খালেদা জিয়া অ্যাডভ্যান্সড ট্রিটমেন্টের সম্মতি দেননি

খালেদা জিয়া অ্যাডভ্যান্সড ট্রিটমেন্টের সম্মতি দেননি
অসুস্থ বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।

পোস্টকার্ড ডেস্ক ।।

বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যগত প্রতিবেদন হাইকোর্টে দাখিল করা হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, তিনি ডায়বেটিস, হাইপার টেনশন, অ্যাজমা, বাতজ্বর ও কাঁশিসহ ব্যাকপেইনে ভুগছেন। তাকে অ্যাডভ্যান্সড ট্রিটমেন্ট দেওয়ার বিষয়ে তার মতামত জানতে চেয়েছিলো সাত সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড। কিন্তু তিনি অ্যাডভ্যান্সড ট্রিটমেন্ট গ্রহণের বিষয়ে কোনো সম্মতি দেননি।

আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের ডিভিশন বেঞ্চে এ প্রতিবেদন নিয়ে আসেন সুপ্রিমকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. আলী আকবর। এরপরই রিপোর্টটি আদালতে পড়ে শোনান বেঞ্চের জেষ্ঠ্য বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। রিপোর্ট উপস্থাপনের পর খালেদা জিয়ার আইনজীবী মওদুদ আহমদ বলেন, খালেদা জিয়া কেন অ্যাডভ্যান্সড ট্রিটমেন্টের সম্মতি দেননি সেটা জানা দরকার। হয়ত এই ট্রিটমেন্ট গ্রহণে তার জীবন শঙ্কায় পড়তে পারে। এই দিক বিবেচনায় হয়ত তিনি অনুমতি দেননি।

তাঁর আরেক আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেন, আমাদের আইনজীবীদের মধ্যে এ বিষয়টি নিয়ে পরামর্শ করা দরকার। এ জন্য বিষয়টি রবিবার আদেশের জন্য দিন ধার্য করেন।

আদালত বলেন, আপনারা মেডিক্যাল রিপোর্ট চেয়েছিলেন, আমরা সেই রিপোর্ট তলব করেছি। রিপোর্ট আদালতে এসেছে। এখন ওই রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে আমরা পরবর্তী আদেশ দেব। জবাবে জয়নুল আবেদীন বলেন, আমাদের একটি সম্পূরক আবেদন রয়েছে। আমরা আবেদনটি আপনার আদালতে দিতে চাই।

এপর্যায়ে আদালত বলেন, ‘কোনো আবেদন নেওয়া হবে না। আমরা আজকেই আদেশ দেব।’ তখন জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘আমাদের সম্পূরক আবেদনটি দিতে দেন। তারপর শুনে আদেশ দেন। আমাদের কোনো আপত্তি নেই।’

পরে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, খালেদা জিয়ার এই রোগগুলো দেীর্ঘদিন ধরেই আছে। যখন কোনো বন্দী কারাগারে থাকেন তখন সরকারেরও তার বিষয়ে উদ্বেগ থাকে। এ পর্যায়ে কোনো সম্পূরক আবেদন দেয়ারও সুযোগ নেই।

এরপরই আদালত দুপুর দুইটা পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন।

এর আগে জিয়া চ্যারিটেবল মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন চেয়ে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদনটি দাখিল করেন আইনজীবী সগির হোসেন লিয়ন। পরে খালেদা জিয়ার অন্যতম আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন হাইকোর্টে এই আবেদনের শুনানির দিন ধার্যের জন্য আবেদন করেন।

২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা জরিমানা করে ঢাকার বিশেষ আদালত-৫। ওই সাজার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করে জামিন চান তিনি। বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন সরাসরি খারিজ করে দেন। ওই খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন খালেদা জিয়া। সর্বোচ্চ আদালত খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যগত প্রতিবেদন চান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল (বিএসএমএমইউ) কর্তৃপক্ষের কাছে। পরে খালেদা জিয়ার মেডিকেল রিপোর্ট প্রদানের বিষয়ে বোর্ড গঠন করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ওই প্রতিবেদন আসার পর প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ গত ১২ ডিসেম্বর খালেদা জিয়াকে জামিন না দিয়ে আবেদনটি নিষ্পত্তি করে দেয়। আদালত বলেন, খালেদা জিয়ার সম্মতি পেলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে অ্যাডভান্স ট্রিটমেন্ট দিবে।

এদিকে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় ১০ বছরের সাজার বিরুদ্ধে আপিল করেছেন খালেদা জিয়া। ওই আপিল আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট দীর্ঘদিন ধরে পরে আছে। কিন্তু শুনানির কোনো উদ্যোগ নেননি আইনজীবীরা।