৩০ বছর পর সগিরা মোর্শেদ হত্যার পিবিআই’র রহস্য উদঘাটন

৩০ বছর পর সগিরা মোর্শেদ হত্যার পিবিআই’র রহস্য উদঘাটন

নিজস্ব প্রতিবেদক ।।

পুলিশের বিভিন্ন সংস্থার ২৫ জন তদন্ত কর্মকর্তার দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে হাত বদলের পর রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরীতে চাঞ্চল্যকর সগিরা মোর্শেদ খুনের ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। ঘটনাটিকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে তারা। এ ঘটনায় চার আসামি জড়িত উল্লেখ করে প্রত্যেকের মৃত্যুদণ্ড চেয়ে আদালতে অভিযোগপত্র দিতে যাচ্ছে সংস্থাটি।

বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) এক হাজার ৩০৯ পৃষ্ঠার চার্জশিট আদালতে দাখিল করবে পিবিআই। দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে পিবিআই সদর দফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান পিবিআই প্রধান ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার।

তিনি বলেন, ঘটনার পুরোপুরি ৩০ বছর পর মামলাটির তদন্তভার পায় পিবিআই। তদন্তভার পাওয়ার পর তিন ধাপে মোট ছয় মাস পর চারজনকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হচ্ছে। দীর্ঘ ৩০ বছর পর এটিকে একটি সুপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। হত্যাকাণ্ডে চারজনের সম্পৃক্ততা পাওয়ায় প্রত্যেকের মৃত্যুদণ্ড চেয়ে চার্জশিট দাখিল করা হচ্ছে।

মামলার আসামিরা হলেন- নিহত সগিরা মোর্শেদের ভাসুর ডা. হাসান আলী চৌধুরী, তার স্ত্রী সায়েদাতুল মাহমুদা ওরফে শাহীন, হাসান আলীর শ্যালক আনাস মাহমুদ ওরফে রেজওয়ান ও ভাড়াটে খুনি মারুফ রেজা।

১৯৮৯ সালের ২৫ জুলাই রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরীতে প্রকাশ্য দিবালোকে নির্মমভাবে হত্যার শিকার হন সগিরা মোর্শেদ। পিবিআই দীর্ঘদিনের মামলাটি দায়িত্ব নিয়ে দ্রুত সময়ে অপরাধীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে এসেছে বলে জানান বনজ কুমার।

তিনি বলেন, মামলটি যখন পিবিআইয়ের কাছ আসে তখন আমরা বিয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিই। তদন্ত করতে গিয়ে আমরা জানতে পারি নিহত সগিরা মোর্শেদের পরিবারের সঙ্গে আসামি শাহীনের বিভেদ তৈরি হয়। এরমধ্যে রয়েছে শাহীন তার তিন তলার বাসা থেকে সগিরা মোর্শেদের রান্না ঘর ও বারান্দায় ময়লা ফেলতো। এছাড়া শাশুড়ি সগিরাকে অনেক পছন্দ করতো এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে সগিরা-শাহীনের মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল।

বনজ কুমার মজুমদার জানান, সগিরার কাজের মেয়ে জাহানুরকে মারধর করে ডা. হাসান আলী চৌধুরী। এই নিয়ে পারিবারিক বৈঠকে শাহীন সগিরাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। আসামিদের নিয়ে রাজারবাগ বাসার তৃতীয় তলায় সগিরাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী ডা. হাসান আলী তার চেম্বারে আসামি মারুফ রেজার সঙ্গে ২৫ হাজার টাকায় হত্যার চুক্তি করে। ১৯৮৯ সালের ২৫ জুলাই পুর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী মারুফ রেজা ও আনাস মাহমুদ প্রকাশ্য দিবালোকে সগিরা মোর্শেদকে গুলি করে হত্যা করে।

এই ঘটনায় ২৫ জন কর্মকর্তা মামলার তদন্তের দায়িত্ব পান। মামলা চলাকালে ২৫ জনকে গ্রেফতার করা হলেও রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি কেউ। এদের মধ্যে একজনকে অভিযুক্ত করে একবার চার্জশিট দেওয়া হয়েছিল। পিবিআইর চার্জশিটে এর আগে অভিযুক্ত সবাইকে দায়মুক্তি দেওয়া হচ্ছে।