​​​​​​​কেএসআরএমের বন্ধ ইয়ার্ডে কাজ চলাকালে ফের দুর্ঘটনায় শ্রমিক আহত!

​​​​​​​কেএসআরএমের বন্ধ ইয়ার্ডে কাজ চলাকালে ফের দুর্ঘটনায় শ্রমিক আহত!
আহত শ্রমিক মজিদুল হক।

সীতাকুন্ড প্রতিনিধি।।

সীতাকুন্ড উপজেলার বার আউলিয়ায় কবির স্টিল শিপ রিসাইক্লিং ফ্যাসিলিটি ইয়ার্ডের সকল কার্যক্রম বন্ধ করেন শিল্প মন্ত্রণালয় । গত ১ ফেব্রুয়ারি আরিফুল ইসলাম সুজন নামে এক শ্রমিক নিহতের ঘটনায় ইয়ার্ড বন্ধ ঘোষণা করে। সেই বন্ধ ইয়ার্ডে ফের দুর্ঘটনায় এক শ্রমিক আহত হয়েছেন!

অবশ্য মন্ত্রণালয় ও সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার তথ্য অনুযায়ী ইয়ার্ডটি বন্ধ রয়েছে। এই বন্ধ ইয়ার্ডে কিভাবে দুর্ঘটনা ঘটলো সেই প্রশ্নই এখন সামনে এসেছে। ইয়ার্ড চালু থাকা নিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। স্থানীয় ও শ্রমিক নেতারা, বলছেন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অমান্য করে ইয়ার্ডের কার্যক্রম চালু রেখেছে কেএসআরএম। শুধু দেখছেন না উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা।

নিহত শ্রমিক সুজনের মৃত্যুর প্রকৃত তথ্য ধামাচাপা, শ্রমিক মারধর ও ইয়ার্ডের কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা নিয়ে গত ২ ফেব্রুয়ারি কেএসআরএমের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছিল জাহাজ ভাঙা শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন ফোরাম।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মিজানুর রহমান জানান, ১ ফেব্রুয়ারি সুজনের মৃত্যুর ঘটনায় ১৪ ফেব্রুয়ারি ইয়ার্ডের সকল কার্যক্রম বন্ধ করা হয়। ওই আদেশ এখনো বলবত আছে। বিভিন্ন মাধ্যমে খবর পেয়ে আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে তদন্ত করিয়েছি। নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়ার্ড বন্ধ বলে জানিয়েছে। 

জানা গেছে, গত ৭ এপ্রিল বিকাল সাড়ে ৩টায় নোয়াখালী বসুরহাট এলাকার বাসিন্দা মুজিদুল হক (৩৬) কাজ করার সময় আহত হন। ৩ সন্তানের জনক মুজিদুল হক ইয়ার্ডে কাটার হেলপার হিসাবে কর্মরত ছিলেন। লোহার পাত পড়ে হাতে গুরুতর আহত হন। হাতে প্লাস্টার করে গলার সঙ্গে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে চিকিৎসার যাবতীয় খরচ কবির স্টিল বহন করছে বলে জানিয়েছেন মুজিদুল হক।

তিনি বলেন, কাজ করার সময় লোহার একটি পাত হাতে পড়ে। এতে বাম হাতে ব্যাথা পাই। মালিকপক্ষ থেকে চিকিৎসা খরচ দেওয়া হচ্ছে। ইয়ার্ডে কাজ চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, ঈদের আগে আর কাজে যোগ দিব না। সুস্থ হয়ে ফিরলে এই ইয়ার্ডেই যোগ দেব।

বাংলাদেশ মেটাল ফেডারেশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী জানান, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অমান্য করে ইয়ার্ডের কার্যক্রম চলমান রেখেছে কেএসআরএম। সুজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিয়ে এখনো ধোঁয়াশা কাটেনি। এরই মধ্যে মুজিদুল হক নামে আরেক শ্রমিক আহত হয়েছে। ওই শ্রমিককে গোপনে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

মোহাম্মদ আলী জানান,‘ইয়ার্ড চালু আছে। আমি নিজে গিয়ে দেখেছি। শ্রমিকরা সেখানে কাজ করছে; তাদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে।’

এদিকে সুজনের মৃত্যুর তথ্য নিয়ে লুকোচুরির অভিযোগ রয়েছে কেএসআরএমের বিরুদ্ধে। পুলিশের সুরতহাল, মেডিকেল ও পোর্ট মর্টেম রিপোর্টে দুর্ঘটনায় উপর থেকে পড়ে গুরুতর আহত হয়ে মৃত্যু হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। শিল্প মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটির কাছে পোস্টমমর্টেম রিপোর্টই দাখিল করেনি। সম্প্রতি এ চিঠিতে কেএসআরএম গ্রুপের মালিকানাধীন ইয়ার্ডে সকল দুর্ঘটনায় হতাহতের তথ্য জানানে বলেছে শিল্প মন্ত্রণালয়। কেএসআরএম এর মালিক শুধু নিজের মুনাফা নিয়েই ব্যস্ত, শ্রমিকদের ভাল মন্দ দেখার যেন তার সময় নেই।

খালেদ / পোস্টকার্ড ;