বাংলাদেশ করোনাভাইরাসের শনাক্ত রোগীর তালিকায় শীর্ষ ২০-এ , মৃত্যু ছাড়াল ৮০০ আক্রান্ত ৬০,৩৯১

বাংলাদেশ করোনাভাইরাসের শনাক্ত রোগীর তালিকায় শীর্ষ ২০-এ , মৃত্যু ছাড়াল ৮০০ আক্রান্ত ৬০,৩৯১

পোস্টকার্ড ডেস্ক ।।

করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ার ৯০ দিনের মাথায় শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৬০ হাজার ছাড়িয়ে যাওয়ায় বিশ্বের শীর্ষ ২০ দেশের তালিকায় ঢুকে পড়েছে বাংলাদেশ। করোনাভাইরাস সঙ্কট মোকাবেলায় সরকারের জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটির অন্যতম সদস্য অধ্যাপক নজরুল ইসলামের ধারণা, আগামী এক সপ্তাহে বাংলাদেশ সংক্রমণের এই গ্রাফ আরও উর্ধ্বমুখী হবে।

বাংলাদেশে গত ৮ মার্চ প্রথম কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হওয়ার খবর জানায় আইইডিসিআর। এরপর গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত সারা দেশে মোট ৩ লাখ ৭২ হাজার ৬৫টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। শুক্রবারের বুলেটিনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এ পর্যন্ত মোট ৬০ হাজার ৩৯১ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত করার কথা জানিয়েছে, তাদের মধ্যে মারা গেছেন ৮১১ জন। আর ১২ হাজার ৮০৪ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন।

জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় নিয়মিত যে টালি প্রকাশ করছে, তাতে বাংলাদেশ সময় গতকাল রাত সাড়ে ১০টায় বিশ্বে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬৬ লাখ ৮২ হাজারের বেশি। মৃত্যু হয়েছে প্রায় তিন লাখ ৯২ হাজার মানুষের। আক্রান্তের সংখ্যায় সবার উপরে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, সেখানে ১ লাখ ৮৭ হাজারের বেশি মানুষের কোভিড-১৯ ধরা পড়েছে। আর মৃত্যু হয়েছে ১ লাখ ৮ হাজার ৩৩৪ জনের, এটাও বিশ্বে সবচেয়ে বেশি। এরপরেই রয়েছে ব্রাজিল, রাশিয়া ও যুক্তরাজ্য। শুক্রবারই এই তালিকার ২০ তম স্থানে উঠে এসেছে বাংলাদেশ। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে ভারতে। ২ লাখ ৩৩ হাজারের বেশি শনাক্ত রোগী নিয়ে ভারত এই তালিকার ৭ নম্বরে রয়েছে। আর ৮৯ হাজারের বেশি শনাক্ত রোগী নিয়ে পাকিস্তান আছে ১৭তম অবস্থানে। দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে ভালো অবস্থানে আছে ভুটান, ৪৮ জন রোগী নিয়ে দেশটির অবস্থান তালিকার ১৬৮ নম্বরে। এছাড়া ১৮০০ শনাক্ত রোগী নিয়ে শ্রীলঙ্কা ৯৯ নম্বরে, ১৮৭২ রোগী নিয়ে মালদ্বীপ ৯৬ নম্বরে, ২৯১২ জন রোগী নিয়ে নেপাল ৮৩তম অবস্থানে এবং আফগানিস্তান ১৮ হাজার ৯৬৯ জন রোগী নিয়ে তালিকার ৪১ নম্বরে ছিল তখন।

বিডিনিউজ জানায়, অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘পেরিফেরাল স্যাম্পল কালেকশন যে খুব ভালো হচ্ছে, তা বলা যাবে না। সারা দেশে যেভাবে ইউনিফর্মলি স্যাম্পল কালেকশন হওয়ার দরকার, সেটাও কিন্তু আমরা ক্যালকুলেট করতে পারছি না। এখন এই ভাইরাসের যে প্রকৃতি আর সংক্রমণ ঠেকাতে আমাদের যে কর্মকাণ্ড- দুটোই সাংঘর্ষিক মনে হচ্ছে। এখন দেখা যাক, কে জেতে- ভাইরাস নাকি আমরা?”

গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিনে ৪ জুন পর্যন্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন অতিরিক্ত মহাপরিচালক নাসিমা সুলতানা। তিনি বলেন, এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীদের মধ্যে ৭১ শতাংশ পুরুষ, ২৯ শতাংশ নারী। আক্রান্ত হওয়ার হার তরুণদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। এ পর্যন্ত যাতের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে, তাদের মধ্যে ২৮ শতাংশের বয়স ২১-৩০ বছরের মধ্যে। আর ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সশ্রেণির রোগী ২৭ শতাংশ। আক্রান্তদের মধ্যে ৭ শতাংশের বয়স ৬০ বছরের বেশি; আর ৩ শতাংশের বয়স ১০ বছরের নিচে। বাকিদের মধ্যে ১১ শতাংশের বয়স ৫১-৬০ বছরের মধ্যে, ১৭ শতাংশের বয়স ৪১-৫০ বছরের মধ্যে, ৭ শতাংশের বয়স ১১-২০ বছরের মধ্যে।

বাংলানিউজ জানায়, গত চারদিনে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১০ হাজার ৮৫৭ জন। আর আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১৩৯ জনের। সুস্থ হয়েছেন দুই হাজার ২০৭ জন। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন দুই হাজার ৮২৮ জন, মৃত্যু হয়েছে ৩০ জনের আর সুস্থ হয়েছেন ৬৪৩ জন।