মানবতাময়ী নারী ইয়াছমিন আকতার

মানবতাময়ী নারী ইয়াছমিন আকতার

চৌধুরী মুহাম্মাদ রিপন।।

পৃথিবীতে এমন কিছু মানুষের জন্ম যারা শুধু মানুষকে নিয়ে ভাবেন আর মানুষের জন্য কিছু করে তৃপ্ত হন। যাদের দিন শুরু হয় মানব কল্যাণে কাজ করার মধ্য দিয়ে। যারা শুধু স্বপ্ন দেখান না বাস্তবায়নও করেন। তেমন এক মমতাময়ী নারী ইয়াছমিন আকতার। তিনি চট্টগ্রামের হাটহাজারী দেওয়ান নগর শিল্পপতি ইদ্রিস এর স্ত্রী। যিনি দিবা-রাত্রি সর্বক্ষন এতিমদের নিযে ভাবেন এতিমদের নিয়ে কাজ করেন। এতিমরা ভালো আর আনন্দে থাকলে তিনি শান্তি পান ও আনন্দে থাকেন। তিনি তাঁর নিজ এলাকা হাটহাজারীর দরগারটিলা এতিমখানা, বখতিয়ার ফকির বাড়ি এলাকার এতিমখানা ও আতরের ডিপো এতিমখানায় প্রতিনিয়ত অনুদান প্রদান করেন। এই এতিমদের জন্য ভাবে ও খাবার ব্যবস্থা করেন। এরিসাথে ইয়াছমিন আকতার ভাবছেন দেশের সব এতিমদের জন্য।

বিশ্বব্যাপী বিপদকালীন সময়ে করোনা নামক মহামারিতে যখন সবাই অসহায় ঠিক সেই সময়ে ইয়াছমিন আকতারের চিন্তার মাত্র বেড়ে গেছে দেশের সমস্ত এতিমদের চিন্তায় কেমন আছে মা বাবা ছাড়া এই অসহায় এতিমরা।

সম্প্রতি শেষ শেষ হওয়া শীতের মৌসুমে মমতাময়ী ইয়াছমিন আকতার হাটহাজারী দারগার টিলা এতিমদের কাছে ছুটে যান খবর নিতে গিয়ে দেখেন
বাচ্চারা ঠান্ডার মধ্যে পড়াশোনা করছে। ইয়াছমিন আকতার এই অবস্থা দেখে সোজা চট্টগ্রামে চলে আসেন নিজের বাসায় না গিয়ে এতিমখানার বাচ্চাদের জন্য কারপেট ও নতুন কম্বল কিনে নিজেই রাতে এতিম খানায় দিয়ে আসেন বাসায় এসে এই মমতাময়ী ইয়াছমিন আকতার কান্নায় ভেঙ্গে পরেন। তিনি বলতে থাকেন আমি আরো অনেক পূর্বে ঐখানে গেলে বাচ্চাদের এত কষ্ট পেতে না।

ইয়াছমিন আকতারও অসাহায়তের এই সময়ে ভাবছেন এতিমদের নিয়ে। তিনি প্রতিনিয়ত এতিমদের খোঁজ খবর নিচ্ছে ও খাদ্য সামগ্রী প্রদান করছেন প্রতিনিয়ত। উল্লেখ্য ইয়াছমিন আকতার রামজান ও বিভিন্ন উদসবে নিজের বাসার জন্য যা বাজার করেন ঠিক তেমনিভাবে একি খাবার এতিম বাচ্চাদের জন্য ক্রয় করেন এবং পুরো রমজানমাস জুড়ে একি খাবার নিজহাতে তাদের প্রদান করেন। ঈদের সময় এতিম বাচাদের জমা খাপড় ও টাকা প্রচান করে আসছেন নিজেই। কখনও তিনি দেশের বাহিরে থাকলে ইয়াছমিন আকতার ব্যাকুল থাকেন যতক্ষন তাদের কাজে খাদ্য ও কাপড় পৌঁছাতে না পারেন। সবকিছু ব্যবস্থা করে তিনি প্রশান্তি পান বলে জানান।

ইয়াছমিন আকতারের আরেকটি গুন হচ্ছে গরিব ও অসহায়দের পাশে ছুটে যান তিনি। প্রতিনিয়ত অসহায় ও গরিবদের জন্য তিনি কিছু না কিছু করেই চলেছেন। ইয়াছমিন আকতার বাজারে গেলে কখনও একার জন্য বাজার করেন না প্রথমে তিনি গরিব অসহায় দেখলে তাদের জন্য মাংশ, মাছসহ নিত্যপণ্যের সব বাজার করে দেন এরপর নিজের জন্য বাজার করেন।

ইয়াছমিন আকতার যেসময় বাসায় থাকেন সেই সময়টুকু জানালার পাশে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করেন কোন গরিব অসহায় দেখা যায় কিনা সেই জন্য। গবির অসহায় মানুষ দেখলে বাসায় নিয়ে আসেন এবং যতটুকু সম্ভব সহায়তা করেন। কোনদিন গরিব অসহায় মানুষ তার দৃষিগোচর না হলে ইয়াছমিন আকতার অস্থির হয়ে উঠেন আর সারা দিন বলতে থাকেন আজ কারো জন্য কিছুই করতে পারলাম না।

ইয়াছমিন আকতার নিজ এলাকায়ও সমভাবে জনপ্রিয় এই মহত্বের জন্য। এলকার সকলেই এই মহয়ষি নারীকে মোমবাতি আপা বলে সম্বোধন করেন। যার কারণ হচ্ছে ইয়াছমিন আকতার উদার হচ্ছে নিজ এলাকায় সাহায্য সহযোগীতা করেন। এলাকার অসহায় ও গরিব মানুষদের সমস্যা কষ্ঠগুলো নিজে ভাগকরে নেন তাদের সার্বিক সহযোগীতা করেন।

ইয়াছমিন আকতার বাসাবাড়িতে কাজ করা বেশ কিছু মহিলাদের ছেলে-মেয়েদের বড় বড় হাসপাতালে অপারেশনের সমস্ত ব্যয়ভার নিজে বহন করেছেন ও তাঁরা সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত সব খরচ তিনি বহন করেন।গরিব অসহায় কাজের মহিলারা ইয়াছমিন আকতারকে মা বলে সম্বোধন করেন।

করোনা ভাইরাস সংক্রমণের সময় কাজের মহিলার ঘরের সম্পুর্ন বাজার করে দিয়েছে আরো বিভিন্ন মানুষকে প্রতিনিয়ত সহযোগিতা করে যাচ্ছেন ইয়াছমিন আকতার ।

ইয়াছমিন আকতার বলেন …..
গরীবের নেই আয় – গৃহবন্দী হয়..!!
লকডাউনে কি যাবে মরে ক্ষিদের জ্বালায়..?
নেতারা পাশে নাই.. সহযোগীতা চাই..
ধনীরা তু চুপিসরে…
লুকিয়ে আছে করোনার ডরে..!!
আর থেকো না দূরে সরে
দান করো দু’হাত ভরে..
গরীব যেন না খেয়ে – না মরে..
বাঁচাতে প্রাণ….
গরীবের ঘরে ঘরে পাই যেন ত্রাণ
আল্লাহ বড় মেহেরবান
রাক্ষা করবে সবার প্রাণ।।
করোনা যেন পরীক্ষার সমান
আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে দিতে হবে প্রমাণ।।
নিজে বাঁচি… অন্যকে বাঁচায়
নিয়ম মেনে লকডাউনে থাকবে সবাই এই আশায়..!!
সবাই আইন মেনে সাধ্যমত চেষ্টা করি….
দেশটাকে করোনা থেকে রক্ষা করি…!!
সবাই থাকবো ভালো….
আঁধার কেটে ফিরবে আবার আলো…
ইনশাআল­াহ..!!

ইয়াছমিন আকতার মনে প্রাণে বিশ্বাস করেন মানুষের বিপদে সহযোগিতা করাই মানুষের ধর্ম । একটু সহানুভূতি কি মানুষ পেতে পারে না। তাই বোনটির মতো কি আমরা যতটুকু সম্ভব সহযোগিতা করতে পারিনা মানুষ মানুষের জন্যে, জীবন জীবনের জন্যে।