অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দ্রুত কঠোর ব্যবস্থা : মন্ত্রী , আদালত ও জেলা প্রশাসনের দুটি তদন্ত কমিটি

অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দ্রুত কঠোর ব্যবস্থা : মন্ত্রী , আদালত ও জেলা প্রশাসনের দুটি তদন্ত কমিটি

নিজস্ব প্রতিবেদক ।। 

গরু চুরির অভিযোগে চকরিয়ায়  মা-মেয়ের কোমরে রশি বেঁধে এলাকা ঘোরানো এবং মারধরের ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দ্রুত কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে কক্সবাজার জেলা প্রশাসককে এ বিষয়ে খোঁজ নিতে বলেছেন বলে জানান।

চকরিয়া উপজেলার হারবাং ইউনিয়নের ওই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এ বিষয়টি ন্যক্কারজনক এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন বলে মনে করছেন অনেকে। স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, এ ধরনের ঘটনা দুঃখজনক। এটি অত্যন্ত হৃদয়বিদারক ঘটনা। তদন্ত সাপেক্ষে এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ঘটনায় দ্রুত ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। অন্যথায় তিনি বিষয়টি হাই কোর্টের নজরে আনবেন বলে জানান। প্রশাসন এবং পুলিশের ডিআইজির দৃষ্টি আকর্ষণ করে ব্যারিস্টার সুমন বলেন, যত দ্রুত সম্ভব ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।

আদালত ও জেলা প্রশাসনের দুটি তদন্ত কমিটি

এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করতে দুটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। জানা গেছে, উপজেলার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতের একটি এবং অপরটি কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের। এর মধ্যে আদালত কর্তৃক গঠন করে দেওয়া এক সদস্যের কমিটি আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে ঘটনার পুঙ্খলানুপঙ্খ তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করবেন। অপরদিকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জেলা প্রশাসনের গঠিত তদন্ত দলকে।

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ শামসুল তাবরীজ জানান, তিনি নিজেও সরেজমিন এই ঘটনার তদন্ত করছেন। পাশাপাশি আলোচিত এই ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে আজ রবিবার (গতকাল) তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে। এতে প্রধান হিসেবে রয়েছেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক (উপ-সচিব) শ্রাবস্তী রায়। অন্য দুই সদস্য হলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তানভীর হোসেন এবং উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা সনজয় চক্রবর্তী।

কক্সবাজার জেলা পুলিশের চকরিয়া সার্কেলের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার কাজী মো. মতিউল ইসলাম বলেন, আগামী সাত কার্য দিবসের মধ্যে এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন উপজেলা জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতের বিজ্ঞ বিচারক রাজীব কুমার দেব।

তিনি বলেন, আদালতের নির্দেশনা পাওয়ার পর রবিবার থেকে সরেজমিন তদন্ত কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। এ সময় থানার ওসিকে সাথে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনসহ প্রত্যক্ষদর্শী এবং সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে ঘটনার বর্ণনা নেওয়া হয়েছে। এই তদন্ত কার্যক্রম যাতে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয় সেজন্য ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী থেকে শুরু করে এলাকাবাসীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের কাছ থেকে আলাদা আলাদা বক্তব্য নেওয়া হবে। এরপর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে আদালতে।