চট্টগ্রামে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা, বাড়ছে মৃত্যুও - করোনাভাইরাস হয়ে উঠেছে আরও ভয়ঙ্কর

শ্বাসকষ্টের উপসর্গ হঠাৎই আশঙ্কাজনকহারে বেড়েছে

চট্টগ্রামে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা, বাড়ছে মৃত্যুও - করোনাভাইরাস হয়ে উঠেছে আরও ভয়ঙ্কর
চট্টগ্রামে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা, বাড়ছে মৃত্যুও - করোনাভাইরাস হয়ে উঠেছে আরও ভয়ঙ্কর

নিজস্ব প্রতিবেদক ।।

প্রথম দিকে শনাক্ত হওয়া রোগীদের বেশিরভাগের মধ্যেই কোনো উপসর্গ না থাকলেও এখন দৃশ্যমান উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও।

চট্টগ্রামে করোনাভাইরাস হয়ে উঠেছে আরও ভয়ঙ্কর  । দিন দিন রূপ বদলে অনেকটাই জটিল হয়ে উঠছে করোনাভাইরাস। চিকিৎসকরা বলছেন, শনাক্তের সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি আক্রান্ত রোগীদের ওপর ভাইরাসের প্রভাবের ক্ষেত্রেও ঘটেছে আশংকাজনক পরিবর্তন।

করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা চট্টগ্রামে গত কয়েকদিন ধরে বাড়ছে। প্রথম এক মাসে যেখানে ৮১ জন করোনা পজিটিভ রোগী শনাক্ত হয়েছিল, সেখানে গত ১৫ দিনে শনাক্তের পরিমাণ প্রায় ১০ গুণ বেড়ে হয়েছে ৮৪৫ জন। এর মধ্যেই চিকিৎসকরা আভাস দিচ্ছেন, চট্টগ্রামে করোনাভাইরাস তার উপসর্গ বদলাচ্ছে। তারা বলছেন, প্রথম দিকে শনাক্ত হওয়া রোগীদের বেশিরভাগের মধ্যেই কোনো উপসর্গ না থাকলেও এখন দৃশ্যমান উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। সেই সাথে মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়ছে ।

সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রামে করোনাভাইরাস শনাক্তের প্রথম ৩০ দিনে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল। গত ১৫ দিনে সেই মিছিলে যোগ দিয়েছেন আরও ৩২ জন। তাছাড়া গত কয়েক দিনে নতুন শনাক্তদের মধ্যে প্রতিদিন প্রচুর শ্বাসকষ্ট, জ্বর, কাশিসহ নানান দৃশ্যমান উপসর্গ নিয়ে হাসপাতাল এসেছেন। এসব কারণে চিকিৎসকরা আশংকা করছেন চট্টগ্রামে ইতোমধ্যে হয়তো করোনা জিন পরিবর্তন হয়েছে। প্রথমদিকে অনেকটা সাদামাটা থাকলেও এই পর্যায়ে এসে আগের চেয়েও ভয়ংকর হয়ে উঠছে ভাইরাসটি।

চট্টগ্রামে করোনা চিকিৎসায় বিশেষায়িত জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. আব্দুর রব বলেন, ‘আমরা ধারণা করছি চট্টগ্রামে করোনাভাইরাস তার চরিত্র বদলেছে। গত কয়েকদিন ধরে হাসপাতালে যারা আসছেন, তাদের মধ্যে মোটামুটি ২০ শতাংশ রোগীর মধ্যে শ্বাসকষ্ট রয়েছে। প্রথম এক মাসে এটি ২-৩ শতাংশের মত ছিল।’

তিনি বলেন, ‘গত কয়েকদিনে মৃত্যু সংখ্যাও বেড়েছে অনেক। এদের মধ্যে বয়সে অপেক্ষাকৃত তরুণও আছেন কয়েকজন। প্রথম দিকে পজিটিভ হওয়া রোগীদের চেয়ে এখন যারা পজিটিভ হচ্ছেন তাদের অবস্থা তুলনামূলকভাবে খারাপ। তাই ধারণা করছি এর মধ্যে হয়তো ভাইরাসটির জিন পরিবর্তন হয়েছে। ফলে রোগীদের শরীরে তার প্রভাবেও পরিবর্তন এসেছে। তবে এটি এখনই আমরা নিশ্চিত করে বলতে পারছি না। আমরা আরও সপ্তাহখানেক সময় নিতে চাই।’

‘আমাদের ১০টি আইসিইউ বেডের সবগুলোতেই রোগী আছে, যাদের সবাই শ্বাসকষ্টে ভুগছে। দুই একজনের অবস্থা বেশি খারাপ’-যোগ করেন ডা. আব্দুর রব।

চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা শুরু হয় ২৫ মার্চ। প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় ৩ এপ্রিল। এক মাস পর ৩ মে পর্যন্ত চট্টগ্রামে মোট করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছিলেন ৮১ জন, যাদের ২০ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন আর মারা গেছেন ৬ জন রোগী। মাত্র ১৫ দিন পরে ১৮ মে মোট করোনা পজিটিভ শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়ায় ৮৪৫ জন। এই সময়ের মধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান আরও ৩২ জন। সবমিলিয়ে চট্টগ্রামে করোনায় আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করেছেন ৩৮ জন। তাছাড়া ১১৫ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ।