সেনাবাহিনীর খাদ্যসামগ্রী খাল পেরিয়ে দুর্গম পাহাড় ডিঙিয়ে কাঠুরিয়াদের ঘরে

সেনাবাহিনীর খাদ্যসামগ্রী খাল পেরিয়ে দুর্গম পাহাড় ডিঙিয়ে কাঠুরিয়াদের ঘরে
সেনাবাহিনীর খাদ্যসামগ্রী খাল পেরিয়ে দুর্গম পাহাড় ডিঙিয়ে কাঠুরিয়াদের ঘরে

নিজস্ব প্রতিবেদক ।।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী (খাগড়াছড়ি সদর জোন) পানছড়ি উপজেলার গরীব, অসহায় ও দুস্থ জনগোষ্ঠীর মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেছে । পাহাড়ের পাদদেশে গড়ে ওঠা এই বসতিতে রয়েছে প্রায় সাড়ে তিনশো পরিবার। পেশায় তারা কাঠুরিয়া।

পাহাড় থেকে কাঠ কেটে লাকড়ি বানিয়ে বিক্রি করে পেটের আহার যোগান দেয় তারা ৷ করোনা পরিস্থিতিতে বিপাকে পড়েছে এই পরিবারগুলোও। এবার তাই দূর্গম পাহাড় মাড়িয়ে এই পরিবারগুলোর জন্য খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১০ পদাতিক ডিভিশন।

আজ সোমবার (২৯ জুন) সকাল দশটা থেকে প্রদীপপাড়া, নীলমনি কার্বারী পাড়া, হরিগোপালপাড়া, তালতলা ও ফাতেমানগর এলাকার বিভিন্ন সম্প্রদায়ের অসহায় ও দুস্থদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন খাগড়াছড়ি সদর জোনের জোন অধিনায়ক লে. কর্ণেল মো. জাহিদুল ইসলাম। তিনি করোনা মহামারী রোধকল্পে অঘোষিত লকডাউনে থাকা ৩৫০টি পরিবারের হাতে ত্রাণ তুলে দিয়ে তাদের খোঁজ খবর নেন।

এ সময় অতি জরুরী প্রয়োজন ছাড়া বাহিরে না আসা, সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে সরকারী বিধিনিষেধগুলো মেনে চলার অনুরোধ করেন। এছাড়া স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, সাবান দিয়ে বার বার হাত ধোয়া ও মাস্ক ব্যবহারের প্রতি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা প্রদান করেন।

বয়োবৃদ্ধ শেফালী চাকমা, জলপা সাঁওতালসহ অনেকেই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে জানান, চেংগী নদী পার করে এভাবে ঘরে ঘরে ত্রাণ পৌঁছে দেয়া একমাত্র বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বলেই সম্ভব।

জোন কমান্ডার উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, খাগড়াছড়ি সদর জোন দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতিতে আত্মমানবতার সেবায় সার্বক্ষনিক পাশে ছিল এবং আগামীতেও থাকবে। শান্তি, সম্প্রীতি, উন্নয়ন এই মূলমন্ত্রকে সামনে রেখে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পার্বত্য চট্টগ্রামে দীর্ঘদিন ধরে দক্ষতার সাথে পেশাগত দায়িত্ব পালন করে আসছে। আত্মসামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি শিক্ষা, চিকিৎসা, পড়ালেখা, খেলাধুলাসহ সকল সম্প্রদায়ের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় সেনাবাহিনীর এমন উদ্যেগ ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন খাগড়াছড়ি সদর জোনের উপ-অধিনায়ক মেজর চৌধুরী মোহাম্মদ ফাহিম আশরাফী ও পানছড়ি সাব জোন কমান্ডার ক্যাপ্টেন মো. আহসান হাবীব।

এখানে উল্লেখ্য যে, পর্যটন নগরী কক্সবাজার জেলা ও বৃহত্তর চট্টগ্রাম জেলার চারটি উপজেলায় বেসামরিক প্রশাসনকে করোনা পরিস্থিতিতে সহযোগিতার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১০ পদাতিক ডিভিশন মাঠে নেমেছে। প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনায় সেনাবাহিনী প্রধানের উদ্যোগে করোনা বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি, নিজস্ব অর্থায়নে ত্রাণ বিতরণ, চিকিৎসা সহায়তা প্রদান, অন্তঃসত্ত্বা মায়েদের মাতৃকালীন সেবা প্রদান, বিনামূল্যের বাজার, জীবাণুনাশক স্প্রেসহ বিভিন্ন জনসেবা মূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে চলেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১০ পদাতিক ডিভিশন।