়েছেন তাদের ব্যাপারে কেন্দ্রকে অবহিত করবেন বলে জানান। এছাড়া আগামী ৫ মার্চ একটি সমন্বয় সভা করার কথা জানান তিনি।

সভায় ঐতিহাসিক ৭ মার্চ যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন উপলক্ষ্যে ৪৩টি সাংগঠনিক ওয়ার্ডে দিনব্যাপী বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ সম্প্রচার করা এবং বিকেল ৩টায় মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আলোচনা সভার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এছাড়া অন্যান্য গৃহীত সিদ্ধান্তের মধ্যে রয়েছে ৮ মার্চ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে বিশেষ বর্ধিত সভা, ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী পালনে ব্যাপক কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। মহানগর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং দলীয় মেয়র প্রার্থী এম. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, নেত্রী আমাকে নৌকা প্রতীক দিয়েছেন। শেখ হাসিনাকে এই নৌকা প্রতীককে বিজয়ী করে উপহার দেওয়ার নেতাকর্মীদের নৈতিক দায়িত্ব। সভাপতির বক্তব্যে মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, চসিক নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কেউ দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমরা আমাদের সঠিক অবস্থান নির্ণয় করে ঘরে ঘরে গিয়ে ভোটাদের মন জয় করে বিনয়ী আচরণ করতে হবে। তাহলে নৌকার বিজয় শতভাগ নিশ্চিত হবে।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি নঈম উদ্দিন চৌধুরী, এডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, খোরশেদ আলম সুজন, জহিরুল আলম দোভাষ, আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য এম.এ রশিদ, নোমান আল মাহমুদ, শফিক আদনান, চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, শফিকুল ইসলাম ফারুক, সৈয়দ হাসান মাহমুদ শমসের, চন্দন ধর, মশিউর রহমান চৌধুরী, আহমেদুর রহমান ছিদ্দিকী, মো. হোসেন, জহুর আহমেদ, জোবায়েরা নার্গিস খান, দেবাশীষ গুহ বুলবুল, দিদারুল আলম চৌধুরী প্রমুখ।